• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
চলতি মৌসুমে পিছিয়ে পড়েছে চা উৎপাদন: লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশাবাদ

ছবি: বাংলাদেশের খবর

কৃষি অর্থনীতি

চলতি মৌসুমে পিছিয়ে পড়েছে চা উৎপাদন: লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশাবাদ

  • আতাউর রহমান কাজল
  • প্রকাশিত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০

আতাউর রহমান কাজল, শ্রীমঙ্গল

চলতি চা উৎপাদন মৌসুমে পিছিয়ে পড়েছে চা উৎপাদন। মৌসুমের শুরুতেই টানা খরার কবলে পড়ে চা-শিল্প। সুষম সুর্যালোক না থাকা, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, অতিবৃষ্টি, হেলোপেলটিস মশার আক্রমণ প্রভৃতি কারনে এবার চা উৎপাদন পিছিয়ে রয়েছে।

শ্রীমঙ্গলে অবস্হিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট সুত্র জানায়, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত দেশে চা উৎপাদিত হয়েছে ৩৩.৯ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৩ কোটি ৩৯ লাখ কেজি। গত বছর (২০১৯) একই সময়ে চা উৎপাদন হয়েছিল ৩৯.০৫ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৩ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার কেজি। এ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এই বছর জুলাই পর্যন্ত ৫১ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা উৎপাদন কম হয়েছে।

সুত্র আরো জানায়, চলতি বছর চা উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে। বাকি সময়টুকু অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর চলতি মৌসুমের চা উৎপাদন শেষ হবে। এ সময়ে বড় কোন বিপর্যয় না ঘটলে চা উৎপাদন গত বছরের মতো না হলেও এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে চা-শিল্প। 

চা গবেষণা ইসস্টিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিকুল পরিবেশ বিরাজ করায় এবং বিরুপ আবহাওয়ার কারণে চলতি মৌসুমে চা উৎপাদনে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পিছিয়ে থাকলেও বছরের শেষ পর্যন্ত আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।

তিনি বলেন, এবার চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫.৯৪ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৭ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার কেজি। আশা করি আমরা বাকি সময়টুকু কোন বিপর্যয় না হলে খুব সহজেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হব।

শ্রীমঙ্গলের জেরিন টি এস্টেটের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সেলিম রেজা বলেন, মৌসুমের শুরুতে লম্বা খরা, অতিবৃষ্টি প্রভৃতি কারণে চা উৎপাদন ব্যাহত হয়। তিনি বলেন, চা শিল্প বর্তমানে চা উৎপাদনে গত বছরের তুলনায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ পিছিয়ে আছে।

তিনি আরো বলেন, এখন উৎপাদন ভাল হচ্ছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত কোন দুর্যোগ না আসলে এ ঘাটতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ চা বোর্ডের উর্ধতন একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে দেশে চা উৎপাদন ১১ শতাংশ পিছনে আছে। তিনি বলেন, চা শিল্পে বড় কোন বিপর্যয় না হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে আমরা উৎপাদন ঘাটতি যেটা আছে তা কভার করতে পারব।

বাংলাদেশ চা বোর্ড সুত্র জানায়, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের চা শিল্পের ১৬৫ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উৎপাদন করে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করে। ওই বছর চা উৎপাদন হয়েছিল ৯৬.০৭ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৯ কোটি ৬০ লাখ ৭০ হাজার কেজি। ওই বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ কোটি ৪১ লাখ ৪০ হাজার কেজি। ২০১৯ সালে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার কেজি চা বেশি উৎপাদিত হয়েছিল। এর আগে ২০১৬ সালে সব রেকর্ড ভেঙ্গে সর্বোচ্চ চা উৎপাদন হয়েছিল ৮৫.০৫ মিলিয়ন কেজি। এর আগে ৮৫ মিলিয়ন কেজির বেশি কখনও যেতে পারেনি। 

বর্তমানে দেশে ১৬৭ টি চা-বাগানে চা চাষ হচ্ছে। যা দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় চা-এর উৎপাদন বৃদ্ধির বিকল্প নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত 'ভিশন-২০২১' এর সাথে সঙ্গতি রেখে চা-শিল্পের উন্নয়নে 'উন্নয়নের পথ নকশা:বাংলাদেশ চা শিল্প' নামে মহাপরিকল্পনা প্রনয়ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে চা-এর উৎপাদন ১৪০ মিলিয়ন কেজিতে উন্নীত করতে কাজ করছে বর্তমান সরকার। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads