• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪২৮
শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা সচিব ও পুলিশ প্রধানকে পদত্যাগের নির্দেশ

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা

সংগৃহীত ছবি

এশিয়া

শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা সচিব ও পুলিশ প্রধানকে পদত্যাগের নির্দেশ

  • প্রকাশিত ২৪ এপ্রিল ২০১৯

শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় ৩৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার আগে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্কতার সাথে কাজ করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে দেশটির প্রতিরক্ষা সচিব ও পুলিশ প্রধানকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন লঙ্কান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, বুধবার সিরিসেনা তাদের পদত্যাগের আদেশ দেন। তবে তাদের পরিবর্তে কারা ওই পদে আসবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

এর আগে মঙ্গলবার এক টেলিভিশন ভাষণে সিরিসেনা বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানকে পরিবর্তন করার পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ প্রিয়ালাল দিসানায়েক দেশটির চার গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়ে সতর্ক করেন যে, একটি স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠী দেশে আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা করছে।

তার চিঠিতে সংযুক্ত গোয়েন্দা প্রতিবেদন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়। ন্যাশনাল ‘তৌহিদ জামাত’ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হামলা পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়। জাহরান হাশমীকে গোষ্ঠীটির নেতা হিসেবে দাবি করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গির্জা’ লক্ষ্যবস্তু করে শিগগিরই একটি আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এদিকে শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার তিন দিন পর মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) দায় স্বীকার করে। তারা আত্মঘাতী সাত বোমারুর ছবিও প্রকাশ করে।

মঙ্গলবার সংসদে শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান বিজেবর্ধনে দাবি করেন, গত মাসে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে গুলি করে হত্যাকাণ্ডের ‘প্রতিশোধ নিতেই’ শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় ধারাবাহিক বোমা হামলা চালানো হয়েছে।

অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নের কার্যালয় থেকে বলা হয়, এটি পরিষ্কারভাবে বোঝা গেছে যে, শ্রীলঙ্কার হামলার তদন্ত তার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। গত ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে গুলি করে ৫০ জনকে হত্যা করা হয়। ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলা ও শ্রীলঙ্কার ইস্টার বোমা হামলার সাথে সম্পৃক্ততা নিয়ে যে দাবি করা হয়েছে সে সম্পর্কে কিউই প্রধানমন্ত্রী জেসিদা আরডার্ন অবগত রয়েছেন। যদিও এ ধরনের সম্পৃক্ততার বিষয়ে কোনো গোয়েন্দা তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এ হামলার জন্য স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠী ন্যাশনাল তাওহীদ জামাতকে দায়ী করেছে লঙ্কান কর্তৃপক্ষ। বছর তিনেক আগে অনলাইনে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার পর থেকে মোহম্মাদ জাহরান বা জাহরান হাশমী নামে পরিচিত এ উগ্রবাদ গোষ্ঠীটির নেতা পরিচিতি পায়।

তবে আত্মঘাতী বোমরুদের বিদেশি কোনো সংযোগ রয়েছে কি না তার তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।

এদিকে বুধবার শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত অ্যালাইনা টেপলিজ সাংবাদিকদের বলেছেন, ইস্টার সানডেতে বোমা হামলার হুমকি সম্পর্কে জানা ছিল না যুক্তরাষ্ট্রের।

তিনি বলেন, মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা-এফবিআই এর এজেন্ট এবং মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা হামলার তদন্তে শ্রীলঙ্কাকে সাহায্য করছেন।

ইস্টার বোমা হামলার আগে শ্রীলঙ্কার গোয়েন্দা ব্যবস্থায় কিছুটা ব্যর্থতা ছিল বলে মন্তব্য করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

এদিকে শ্রীলঙ্কার সরকার স্বীকার করেছে যে, তারা একটি স্থানীয় চরমপন্থী গোষ্ঠীর কাছ থেকে হুমকি পায়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণে কয়েকজন কর্মকর্তা চাকরি হারাতে পারেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads