শ্রীলঙ্কায় গত রোববার মর্মান্তিক বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান।
রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গির্জা এবং বিলাসবহুল হোটেলসহ অন্যান্য স্থাপনায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। গত রোববার রাত পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছিল ২০৭ জন।
ফ্রান্সভিত্তিক বার্তা সংস্থা এএফপি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কা পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকেরা বলেছেন, হামলায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে ভয়াবহ এই সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় কারা দায়ী তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তবে হামলায় জড়িত সন্দেহে যে আটজনকে আটক করা হয় তাদের সবাই শ্রীলঙ্কান নাগরিক বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আটক ব্যক্তিদের পরিচয় থেকে জানা গেছে তারা সবাই শ্রীলঙ্কান নাগরিক। তাদের সঙ্গে বিদেশের কারও যোগাযোগ আছে কি না এখন সেটি যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
ইস্টার সানডের সকালে একাধিক গির্জা ও অভিজাত হোটেলে ভয়াবহ এক হত্যাযজ্ঞের কবলে পড়ে ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। গত রোববার আনুমানিক সকাল পৌনে নয়টার দিকে দেশটির তিনটি গির্জা ও তিনটি হোটেলে পরপর বোমা হামলা হয়। ওই ছয় হামলার ঘণ্টা চারেক পর আরও দুটি স্থানে বোমা হামলা করে সন্ত্রাসীরা। গতকাল সোমবারও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
দুই শতাধিক মানুষ নিহত হওয়া ছাড়াও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন প্রায় ৫০০ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছে ৩৫ জন। তার মধ্যে বাংলাদেশের একজন রয়েছেন।
শ্রীলঙ্কায় প্রাণঘাতী হামলার সঙ্গে স্থানীয় ইসলামি চরমপন্থি গোষ্ঠী ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত (এনটিজে) জড়িত বলে সন্দেহ করছে দেশটির সরকার। গতকাল সোমবার শ্রীলঙ্কা সরকারের মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্নে বলেছেন, প্রাণঘাতী এই হামলার পেছনে স্থানীয় এই চরমপন্থি গোষ্ঠী জড়িত।
গত রোববার পর্যন্ত দেশটির পুলিশ জানিয়েছিল, হামলার ঘটনায় তারা ১৩ জনকে আটক করেছে। তবে আটক ব্যক্তিদের নাম পরিচয় কিছুই জানায়নি পুলিশ। দেশজুড়ে গত রোববার কারফিউ জারি করা হলেও তা গতকাল সোমবার তুলে নেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম। দুই দিন বন্ধ রাখা হয়েছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা।