• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

বাংলাদেশ ব্যাংক

সংরক্ষিত ছবি

ব্যাংক

বিআইএফসি রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ চান উদ্যোক্তা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১১ মে ২০১৮

অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি) রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ চান উদ্যোক্তা ও সানম্যান গ্রুপের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আবদুল মান্নান। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। বর্তমানে ১৫ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ শঙ্কা প্রকাশ করেন।

চার দশকেরও বেশি সময়ের ব্যবসা কার্যক্রমে সুনাম কুড়িয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, তার পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভাগ্য জড়িত। ১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি, হংকংভিত্তিক একটি এবং দেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় প্রতিষ্ঠা করেছেন বিআইএফসি। কোম্পানির ৫০ শতাংশ শেয়ার বিদেশি তিন মালিক, ১৫ শতাংশ তার এবং বাকি ৩৫ শতাংশ শেয়ার পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের। তার ভাষায়, ২০১৫ সাল থেকে একটি ‘কুচক্রী’ মহল বিআইএফসির ৫ শতাংশ শেয়ার কিনে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেআইনি নির্দেশক্রমে দুই ব্যক্তি পরিচালক হয়। ওই দুই ব্যক্তি ৯৫ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার পরিচালককে সরিয়ে পর্ষদ দখল করেছে।

তিনি অভিযোগ করেন, এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে কৃত্রিম লোকসান দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটির পূর্ণ মালিকানা নিতে চক্রান্ত করছে। এতে করে উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার মেজর মান্নান তার মালিকানা হারানোসহ হাজার হাজার বিনিয়োগকারী চরম হতাশার দিকে ধাবিত হচ্ছেন। এ নিয়ে দফায় দফায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে জানানোর পরও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন মান্নান।

২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কয়েক শ কোম্পানিকে বিআইএফসি ১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে। ওই সময়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির অদক্ষতার কারণে ঋণ পরিশোধ হয়নি। তবে ঋণগুলোকে বিশেষ কৌশলে আদায় দেখিয়ে নতুন নতুন কাগুজে ঋণ বিতরণ দেখানো হয়েছে। ভুয়া লাভ দেখিয়ে আর্থিক সুবিধা নিয়েছে বিতর্কিত পরিচালকরা।

বিস্ময় প্রকাশ করে কোম্পানির সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, কয়েক শ কোম্পানিকে ঋণ দেওয়া হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকে বিশেষ অডিট রিপোর্টের মাধ্যমে মাত্র ৪২ ঋণগ্রহীতা কোম্পানির অনুকূলে ৩৯৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা অনাদায়ের ব্যাপারে চেয়ারম্যানের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। ওই ৪২ কোম্পানি বা কোম্পানির মালিককে তিনি না চিনলেও বাংলাদেশ ব্যাংক তা মেজর মান্নানের স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি এ রিপোর্টকে ডাহা মিথ্যা বলে দাবি করেন।

সানম্যান গ্রুপের চেয়ারম্যান জানান, বিতরণকৃত ৩৯৪ কোটি ২৮ লাখ টাকার বিপরীতে প্রায় ৫৯৭ কোটি টাকা সুদ দাবি করে। কিন্তু ঋণগ্রহীতারা তা অযৌক্তিক বলে অভিযোগ করেন। বিষয়টি গড়ায় অর্থঋণ আদালতে। মামলা চলমান থাকায় এখন আর ঋণগ্রহীতারা ঋণ পরিশোধ করছেন না। বিরাজমান সঙ্কট নিরসনে বিতরণকৃত ঋণের উচ্চ সুদের পরিবর্তে মূল টাকা উত্তোলনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আবেদন ও যোগাযোগ করা হলে মৌখিক সম্মতি মিলে, কিন্তু আনুষ্ঠানিক কোনো সমাধান চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ করেন মান্নান।

বিআইএফসিকে এখনো সম্ভাবনাময় দাবি করে উদ্যোক্তা মেজর মান্নান বলেন, এর দায়ের চেয়ে সম্পদ বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যথাযথ ব্যবস্থা নিলে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা মান্নানের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads