• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
ফিলিপাইনে চাল রপ্তানির বাজার খুলছে

ছবি : সংগৃহীত

আমদানি-রফতানি

ফিলিপাইনে চাল রপ্তানির বাজার খুলছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ জুলাই ২০১৯

বাংলাদেশের সিদ্ধ চাল কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ফিলিপাইন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিপাইনে সিদ্ধ চাল রপ্তানির বাজার খুলছে। দেশের কৃষকদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সরকার ইতোমধ্যে চাল রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ফিলিপাইন সরকারের একটি প্রতিনিধিদল চাল কেনার আগ্রহের কথা জানায়।

বৈঠক শেষে কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, এবার বাংলাদেশে চালের উৎপাদন, বিশেষ করে বোরোর উৎপাদন বেশি হয়েছে। বিগত কয়েকটি মৌসুমে আউশ ও আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক কোটি ৪০ লাখ টন, উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৫৩ লাখ টন। এখন আমাদের অনেক মিলার-ব্যবসায়ীর গুদামে যথেষ্ট চাল রয়েছে। এবার বোরোতে উৎপাদন ভালো হওয়ায় অস্বাভাবিকভাবে চালের দাম কমে যায়। আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই, এ মুহূর্তে চালের দাম খুবই কম। এজন্য আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমাদের কৃষক-চাষিরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। ধান চাষাবাদ করে তাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, কিছু চাল আমরা বিদেশে রপ্তানি করব।

মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আজ (গতকাল সোমবার) ফিলিপাইন থেকে একটি পার্টি এসেছে। তারা চালের আমদানিতে সে দেশের সরকারকে সহযোগিতা করে। দেশটির সরকারও বলছে, তারা জি-টু-জি (সরকার-টু-সরকার) মাধ্যমে চাল কিনতে পারে। তারা কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন মিলে গেছে, মান দেখেছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশে চালের গুণগত মান ভালো। ফিলিপাইনের মানুষ সিদ্ধ চাল খায়। সেটাও আমাদের জন্য ফেভারেবল। কাজেই দেশটিতে সহজেই চাল বিক্রি করা যাবে। আমাদের কিছু মিলারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছে, তারা মনে করেছে দামও মোটামুটি রিজনাবল। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড তো মূল রপ্তানিকারক, তাদের দামের তুলনায় আমাদের চালের যে কোয়ালিটি তাতে দাম মোটামুটি ভালো হবে।

মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, বেলজিয়ামের এক ভদ্রলোক তিনি ফিলিপাইনে থাকেন, উনি চালের জন্য আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। কাল (গত রোববার) তারা বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। আমাদের মধ্যে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমার কাছে মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি আমরা ভালো ডিল করতে পারব রপ্তানির ব্যাপারে।

কী পরিমাণ রপ্তানি করা যাবে- জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমি মনে করি, এ মুহূর্তে বাংলাদেশ চালের উদ্বৃত্তে আছে। দশ লাখ টন চাল রপ্তানি করলেও আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ, যে কোনো সময় বন্যা হতে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে পারে। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমরা গ্রাজুয়ালি যাব। যেমন, আমরা এখন দুই লাখ টন দিয়েছি। আরো যদি চাহিদা আসে আমরা পাঁচ লাখ করব। এভাবে আস্তে আস্তে যাব। তারা এখন এক লাখ টন নিতে চাচ্ছে। ফিলিপাইন সরকারও (সরকার-টু-সরকার) আমাদের সরকারের কাছ থেকে চাল কিনে নিতে চাচ্ছে। তারা আমাদের মেসেজ দিয়েছে, ফিলিপাইন সরকার আগ্রহী, আমরা যদি রাজি থাকি তাহলে আমাদের আমন্ত্রণ করবে বা তারা আসবে।

ফিলিপাইন কোন ধরনের চাল নিতে চায়- জানতে চাইলে চাল রপ্তারিকারক ও রশিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রশিদ বলেন, মাঝারি ধরনের আটাশ ও উনত্রিশ চালের ডিমান্ড তাদের বেশি। সঙ্গে সঙ্গে হয়তো মিনিকেটও কিছু করা যেতে পারে।

দামের বিষয়ে জানতে চাইলে- এ ব্যবসায়ী বলেন, তারা যে প্রাইস বলেছে, সরকার যদি সহায়তা না করে তা হলে তাদের প্রাইসের সঙ্গে সমন্বয় করা কঠিন হয়ে যাবে। কারণ অন্যান্য দেশে চালের দাম এখনো অনেক কম। আমাদের যে উদ্দেশ্য সেটা যদি বাস্তবায়ন করতে হয়, সেই বিষয়ে সরকারকেও সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই সার্থক হবে।

চাল রপ্তানি করলে কৃষক পর্যায়ে কী প্রভাব পড়বে- এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, যদি পাঁচ লাখ টন চাল রপ্তানি করতে পারি অবশ্যই দামের ওপরে প্রভাব পড়বে। আমরা বলেছিলাম, তাই দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। আবার দাম কমার দিকে। সাধারণ মানুষ চাপের মধ্যে পড়বে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, সাধারণ মানুষ কোনো চাপের মধ্যে পড়বে না। কোনোক্রমেই কোনো চাপের মধ্যে পড়বে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads