• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
চাল আমদানিতে আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের

আগাম বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় সরকারের সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত হলে মজুত তলানিতে নেমে আসে

সংগৃহীত ছবি

আমদানি-রফতানি

চাল আমদানিতে আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের

  • নাজমুল হুসাইন
  • প্রকাশিত ৩০ আগস্ট ২০১৮

গত অর্থবছর শুল্ক ছাড়ের কারণে দেশে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছিল। তবে চলতি অর্থবছরের বাজেটে ২৮ শতাংশ শুল্ক পুনর্বহাল করায় চাল আমদানিতে আগ্রহ হারিয়েছে ব্যবসায়ীরা। আর দেশের উৎপাদন ঘাটতি কাটিয়ে ওঠায় চাল আমদানির প্রয়োজনও নেই এমনটা মনে করছেন সরকার সংশ্লিষ্টরা।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, অর্থবছর শুরু থেকে গত ১২ আগস্ট পর্যন্ত দেশে মাত্র ২৮ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়েছে। যার মধ্যে চাল ব্যবসায়ীরা আমদানি করেছে মাত্র ১৩ হাজার ৯২০ টন। বাকিটা এসেছে সরকারি খাতে। যদিও গত বছর একই সময়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছিল। গত অর্থবছরে মোট চাল আমদানি হয়েছিল ৩৭ লাখ টন।

গত বছর এপ্রিলের শুরুতে আগাম বৃষ্টি ও হাওরে আকস্মিক বন্যার কারণে দেশে ব্যাপক ফসলহানি হয়। এ অবস্থায় সরকারের সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় মজুত তলানিতে নেমে আসে। এতে ঘাটতি পূরণে চাল আমদানির বিকল্প ছিল না। এ কারণে তখন বিদেশ থেকে চাল আমদানিতে শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে নামিয়ে ২ শতাংশ করা হয়। এরপর দেশে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয় সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই।

চলতি বছর (২০১৮) ইরি-বোরোর উৎপাদন ভালো হওয়াতে সঙ্কট কাটিয়ে ওঠায় বাজেটে (২০১৮-১৯) চাল আমদানিতে আবারো আগের শুল্ক ফিরিয়ে আনা হয়। ফলে এখন আবার চাল আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এ ছাড়াও সে সময় দেওয়া বাকিতে এলসি খোলার সুবিধাও প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

চাল আমদানি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি জাকির হোসেন রানা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘বর্তমান শুল্কহারে চাল আমদানি করা হলে সেটা বাজারদরের থেকেও বেশি হবে। এ কারণে এখন আর ব্যবসায়ীরা চাল আমদানি করছে না।’

ব্যবসায়ীদের দেওয়া হিসাবে, বর্তমানে ভারত থেকে প্রতি টন চাল ৩৮৫ থেকে ৩৯০ ডলারে আমদানি হচ্ছে। ২ শতাংশ হিসেবে প্রতি কেজি চালের আমদানি শুল্ক দিতে হতো ৭০ পয়সা। আর বতর্মানে ২৮ শতাংশ হিসেবে শুধুু কেজিতে প্রায় সাড়ে ৯ টাকা শুল্ক দিতে হবে। এ ছাড়া অন্যান্য খরচ রয়েছে। ফলে আমদানি চালের দাম খুচরা বাজারে অন্যান্য চালের থেকে বেশি হবে। ফলে বাধ্য হয়েই চাল আমদানি করছে না তারা।

দেশের ব্যবসায়ীদের গত বছর চাল আমদানিতে প্রথম পছন্দ ছিল বেনাপোল বন্দর। বিশেষ করে ভারত থেকে যে চাল আমদানি হয় তার অর্ধেকের বেশি আসে বেনাপোল হয়ে। বেনাপোল কাস্টম হাউজের ডেপুটি কমিশনার জাকির হোসেন বলেন, আগে বেনাপোল বন্দর দিয়ে মাসে ৫৫ থেকে ৫৬ হাজার টন চাল আমদানি করা হতো। শুল্ক পুনর্বহালের পর এ হার এক-চতুর্থাংশে নেমেছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বর্তমানে সরকারের গুদামে ১৫ লাখ টন খাদ্যশস্যের মধ্যে ১৩ লাখ ১৬ হাজার টনই চাল। এ ছাড়া এ বছর ইরির উৎপাদন গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৭ লাখ ৫৭ হাজার টন বেড়েছে। কৃষি অধিদফতরের খসড়া প্রতিবেদনে জানা গেছে, দেশে এবার ১ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার টন বোরো উৎপাদন হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads