• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

জীব ও পরিবেশ

বেঁচে থাকুক বাংলাদেশের ‘ফুসফুস’ সুন্দরবন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ নভেম্বর ২০১৯

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পরে আবারো আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশের ফুসফুসখ্যাত সুন্দরবন। কারণ শক্তিশালী বুলবুলের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করে উপকূলীয় জনগণকে রক্ষা করেছে সুন্দরবন। বুলবুলকে তাণ্ডব চালানোর মতো শক্তিশালী হয়ে উঠতে দেয়নি এই বন। ২০০৭ সালের সিডর এবং ২০০৯-এ আইলাতেও একইভাবে এই অঞ্চলকে আগলে রেখেছিল সুন্দরবন। এভাবেই নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলীয় মানুষকে রক্ষা করে সুন্দরবন। এসব কারণেই সুন্দরবন নিয়ে আমরা গর্ব করি। কিন্তু বনের প্রতি আমাদের যে দায়-দায়িত্ব তা আমরা পালন করি না। সুন্দরবনের চারপাশে যে কলকারখানাগুলো গড়ে উঠছে তা বনের জন্য ক্ষতিকর। নদীর এপাড়ে সুন্দরবন ওপাড়ে শিল্পকারখানা। আমাদের প্রত্যেকের উচিত আগামী দিনগুলোর কথা ভেবে সুন্দরবন বাঁচাতে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করা। তাহলেই বেঁচে থাকবে বাংলাদেশের ফুসফুস সুন্দরবন।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রবলতা কমার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাক্টিভিস্টরা আবারো সুন্দরবন বাঁচানোর বিষয়টি আলোচনায় নিয়ে এসেছেন। এমনকি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমানও সংবাদ সম্মেলনে সুন্দরবন রক্ষায় আরো গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবন সমুদ্র উপকূলে বাঁধের মতো। ঘূর্ণিঝড় প্রায় ১০০ কিলোমিটার প্রশস্ত এই বন পার হয়ে আসতে স্বাভাবিকভাবেই তীব্রতা হারিয়ে ফেলে। সুন্দরবন ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত সহ্য করে ব্যাপক প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতি থেকে এই জনপদকে রক্ষা করে। অথচ এই বনটিকে রক্ষায় গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো আমরা এটিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছি।

এই বন কীভাবে মানুষকে রক্ষা করে জানতে চাইলে সুন্দরবন অ্যাকাডেমির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কাদির বলেন, সমুদ্রে যখন নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় তখন তার তীব্রতা বেশি থাকে। সেটি স্থল ভাগে এলে নানা জায়গায় ধাক্কা খায়। সুন্দরবন সমুদ্র উপকূলে প্রাকৃতিক বাঁধের মতো। এর আগেও সুন্দরবনের কারণে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সিডর ও আইলার সময় ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রবিন্দু সুন্দরবনের শরণখোলার ওপর দিয়ে গেছে সে সময়। সেবারও সুন্দরবন এলাকা পার হয়ে লোকালয়ে ঢোকার সময় তীব্রতা কমে গিয়েছিল। এভাবেই বন নিজের ক্ষতি করে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি থেকে আগলে রাখে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সুন্দরবন বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আমাদের রক্ষা করছে। সুন্দরবনের প্রতি কেউ যেন অযত্ন-অবহেলা করতে না পারে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মহলকে উদ্যোগ নিতে বলবো।

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাত ৯টা থেকে উপকূল অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল বাংলাদেশ ও ভারতীয় সুন্দরবন সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে। তবে সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় প্রবেশের পর সেটি দুর্বল হয়ে যায়। সুন্দরবন থেকে এটি ঘূর্ণিঝড় আকারে বের হতে পারেনি। ধীরে ধীরে ভোরের দিকে গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয়। সুন্দরবনের কারণে ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হওয়া প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি সুন্দরবনের ভারতীয় অংশ দিয়ে প্রবেশ করে বাংলাদেশের অংশে এসে বনের মধ্যে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দুর্বল হয়ে গেছে। সুন্দরবনের গাছপালার মধ্যে ঝড়ের শক্তি হ্রাস পেতে থাকে। ফলে লোকালয়ে প্রবেশের আগেই এটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads