• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
সাফারি পার্কে আরো একটি পুরুষ বনরুই অবমুক্ত

ছবি : বাংলাদেশের খবর

জীব ও পরিবেশ

সাফারি পার্কে আরো একটি পুরুষ বনরুই অবমুক্ত

  • রেজাউল করিম সোহাগ, শ্রীপুর
  • প্রকাশিত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বিরল ও অতিবিপন্ন প্রজাতির একটি চাইনিজ বনরুই (প্যাঙ্গলিন) অবমুক্ত করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ঢাকার খিলগাঁওয়ের গোড়ান এলাকা থেকে বনরুইটি উদ্ধার করে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সদস্যরা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত বনরুইটি পুরুষ বলে নিশ্চিত করেন বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসিম মল্লিক। পরে বনরুইটি ওইদিন সকাল সাড়ে ১১ টায় সাফারি পার্কের গভীর অরণ্যে অবমুক্ত করা হয়েছে। এর আগেও পার্কের এ অঞ্চলে আরো দুটি পুরুষ ও একটি নারী বনরুই অবমুক্ত করা হয়েছিল। এ নিয়ে পার্কে ৪ টি বনরুই অবমুক্ত করা হলো। যার মধ্যে তিনটি পুরুষ একটি নারী বনরুই।

ওয়াইল্ড লাইফ সুপার ভাইজার আনিসুর রহমান জানান, বনরুই পতঙ্গ ভোগি প্রাণী।এরা বিরল ও অতিবিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। বনরুই যে কোনো পতঙ্গ খেতে পছন্দ করে।  পিপিলিকা, পিপিলিকার ডিম, উই পোকা, উইপোকার ডিম খেয়ে চলে। এরা রাতেই আহারে বের হয়। বনরুই খুবই নিরীহ প্রকৃতির প্রাণী। ভয় পেলে বলের মতো গোল হয়ে প্রাণ বাঁচায়। বনরুইয়ের শরীরের আচিল (খোলস/ আচিল/আইশ) অনেক শক্ত। খুবই মুল্যবান এদের শরীরের আচিল/আইশ ও মাংস। এ কারনেই পাচারকারিদের কবলে পড়ে বিপন্ন হচ্ছে বনরুই। 

তিনি আরো বলেন, বনরুই এপ্রিল -মে মাসে প্রজনন করে। এরা ১৩০ দিন গর্ভকালীন সময় পার করে বাচ্চা প্রসব করে। বনরুই সাধারনত কোনো গর্তের ভিতরে বাচ্চার জন্ম দেয়। বনরুই একটি বাচ্চাই জন্ম দেয়। কখনো কখনো দুইটিও দেওয়ার রের্কড রয়েছে। তিনি বলেন আমাদের দেশের পাহাড়ি ও সিলেট অঞ্চলেই  চাইনিজ প্রজাতির বনরুই মাঝে মধ্যে চোখে পড়ে। 
  
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী অপরাধ ইউনিটের পরিদর্শক(ইনিস্পেক্টর) অসিম মল্লিক জানান, বন্যপ্রাণী পাচারের শীর্ষে রয়েছে এ নিরীহ প্রাণী বনরুই।  বিশ্ব বাজারে এর চাহিদা বেশি থাকায় পাচারকারিরা সুযোগ বুঝেই এটি পাচার করে থাকে।

তিনি বলেন, গোপন খবর পেয়ে ঢাকার গোড়ান এলাকার একটি পরিত্যক্ত গ্যারজ থেকে দড়িবাঁধা অবস্থায় এটি উদ্ধার করা হয়। পাচারের জন্যই এটি গ্যারেজে রাখা হয়েছিল বলে ধারনা করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বন্যপ্রাণী আইন ২০১২ সালের সংশোধনী অনুযায়ী বনরুই শিকার, পাচার, ক্রয় বিক্রয় ও লালন পালন দণ্ডনীয় অপরাধ।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. তবিবুর রহমান জানান, ঢাকা থেকে বনরুইটি উদ্ধার করে সাফারি পার্কে নিয়ে আসে। পরে পার্কের গভীর অরণ্যে অবমুক্ত করা হয়।

তিনি বলেন, এটি চাইনিজ প্রজাতির বনরুই। এর আগেও আরো দুটি একই প্রজাতির পুরুষ বনরুই ও একটি নারী বনরুই পার্কের গভীর অরন্যে অবমুক্ত করা হয়েছে। এটি নিয়ে পার্কে তিনটি পুরুষ ও একটি নারীসহ চারটি বনরুই রয়েছে। উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে অতি বিপন্ন বনরুই বংশবৃদ্ধির মাধ্যমের আবারো সংখ্যা বাড়তে পারে এমনি আশা ব্যক্ত করেন এ কর্মকর্তা। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads