• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

ছবি: সংগৃহীত

ব্যাংক

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে এসডিজি পূরণ হচ্ছে না

  • মো. জাহিদুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ০৬ মে ২০১৮

২০১০ সালে বিশ্বের ৮৩ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধায় আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত সময়ে বিদ্যুতের আওতায় এসেছে বিশ্বের ৮৭ শতাংশ মানুষ। চলমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালে ৯২ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় আসবে বলে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সদর দফতর ওয়াশিংটন থেকে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এসডিজি বাস্তবায়নের মেয়াদকাল শেষে বিশ্বের ৮ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আওতার বাইরে থাকবে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

এসডিজি-৭ অগ্রগতি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রতি লাখে একজন মানুষ সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে আলোর সুবিধা পাচ্ছে। বিষয়টিকে বড় অগ্রগতি দাবি করে এতে বলা হয়েছে, বেশ কয়েকটি দেশে সৌরবিদ্যুৎ ব্যাপক প্রাধান্য পেয়েছে। এসব দেশের ৫ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষ সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অন্তত ৩ কোটি মানুষ সৌরবিদ্যুতের আওতায় আছে বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের অন্তত ১০০ কোটি মানুষ এখনো বিদ্যুতের আওতার বাইরে আছে। এর অন্তত ৬০ কোটি বাস করছে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে। তবে আফ্রিকায়ও বিদ্যুতের আওতায় থাকা মানুষের সংখ্যা কমে আসার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। আফ্রিকায় জন্মহারের চাইতে বিদ্যুতায়নের হার বাড়ছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।

বিদ্যুতায়নে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ সামনের দিকেই রয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৭৬ শতাংশ মানুষ বর্তমানে বিদ্যুতের আওতায় রয়েছে। দেশটির শহরাঞ্চলের ৯৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেয়ে থাকে। পল্লী অঞ্চলের মাত্র ৬৯ শতাংশ মানুষ বর্তমানে বিদ্যুতায়নের আওতায় আছে। অবশ্য জনসাধারণকে বিদ্যুতের আওতায় আনার হার বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ বেড়েছে বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

এতে বলা হয়েছে, বিদ্যুতায়নে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া, কেনিয়া ও তাঞ্জানিয়ার সাম্প্রতিক দক্ষতা প্রশংসনীয়। এতে বলা হয়েছে, ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতিবছর সাড়ে ৩ শতাংশ মানুষ নতুন করে বিদ্যুতের সুবিধা পেয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশে বিদ্যুতের আওতায় আসা মানুষের হার ৫৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে কেনিয়ায় ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর গড়ে ৬ শতাংশ করে মানুষ নতুন করে বিদ্যুতের আওতায় আসছে। ইথিওপিয়া আর তাঞ্জানিয়ায় বিদ্যুতায়নের হার বছরে ৩ শতাংশ করে। ভারতে প্রতিবছর ৩ কোটি মানুষ নতুন করে বিদ্যুতের আওতায় আসছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয়-ব্যয় জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, ২০০০ সালে বাংলাদেশের ৩২ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল। ২০১০ সালে এর হার দাঁড়ায় ৫৫ শতাংশে। ২০১৪ সালের মধ্যে মোট ৬২ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। ২০১৬ সালে বিদ্যুতের আওতায় আসা মানুষের হার ৭৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

মানসম্মত জ্বালানিতে এসডিজির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে আগামী কয়েক বছর এ খাতে প্রবৃদ্ধির হার ছয় গুণে উন্নীত করতে হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এতে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে ৫৮ শতাংশ মানুষ পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহার করেছে। ২০১৬ সালে এই হার দাঁড়িয়েছে ৫৯ শতাংশে। বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে এসডিজি বাস্তবায়নের শেষ বছরে পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহারের হার ৭৩ শতাংশে উন্নীত হবে। অথচ ২০৩০ সালে শতভাগ মানুষকে পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহারের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

বাংলাদেশের মাত্র ১৮ শতাংশ মানুষ বর্তমানে পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহার করছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে বাংলাদেশের ৭ শতাংশ মানুষ পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহার করেছে। ২০১০ সালে এই হার দাঁড়িয়েছে ১৩ শতাংশে। ২০১৪ সালে দেশে পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহারের আওতায় আসা মানুষের হার দাঁড়ায় ১৬ শতাংশে। এ হিসাবে প্রতিবছর মাত্র এক শতাংশ মানুষ নতুন করে পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads