পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ভোট চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। আজ শুক্রবার পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার কারাগারে নিজ দল ও পরিবারের লোকেরা নওয়াজ শরিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ অভিযোগ করেন।
নওয়াজ শরীফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) নিবাচনে ৬৩টি আসনে জয় পেয়েছে। আর সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খানের দল পিটিআই জয় পেয়েছে ১১০টি আসনে।
তিনি বলেন, এই জালিয়াতি করা দূষিত আর সন্দেহজনক নির্বাচনী ফল আগামীতে দেশের রাজনীতিতে খারাপ প্রভাব ফেলবে।
দুর্নীতির দায়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন নওয়াজ শরিফ, তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ও অবসরপ্রাপ্ত মেয়ের জামাই ক্যাপ্টেন মুহাম্মাদ সাফদার।
সাক্ষাতের সময় নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ, মরিয়মের ছেলেমেয়ে ও দলের বেশ কিছু নেতা উপস্থিত ছিলেন।
গত বুধবার দেশটির জাতীয় পরিষদের ২৭২টি আসনে সরাসরি ভোট হয়। পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সরাসরি নির্বাচনের মোট আসন সংখ্যা ২৭৪টি হলেও দুটি আসনে ভোট স্থগিত হওয়ায় বুধবার ভোট দেন ২৭২ আসনের ভোটাররা। নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য নির্ধারিত বাকি ৭০টি আসন বিজয়ী দলগুলোর মধ্যে সংখ্যানুপাতে বণ্টন হবে।
নির্বাচনে ১০ কোটি ৬০ লাখ নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে ৫০-৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নারী ভোটারের উপস্থিতি আগের চেয়ে ভালো ছিল বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের ডেইলি নিউজ পত্রিকার সাংবাদিক মনির আহমেদ। এদিকে নির্বাচন ঘিরে প্রায় পৌনে ৪ লাখ নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হলেও সহিংসতা থেমে ছিল না। কোয়েটায় বোমা হামলায় নিহত হন অন্তত ৩১ জন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
পাকিস্তানের ৭১ বছরের ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বেসামরিক দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর হতে যাচ্ছে। এর কারণে এবারের নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বিশ্ব গণমাধ্যম। অবশ্য দেশটিতে বারবার রাষ্ট্র পরিচালনায় সেনা হস্তক্ষেপের ইতিহাস থাকায় ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।