• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
পোড়া ভবনে এখনো ভেসে ওঠে পরিচিত মুখ

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়িযাওয়‍া ভবনটি

ছবি : সংরক্ষিত

দুর্ঘটনা

চুড়িহাট্টা ট্রাজিডি

পোড়া ভবনে এখনো ভেসে ওঠে পরিচিত মুখ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ মার্চ ২০১৯

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের এক মাস পেরিয়েছে। কিন্তু এখনো ওই এলাকার বাতাসে বইছে পোড়া গন্ধ। পুড়ে যাওয়া ভবনগুলোয় সেই ক্ষত এখনো দগদগে। আসা-যাওয়ার পথে থমকে দাঁড়ায় পথচারীরা। কেউ কেউ পোড়া ভবনগুলোর দিকে তাকিয়ে পরিচিত মুখগুলো খুঁজে বেড়ান। মনে হয় যেন পোড়া ভবনগুলোতে পরিচিত মুখ ভেসে ওঠে।

অগ্নিকাণ্ডস্থলে এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজমান। আগুনের পোড়া গন্ধ এখানো বইছে চুড়িহাট্টা মোড়ে। আশপাশের দোকানগুলো খুললেও আগের মতো এখন আর জমে না। সেদিনের দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠা আগুনের ধ্বংসলীলা মনে পড়লে এখনো আঁতকে ওঠে এলাকাবাসী।

গতকাল চকবাজারে যাওয়ার পথে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ভবনগুলো দেখছিলেন শামীম আহমেদ। তিনি বলেন, আগে দোকান থেকে ফেরার পথে সন্ধ্যায় এ মোড়ে কত আড্ডা দিতাম ওয়াহেদ ম্যানশনের নিচতলার একটি টেলিকমের দোকানে। দোকানের মালিক মাসুদ রানা আমার বন্ধুর মতো ছিলেন। তারা দুই ভাই মারা গেছেন। তারা অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। সেদিনের ঘটনা ভুলে যাওয়ার নয়। পোড়া ভবনগুলো দেখলে মনে পড়ে পরিচিতদের মুখ। যাদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম। এখানে তারা পুড়ে মারা গেছে। এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। দোকানপাট কিছু খুলছে, তবে আমাদের মনে সেই দিনের অগ্নিকাণ্ডের ভয় এখনো গেঁথে আছে। আমরা ভুলতে পারছি না।

চুড়িহাট্টা মসজিদের পাশের গলির বাসিন্দা মো. শফিক উদ্দিন। অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন আগে তিনি কলকাতায় গিয়েছিলেন। তাই পোড়া ভবনগুলো দেখতে স্ত্রীকে নিয়ে চুড়িহাট্টার মোড়ে এসেছেন। তিনি বলেন, মাসখানেক কলকাতায় থাকার পর দেশে ফিরে গতকাল সকালেই মোড়ে এসেছি। এসব দোকানে কেনাকাটা করতাম। সবাই আমার পরিচিত। এদের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এখনো চুড়িহাট্টা মোড়ে পোড়া গন্ধ ভাসছে। সেই গন্ধ আসছে আগুনে পোড়া দোকানগুলোর মালপত্র থেকে। তবে সেগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে দেখা গেছে। পুড়ে যাওয়া চারটি ভবনের মধ্যে ওয়াহেদ ম্যানশনের বিপরীত পাশের ভবনের নিচতলাসহ দুটির মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। ওয়াহেদ ম্যানশনের বাঁ পাশের ছয়তলা ভবনটিরও সংস্কারকাজ চলছে।

চেয়ার নিয়ে ভবনের নিচে রাস্তায় বসে থাকতে দেখা যায় ভবনটির মালিক মো. আবদুল আজম। তিনি বলেন, সংস্কারকাজ করছি। সবকিছু ঠিকঠাক করলেও আগের মতো হবে না। খরচও পড়বে অনেক টাকা।

ওয়াহেদ ম্যানশনের নিচতলায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাতজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে দোকানের পুড়ে যাওয়া মালপত্র সরাতে দেখে গেছে। এ সময় পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. সানী মিয়া বলেন, পোড়া গন্ধের জন্য এলাকাবাসীর অসুবিধা হচ্ছে। তাই পরিষ্কার করছি।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ের ওয়াহেদ ম্যানশনে আগুন লাগে। ওই ভবন থেকে আগুন আশপাশের আরো ৫টি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এ অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন নিহত হন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads