• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

এশিয়া

ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বের েসব নিষেধাজ্ঞা বহাল

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৪ নভেম্বর ২০১৮

ইরানের ওপর থেকে যেসব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল তা আগামীকাল সোমবার থেকে পুনর্বহাল করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তিন বছর আগে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের আমলে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তির সুবাদে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল। এদিকে রাশিয়ার জ্বালানিমন্ত্রী জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরানের জ্বালানি তেল বিনিয়োগে সহযোগিতা করবে মস্কো।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও গত শুক্রবার বলেন, আগামী ৫ নভেম্বর (সোমবার) থেকে ইরানের ওপর পুরনো নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হবে। জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, বাণিজ্য ও ব্যাংকিং খাতে ফের এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এবার নতুন ধাপে জারিকৃত নিষেধাজ্ঞায় থাকছে সাত শতাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, নৌযান ও উড়োজাহাজ। থাকছে বৃহৎ ব্যাংক, জাহাজ ও তেল রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোও। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এসব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তেহরানকে ১২টি শর্ত বেঁধে দিয়েছেন; এর মধ্যে আছে ইরানের পরমাণু ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ ও সিরিয়া-ইয়েমেনে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা।

ওয়াশিংটনের জারিকৃত নতুন এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় কেবল ইরানই থাকছে না; যারা দেশটির সঙ্গে ব্যবসা করবে কিংবা তেল কিনবে তাদের ওপরও খড়্গহস্ত হবে মার্কিন প্রশাসন। যদিও ভারত, ইতালি, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ ৮টি দেশকে আপাতত এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। তুরস্কও ইরানি তেল কেনার ক্ষেত্রে এ ছাড় চায় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। পম্পেও জানিয়েছেন, ছাড় দেওয়া দেশগুলোকে ইরানের তেল ক্রয় বন্ধে সময় বেঁধে দেওয়া হতে পারে; ওই সময়ের মধ্যে তারা ধীরে ধীরে ব্যবসা গুটিয়ে নেবে।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্সের কাছে ইউরেনিয়াম প্রকল্প সীমিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। চুক্তির মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি ছিল, ইউরোপীয় স্বাক্ষরকারীরা ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে স্থায়ী অবরোধ আরোপ করুক। এই দাবি মানতে নারাজ ইউরোপীয় পাঁচ দেশ। তারা ২০২৫ সালের পর ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার পক্ষে। এ অবস্থায় চলতি বছরের মে মাসে চুক্তি থেকে বের হয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে সে সময়ই ছয় ইরানি নাগরিক ও তিনটি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

এদিকে রাশিয়ার জ্বালানিমন্ত্রী আলেক্সান্দার নোভাক ব্রিটিশ ফিন্যান্সিয়াল টাইমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ইরানের তেল খাতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে মস্কো। কীভাবে আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখা যায়, সে ব্যাপারে আমরা ভেবে দেখব। তা ছাড়া আমরা এমনিতেই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আছি, তাই নতুন করে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মস্কো খুব বেশি চিন্তিত নয়। চুক্তি স্বাক্ষরকারী ছয় জাতির অন্য দেশগুলো মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের একা এই চুক্তি বাতিলের এখতিয়ার নেই। ট্রাম্পের একতরফাভাবে দেওয়া এ ঘোষণা ইউরোপীয় দেশগুলোর অবস্থানের বিপক্ষে গেল। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি অব্যাহত রাখার পক্ষে থাকলেও ভবিষ্যতে দেশটির ‘ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রাম’-এর কী হবে তা নিয়ে আলোচনায় রাজি আছে।

এদিকে শুক্রবার ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্পের টুইট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। ট্রাম্প তার ছবির ওপর লিখেছেন, ‘নিষেধাজ্ঞা আসছে’, যা জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজ গেম অব থ্রোনসের ‘শীত  আসছে’-এর মতো করে করা। এরপরই ট্রাম্পের টুইটের পাল্টা বিপরীতে অনেকে লেখেন, ‘মুলার আসছে’, কিংবা ‘মধ্যবর্তী নির্বাচন আসছে’। ট্রাম্পের এই টুইটার বার্তার সমালোচনা করেছে টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এইচবিও-ও। তারা বলেছে, ট্রাম্পের টুইট বার্তা সম্বন্ধে অবগত নই আমরা। তবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যেন আমাদের ট্রেডমার্কটি ভুলভাবে ব্যবহূত না হয় সে অনুরোধ করব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads