উন্নয়নের ধারায় সড়কে ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তা ইত্যাদি নির্মিত হচ্ছে। অন্যদিকে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে গ্রাম ও শহরে নির্মিত হচ্ছে পাকা বাড়িঘর। এসব নির্মাণশিল্পের অন্যতম প্রধান উপাদান ইট। ফলে ইটের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইটভাটার সংখ্যা।
পরিসংখ্যান মতে, দেশে গড়ে প্রতি বছর কমপক্ষে দেড় হাজার কোটি পিস ইটের প্রয়োজন। এই হার প্রতি বছর ২ থেকে ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরপক্ষে এই বিপুল পরিমাণ ইট পোড়াতে প্রায় ২২ লাখ টন কয়লা ও ১৯ লাখ টন কাঠ প্রয়োজন হয়। ফলে বছরে সাড়ে ৮৭ লাখ টন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হয়। কাঠ পুড়িয়ে ক্ষতিকর ধোঁয়া উৎপন্নের ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। আবার জ্বালানির কাঠ সংগ্রহের জন্য উজাড় হচ্ছে বনজঙ্গল। দুদিক দিয়েই পরিবেশের ক্ষতি করছে এই পদ্ধতি। ইটের চেয়ে বহুগুণে ব্যবহার উপযোগী কংক্রিট ব্লক। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ইটের ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদেরও সেদিকে এগুতে হবে। তা না হলে আমরা ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ে পড়ব। দেয়ালে ড্যাম্প ধরে না, রুমের তাপ কম হয়, তুলনামূলক খরচও কম, রুমের জায়গাও বৃদ্ধি পায়। কংক্রিট ব্লকের স্থাপনা হালকা হওয়ায় লোহার রড ও প্লাস্টার-গাঁথুনিতে সিমেন্ট-বালু কম লাগে। ইলেকট্রিক লাইন স্থাপন সহজ হয়। অল্প সময়ে নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়। কংক্রিটের ব্লক বিভিন্ন আকৃতির করা যায়।
তাই বিশ্বায়নের এই কঠিন সময়ে পরিবেশ রক্ষায় ইটের বিকল্প নিয়ে ভাবতে হবে এখনই। উন্নত বিশ্বে ইটের বিকল্প হিসেবে কংক্রিট ব্লক ব্যবহার হচ্ছে। চীনে মাটির তৈরি ইট ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমাদের প্রতিবেশী ভারতও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কঠোর। তবে দেরিতে হলেও আমাদের দেশে কংক্রিট ব্লক ব্যবহার শুরু হয়েছে। আশা করি, বর্তমান জনবান্ধব সরকার একটি সময়োপযোগী নীতিমালা গ্রহণ করে ইটের পরিবর্তে কংক্রিট ব্লক ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহিত করবে।