ভৈরবে আজ শুক্রবার দুপুরে বিদ্যুতের লাইন মেরামত করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃ্ষ্ট হয়ে বিল্লাল মিয়া (৪৫) নামে বিদ্যুৎ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তবে বিল্লালের এই মৃত্যুর জন্য বিদ্যুৎ অফিসের কতিপয় সহকর্মীদের অবহেলাকে দুষলেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা।
নিহত বিল্লাল শহরের আমলা পাড়া গ্রামের ছিদ্দিক মিয়ার পুত্র। এ ঘটনায় পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রত্যক্ষদর্শী সাব্বির মিয়া, মহসিন মিয়াসহ কমলপুর গ্রামের অনেকেই জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে কমলপুর ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার খুটিতে একটি ওয়াই ফাই ইন্টারনেট ক্যাবলে আগুন ধরে যায়। পরে ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে ১ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় আজ দুপুরে ভৈরব বিদ্যুৎ অফিসের ৪/৫ জন কর্মচারী নিহত বিল্লাল কে সাথে নিয়ে লাইন মেরামতে আসে। এ সময় ৩৩ হাজার কেভি ভোল্টেজের লাইন চেক না করে বিল্লাল কে লাইন মেরামতে মই দিয়ে বৈদ্যুতিক খুটিতেঁ উঠানো হয়। খুটিঁতে উঠার সাথে সাথে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে তার শরীরের কিছু অংশ পুড়ে যায় এবং নীচে পাকা সড়কের উপর পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তার সাথে আসা সহকর্মীরা ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিল্লালকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে নিহতের পিতা ছিদ্দিক মিয়া ও তার স্ত্রী স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, সাব ইঞ্জিনিয়ারের অর্ডারেই কাজ করতে গিয়েছিল। এ সময় তারা আরো কথা বলতে চাইলে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল তাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ রিয়াদ আজিম জানান, বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে আহত বিল্লাল মিয়া হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান । তবে যারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তারা ইসিজির কথা বলে হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে ভৈরব বিদ্যুৎ অফিসের সহকারি প্রকৌশলী তানভির পারভেজ জানান, নিহত বিল্লাল মিয়া তার অফিসের কোন কর্মচারী নন এবং লাইন মেরামতে তাকে আমরা কিছু বলিনি। তবে সে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মানুষের অর্ডারে অর্থের বিনিময়ে বিদ্যুতের কাজ করে থাকেন। লাইন মেরামতে দূর্ঘটনায় আহতের কথাশুনে বিদ্যুৎ অফিসের গাড়ী দিয়ে তার অফিসের কর্মচারীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল বলে সে স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিদ্যুৎপৃষ্ঠে নিহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।