• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
হাসপাতালে পলেস্তারা খসে আহত ৮

ছবি : সংগৃহীত

দুর্ঘটনা

হাসপাতালে পলেস্তারা খসে আহত ৮

ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরও চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম

  • নোয়াখালী প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৩ জুন ২০১৯

নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের পলেস্তারা খসে পড়ে পাঁচ শিশু, তাদের স্বজনসহ ৮ জন আহত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ৪ নং শিশু ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর অনেককেই তাদের শিশুদের হাসপাতাল ছেড়ে অন্যত্র নিয়ে যেতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ফরিদউদ্দীন আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ার জন্য ভবনটির জরাজীর্ণ অবস্থাকে দায়ী করেছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, বুধবার সকালে হঠাৎ করে বিকট শব্দে দ্বিতীয় তলার ৪ নং শিশু ওয়ার্ডের ছাদের পলেস্তারা ভেঙে নিচে থাকা শিশু ও রোগীদের গায়ে পড়ে। এ সময় রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে তিন শিশু রোগী ও তাদের স্বজনসহ ৮ জনের শরীরের বিভিন্ন অংশে কেটে গিয়ে জখম হয়।

হাসপাতাল ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, খবর পেয়ে মাইজদি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অন্য রোগীদের বের করে আনেন। আহতদের মধ্যে এক শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এতে সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে রোগী ভর্তির কার্যক্রম।

আহতরা হচ্ছেন- কবিরহাট উপজেলার নলুয়া গ্রামের ইব্রাহিম (৫০), সুমাইয়া (১২), ইসমাইল (৫), সদর উপজেলার মনসাদপুর ইমাম উদ্দিন (৫), সোনাপুরের পারুল বেগম (৪৭), সুবর্ণচর উপজেলার রাসেল (১৬), সাদ্দাম (৩৫) ও রাফিসহ (২) ৮ জন।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সৈয়দ মহি উদ্দিন আবদুল আজিম জানান, আহতদের উদ্ধার করে নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলার ১ ও ৩ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এ ভবনে চিকিৎসা কার্যক্রম আর চলবে না। ওয়ার্ড সিলগালা করা হবে।

হাসপাতাল সূত্রে আরো জানা গেছে, নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালটি স্থাপিত হয় ৭০ দশকের দিকে। হাসপাতালের এ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ২০১৫ সালে এটি পুরোপুরি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও এ ভবনের দোতলায় চারটি ওয়ার্ডে (দুটি শিশু, একটি মহিলা ও একটি পুরুষ ওয়ার্ড) চলছে চিকিৎসাসেবা। শুধু তাই নয়, এ ভবনের নিচতলায় জরুরি বিভাগে আসা অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে গত চার বছর ধরে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বিভিন্ন সময়ে হাসপাতাল ভবনের বর্তমান পরিস্থিতি জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দিয়ে অবগত করেন। একপর্যায়ে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ তলা ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ দেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের স্থলে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। এমতাবস্থায় ওই ভবনে চলছে চিকিৎসাসেবা।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১২ জুলাই নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের পুরনো ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ওয়ার্ডের ছাদ ধসে দুই নার্স আহত হয়েছিলেন। তারা হলেন সিনিয়র স্টাফ নার্স স্বপ্না মজুমদার ও শিক্ষানবিশ নার্স রানী আক্তার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads