• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
বাড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সমরাস্ত্র বাজেট

অস্ত্র বিক্রির জন্য মুখিয়ে আছে পশ্চিমা দেশগুলো

ছবি : ইন্টারনেট

এশিয়া

বাড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সমরাস্ত্র বাজেট

২১ হাজার কোটি রুপির বিনিময়ে ১১১ হেলিকপ্টার

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৭ আগস্ট ২০১৮

জন্মলগ্ন থেকেই দ্বন্দ্বে জড়িত দক্ষিণ এশিয়ার দুই শক্তি ভারত এবং পাকিস্তান। ব্রিটিশ শাসন থেকে বের হওয়ার পর এখন পর্যন্ত মোট চারবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে দেশ দুটি। এই দুই দেশের কাছে পর্যাপ্ত পরমাণু অস্ত্রের মজুত আছে। এ ছাড়া আছে বিদেশি অস্ত্র নির্মাতাদের থেকে নিয়মিত অস্ত্র কেনার প্রতিযোগিতা। ভারতীয় মিডিয়া ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক রিপোর্ট সূত্রে জানা যায়, ৪৬ হাজার কোটি রুপি ব্যয়ে বিশাল অঙ্কের সমরাস্ত্র কেনার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে মোদি সরকার। এর মধ্যে নৌবাহিনীর জন্য ১১১টি হেলিকপ্টার কিনতেই ব্যয় হবে প্রায় ২১ হাজার কোটি রুপি।

উভয় দেশই প্রতিরক্ষা সমস্যাকে সামনে রেখে অস্ত্রে সমৃদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। ফলে এই বিশাল পরিমাণ অস্ত্র তারা কিনছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং ইসরাইলের মতো দেশ থেকে। প্রত্যেক দেশেরই বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিজস্ব কিছু এজেন্ডা থাকে, যেমনটা অস্ত্র বিক্রেতা দেশগুলোর রয়েছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস ইনস্টিটিউটের পরিসংখ্যান অনুসারে, আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে অস্ত্র বিক্রেতা দেশগুলো উভয়পক্ষের কাছেই অস্ত্র বিক্রি করছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীতে দক্ষিণ এশিয়ায় ২০১২-১৬ সালে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয় হয়েছিল। এ ছাড়া গত পাঁচ বছরে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সামরিক বাজেট বছরে বেড়েছে তিন দশমিক চার শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিকভাবে ভারতকে সমর্থন দিলেও সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানের ওপর নির্ভরশীল। এমন পরিস্থিতিতে ফ্রান্স এবং রাশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশগুলোর কাছে অস্ত্র বিক্রি করে মুনাফা কামিয়ে নিচ্ছে।

চীনের কাছে ভারত সাগর একটি কৌশলগত অবস্থান। ফলে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে সেখানে সেনা সমাবেশ ঘটাতেও পিছপা হচ্ছে না দেশটি। এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে চীনের দ্বন্দ্ব রয়েছে এবং দেশটি নিয়মিত পাকিস্তানের কাছে অস্ত্র বিক্রি করছে। চীন চলতি বছরে প্রতিরক্ষা বাজেটে অতিরিক্ত ২ শতাংশ বাড়িয়ে ১৭৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অপরদিকে ভারতের চলতি বছরের প্রতিরক্ষা বাজেট ৪৫ বিলিয়ন ডলার, গত বছরে তা ছিল ৪২ বিলিয়ন ডলার। ভারতের মোদি সরকার দুই দেশের মধ্যকার প্রতিরক্ষা বাজেটের অসামঞ্জস্যতা মেটাতে ইসরাইলের কাছ থেকে অস্ত্র কেনে।

অস্ত্র কেনায় পিছিয়ে নেই পাকিস্তান সরকার। দেশটি বাজেটের নথি মোতাবেক, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট রাখা হয়েছে ১১০০ বিলিয়ন রুপি। এই বিশাল অঙ্কের মধ্যে বেতন সংক্রান্ত ব্যয় ৪২৩ বিলিয়ন রুপি, অভিযান পরিচালনায় ২৫৩ বিলিয়ন, অভ্যন্তরীণ (গোলাবারুদ) কেনাকাটায় ২৮২ বিলিয়ন এবং অন্যান্য ব্যয়ে রাখা হয়েছে ১৪১ বিলিয়ন রুপি। অথচ ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ৬০০ বিলিয়ন রুপি। গত পাঁচ বছরে দেশটির সামরিক ব্যয় বেড়েছে ৮৩ শতাংশ।

বিশ্লেষকদের মতে দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর কাছে অস্ত্র বিক্রির জন্য মুখিয়ে আছে পশ্চিমা দেশগুলো। আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে অস্থিতিশীলতার কারণে দেশগুলোকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র কিনতে হয় প্রতিরক্ষার স্বার্থে। ফলে দেশগুলো অন্যান্য খাত থেকে বাজেট কমিয়ে এবং অদৃশ্য খাত সৃষ্টি করে সামরিক খাতে ব্যয় বাড়াচ্ছে। এই ব্যয় বাড়ানোর ফলে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং চীনের মতো দেশগুলোর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনের মান ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads