• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
উবার-কভার্ডভ্যানের দুই চালকই ছিলেন বেপরোয়া

ছবি : সংগৃহীত

দুর্ঘটনা

লাবণ্যের মৃত্যু

উবার-কভার্ডভ্যানের দুই চালকই ছিলেন বেপরোয়া

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ এপ্রিল ২০১৯

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ছাত্রী ফাহমিদা হক লাবণ্য (২১) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানাধীন হূদরোগ ইনস্টিটিউটের সামনে নিহত হওয়ার ঘটনায় উবার মোটরসাইকেল চালক ও কভার্ডভ্যান চালককে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার সময় লাবণ্যকে বহনকারী অ্যাপসভিত্তিক পরিবহন সেবা উবার মোটরসাইকেল চালক ছিলেন বেপরোয়া। তার চেয়েও বেপরোয়া ছিলেন পেছনে থাকা কভার্ডভ্যানটি। মূলত বেপরোয়া গতির কারণেই চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ফাহমিদা হক লাবণ্য।

গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন খিলজী রোডের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার। এর আগে গত শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ঢাকার আশুলিয়ার বাইশমাইল এলাকা থেকে ঘাতক কভার্ডভ্যানসহ চালক আনিসুর রহমানকে আটক করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশের একটি দল। আনিসুরের বাড়ি দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার আশিনপাড়ায়।

ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ঘটনার পর থেকে লাবণ্যকে বহনকারী মোটরসাইকেল চালককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার মোবাইলও বন্ধ ছিল। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি পালিয়ে যান। গত ২৪ তারিখ দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মোহাম্মদপুর থানাধীন নবীনগর হাউজিংয়ের ২ নং রোডের ২৫ নং বাসা থেকে উবার মোটরসাইকেল চালক সুমন হোসেনকে আটক করে পুলিশ। কারণ সুমনই ছিল ঘটনার প্রধানতম সাক্ষী। তিনি বলেন, লাবণ্যের মৃত্যুর পর আমরা প্রথম সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করি। কিন্তু কোনো একটি ক্যামেরায় কভার্ডভ্যানটি ক্লিয়ার দেখা যাচ্ছিল না। তবে আমরা তথ্যপ্রমাণে নিশ্চিত হয়েছিলাম যে, লাবণ্যকে চাপা দেওয়া কভার্ডভ্যানটি পরিস্থিতি বুঝে রুট পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে দিয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় চলে যায়।

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পেছনের একটি সিসি টিভি ক্যামেরায় আমরা ওই কভার্ডভ্যানটি শনাক্ত করি। রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিশ্চিত হতে না পারলেও কভার্ডভ্যানের পেছনে লেখা ছিল ইনফোফোর্ট (InfoFort)। এরপর আমরা প্রথমে তেজগাঁও ইনফোফোর্টের সাব-অফিসে খোঁজ করি। তারপর মূল হেড অফিস আশুলিয়া বাইশমাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে কভার্ডভ্যান চালক আনিসুরকে গ্রেফতার করা হয়।

উবার মোটরসাইকেল চালক সুমন ও কভার্ডভ্যান চালক আনিসুরকে আলাদা আলাদা জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ঘটনার সময় বেপরোয়া গতিতে চলছিল মোটরসাইকেলটি। অন্যদিকে পেছনে থাকা কভার্ডভ্যানটিও চালক আনিসুর আরো বেশি বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে আসছিল।

ডিসি বিপ্লব ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, লাবণ্যের উবারে রিকোয়েস্টের পর চালক সুমন তার শ্যামলীর বাসা থেকে উঠিয়ে গন্তব্যে রওনা দেন। মোটরসাইকেলটি শুরু থেকেই বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিল সুমন। শেরেবাংলা হূদরোগ ইনস্টিটিউটের সামনে আসার পর পেছন থেকে আসা আরো বেশি বেপরোয়া কভার্ডভ্যানটি ধাক্কা দিলে লাবণ্য পড়ে যায়। লাবণ্যকে চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় কভার্ডভ্যানটি। এরপর পথচারী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, দায়ের করা মামলায় কভার্ডভ্যান চালক আনিসুরকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিতে উবার মোটরচালক সুমনকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads