• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
 প্রেসিডেন্ট বশির গ্রেফতার

প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির

ছবি : ইন্টারনেট

আফ্রিকা

সুদানে সেনাঅভ্যুত্থান

প্রেসিডেন্ট বশির গ্রেফতার

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১২ এপ্রিল ২০১৯

সুদানে সেনাঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আহমেদ আওয়াদ ইবনে আউফ বলেন, প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতার করে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। ক্ষমতা গ্রহণ করেছে সেনাবাহিনী। খবর বিবিসি, সিএনএন ও আলজাজিরা।

তিনি জানন, আগামী তিন মাস জরুরি অবস্থা জারি থাকবে। আগামী দুই বছর দেশটির ক্ষমতা থাকবে সেনাবাহিনীর হাতে। নতুন এই অস্থায়ী সরকারের নেতৃত্ব দেবেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে দেশটির সংবিধানে পরিবর্তন আনা হবে। তিনি আরো বলেন, সুদানের জনগণ যেন সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে সেজন্য জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে ক্ষমতা গ্রহণ করেছে সেনাবাহিনী। তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর খবরে বলা হয়েছে, ওমর আল-বশিরকে সরকারি বাসভবেনই রাখা হয়েছে। এছাড়া তার দেহরক্ষীদের আটক করা হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। দেশটির বিরোধী দল উম্মা পার্টির প্রধানের ছেলে সাদিক আল-মাহাদী হাদাত টিভিকে বলেন, ‘সন্ত্রাসী মুসলিম ব্রাদারহুডের’ কয়েকজন নেতাসহ বশিরকে গৃহবন্দি করা হয়েছে।

এর আগে সুদানের সরকারি ও সেনাসূত্র নিশ্চিত করেছে, ৭৫ বছর বয়সি বশির সেনাবাহিনীর চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। সেনাবাহিনী তাকে সরানো ছাড়াও দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠনের বিষয়ে আলোচনার কথা জানায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করে বলছি- টানা জনবিক্ষোভের পর সেনাবাহিনীর চাপে বশির পদত্যাগ করেছেন।

এর আগেই অবশ্য সুদানের রাষ্ট্রীয় টিভি এবং রেডিওতে ঘোষণা করা হয়, শিগগিরই সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি দেবে, অপেক্ষা করুন। সেনাবাহিনীর ঘোষণা দেওয়ার আগেই হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। বশিরের ৩০ বছরের একনায়কতন্ত্রের অবসানে রাজধানী খার্তুমে উল্লাস করছে। বশিরকে গৃহবন্দি করার পাশাপাশি ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির শতাধিক নেতাকর্মীকে  সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আটক করেছে বলে কোনো কোনো গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে।

এই তালিকায় দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী আবদেল রহিম মোহাম্মদ হোসেন, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আলী ওসমান ত্বহা এবং দলটির প্রধান আহমেদ হারুনের মতো নেতারাও রয়েছেন। সুদানের রাষ্ট্রীয় টিভি ভবনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ওমদুরমানে ওই ভবনটির ভেতরেও প্রবেশ করেছেন অনেক সৈন্য। খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ধরনের ফ্লাইটের উড্ডয়ন বাতিল করা হয়েছে। তবে অবতরণে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।

রাষ্ট্রীয় টিভি ও রেডিওতে দেশাত্মবোধক গান প্রচার হচ্ছে-  যেমনটি গণবিক্ষোভের পর সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিলে করা হয়। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং সেতুতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য,  ১৯৮৯ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশটিকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন বশির। কিন্তু গত ডিসেম্বরে দেশটির বাজারে রুটির দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে বিক্ষোভ শুরু করে সাধারণ মানুষ। তাদের এই বিক্ষোভ ক্রমান্বয়ে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের আন্দোলনে রূপ নেয়।

এই বিক্ষোভ থেকে বশিরের ৩০ বছরের শাসনের ভিত নড়ে গেল। চলতি সপ্তাহের শুরুতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা খার্তুমে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টাকালে সেনা সদস্যরা তাদের বাধা দেয়। এছাড়া গত ৬ এপ্রিল শুরু হওয়া সংঘর্ষে অন্তত ২২ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর ৬ সদস্যও ছিল।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads