• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
প্রথম পাঁচ ব্যাংকের একটি হতে চায় তারা

বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ২৫ বছর উদযাপন উপলক্ষে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে এনসিসি ব্যাংক

বাংলাদেশের খবর

ব্যাংক

প্রথম পাঁচ ব্যাংকের একটি হতে চায় তারা

কোনো তারল্য সঙ্কট নেই

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ মে ২০১৮

সুশাসনকে অগ্রাধিকার দিয়ে আরো শক্ত ও টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে চায় বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড (এনসিসি)। ব্যাংকটি ২০১৯ সালের মধ্যে দেশের ব্যাংকিং খাতে প্রথম পাঁচটি ব্যাংকের মধ্যে আসতে চায়। সে লক্ষ্য নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জোরালোভাবে কাজ করছে। তবে ২০১৭ সালে ব্যাংকটির নিট মুনাফা কমেছে। অপরদিকে বেড়েছে খেলাপি ঋণের হার ও পরিমাণ।

গতকাল বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। ব্যাংকের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ২৫ বছর উদযাপন উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এনসিসি ব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজ সেলিম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ। এ সময় ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলা হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

মো. নূরুন নেওয়াজ সেলিম বলেন, ১৯৯৩ সালে এনসিসি ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয় ১৬টি শাখার মাধ্যমে। আজ ব্যাংকের শাখার সংখ্যা ১০৯টি। ২ হাজার ১শ’ কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। আমানত ও বিনিয়োগের বেড়েছে আকার। ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ও পরিশোধিত মূলধন বেড়েছে। এসব সূচকে এনসিসি ব্যাংকে স্থিতিশীল অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা গ্রাহককে আরো সহজে সেবা দিতে ব্যাংকটির প্রযুক্তিগত উন্নতি করেছি। সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি সব সময় গুরুত্ব দিয়েছে এনসিসি ব্যাংক।

তিনি আরো বলেন, এনসিসি ব্যাংকের পর্ষদ ব্যাংকটির পরিচালনায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে না। স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যাংকটি পরিচালিত হচ্ছে। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যেসব প্রস্তাব পর্ষদে নিয়ে আসেন সেগুলোর মান পর্যালোচনা করে পর্ষদ অনুমোদন দেয়। ঋণ প্রদানের ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত সর্তক। গত কয়েক বছর ধরে ঋণের মান আরো কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

নূরুন নেওয়াজ বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আমরা অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। একই সঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদেরও। 

তবে ব্যাংক পরিচালনায় সর্তকতার পরও খেলাপি ঋণের হার ও পরিমাণ বেড়েছে, কমে গেছে ব্যাংকটির নিট মুনাফা। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান বলেন, যেসব ঋণ খেলাপি হয়েছে সেগুলো আগের ঋণ। গত ২-৩ বছরে আমরা সর্তকতা বাড়িয়েছি। একই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এমডি মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, গত বছর আমাদের ১১৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত খেলাপি দেখাতে হয়েছে। আদালতে এ সংক্রান্ত মামলা ছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ মোতাবেক এসব ঋণ আমরা খেলাপি দেখিয়েছি। তাই খেলাপি ঋণ বেড়েছে। 

এমডি আরো বলেন, টেকসই, আধুনিক ব্যাংকিং এবং সুশাসন নিশ্চিত করে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। আমানত, বিনিয়োগ বাড়িয়ে শুধু আর্থিকভাবে আমরা বড় হতে চাই না। সব সূচকে আমরা ২০১৯ সালের মধ্যে দেশের প্রথম পাঁচটি ব্যাংকের একটি হতে চাই। এটি পর্ষদের কাছে আমাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি। 

মোসলেহ উদ্দীন বলেন, বর্তমানে ব্যাংকিং খাত দুটি চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর একটি তারল্য সঙ্কট। অন্যটি খেলাপি ঋণ। তবে গত কয়েক মাস ধরে বেসরকারি অনেক ব্যাংক তারল্য সঙ্কটে পড়লেও এনসিসিতে কোনো তারল্য সঙ্কট তৈরি হয়নি। ব্যাংকটির আগাম ও আমানতের হার বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সীমার মধ্যে রয়েছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে অলস টাকা আছে। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকে ওই অর্থ ৬ শতাংশ সুদে রাখছে। কিন্তু আমরা চাইলে সাড়ে দশ শতাংশ সুদ দিতে হচ্ছে। এটা বেশি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর আমানতে সুদ হার ৮ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়। এটি হলেই কেবল ঋণের সুদ হার এক অঙ্কে আসবে। অন্যথায় আসবে না। কারণ ১০ থেকে সাড়ে ১১ শতাংশ সুুদে আমানত নিয়ে এক অঙ্কে ঋণ দেওয়া সম্ভব নয়।

এ সময় চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর আমানত যাতে কম সুদে আমরা পাই সেটি নিয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) কাজ করছে। এ ব্যাপারে শিগগিরই একটি সমাধান হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads