• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক

ইন্টারনেট

এশিয়া

নাজিবের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৩ মে ২০১৮

regular_2070_news_1525623893 (1)

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ও তার স্ত্রী রোশমা মানসুরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে অভিবাসন বিভাগ। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছুটি কাটাতে গতকাল শনিবার দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ছিল তার। এ ছাড়া চাপের মুখে নিজ দল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (উমনো) প্রেসিডেন্ট ও বারিসন ন্যাশিওনাল জোটের চেয়ারম্যানের পদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন নাজিব। রাজধানী কুয়ালালামপুরের মেনারা দাতো এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। খবর বিবিসি।

দেশত্যাগে সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি টুইটারে পরে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীও নিশ্চিত হন। তবে কী কারণে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে কর্তৃপক্ষ তা জানায়নি। তিনি এ নির্দেশ মেনে চলবেন বলে জানান। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল থেকে নাজিব ৭০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে অর্থনৈতিক ধসের মুখে পড়ে মালয়েশিয়া। তার ওইসব দুর্নীতির বিচার করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন সদ্য বিজয়ী মাহাথির মোহাম্মদ।

নাজিব টুইটে লেখেন, নির্বাচনে পরাজয়ের পর পরিবারের সঙ্গে কিছু সময় কাটাতে ইন্দোনেশিয়া যেতে চেয়েছিলাম। হঠাৎ খবর পেলাম আমার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এমন ‘ভঙ্গুর’ সময়ে পুরো জাতি একত্রিত থাকবে বলেই আমার বিশ্বাস। নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সব ধরনের ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। যদিও তার পরবর্তী পরিকল্পনা কী সে বিষয়ে কিছু জানাননি নাজিব।

রাজধানী কুয়ালালামপুরকে বিশ্ব অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার পাশাপাশি কৌশলগত বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি গতিশীল করার পরিকল্পনায় ২০০৯ সালে একটি তহবিল গঠন করা হয়, যা ওয়ানএমডিবি নামে পরিচিত। তহবিলে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ ছিল। ওই তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে নাজিবের বিরুদ্ধে। যদিও তিনি শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করছেন। ক্ষমতায় থাকাকালে প্রধানমন্ত্রীকে এ অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল মালয়েশিয়ার বিচার বিভাগও। বিরোধীদের অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তদন্ত থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন নাজিব। ওয়ানএমডিবি তহবিল থেকে অর্থ আত্মসাতের নতুন তদন্তও চেয়েছেন তারা।

দুর্নীতির এ অভিযোগকে ঘিরেই মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি হয় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর। ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারি প্রকাশের পর মাহাথির তার এক সময়ের শিষ্য নাজিবকে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ক্ষমতা ছাড়তে রাজি না হওয়ায় নিজের সাবেক দলের বিপক্ষে গিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন ৯২ বছর বয়সী মাহাথির। তার জনপ্রিয়তার জোরেই বুধবারের জাতীয় নির্বাচনে পাকাতান হারাপান (অ্যালায়েন্স অব হোপ) বড় জয় পায়।

ভরাডুবি হয় স্বাধীন হওয়ার পর গত ৬১ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় থাকা বারিসান ন্যাশিওনালের (বিএন)। এই দলের হয়ে মাহাথির ২২ বছর দেশ শাসন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেই মাহাথির জানান, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনবেন তিনি। এদিকে নির্বাচনে পরাজয়ের পরই থেকেই নাজিবের ওপর পদত্যাগের চাপ জোরালো করতে থাকেন দলের নেতারা। উমনোর কুয়ালা পিলাহ বিভাগের প্রধান ইসমাইল লাসিম বলেন, তার উচিত ছিল নির্বাচনে আমাদের দলের নেতৃত্বাধীন বারিসন ন্যাশিওনাল (বিএন) জোটের পরাজয়ের পরই পদত্যাগ করা।

মানুষ বিএন জোটকে ভোট দেয়নি, কারণ তারা দলটিকে ঘৃণা করে। এ ছাড়া ব্যক্তিও এখানে একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সাধারণ মানুষ দলের নেতৃত্ব নিয়ে খুশি ছিল না। কারো কারো মতে, নির্বাচনের আগেই নাজিবের পদত্যাগ করা উচিত ছিল। চাপের মুখে গতকাল শনিবার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে নাজিব জানান, এখন থেকে উমনো দলের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন ডক্টর আহমাদ জাহিদ হামিদি। এ ছাড়া বারিসন ন্যাশিওনাল জোটের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নির্বাচনের ফল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যা ঘটেছে তা নিয়ে আমরা মর্মাহত। তবে আমরা ফল মেনে নিয়েছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads