• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
আরটিজিএস সেবায় বাড়ছে লেনদেন

বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো

সংগৃহীত ছবি

ব্যাংক

আরটিজিএস সেবায় বাড়ছে লেনদেন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৫ অক্টোবর ২০১৮

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় টিকতে প্রযুক্তিনির্ভর সেবাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। অনলাইন ব্যাংকিংয়ে সহজে দ্রুত লেনদেনের সুবিধা দিচ্ছে রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস)। ফলে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, গত সেপ্টেম্বর মাসে তাৎক্ষণিক এ লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থায় পরিশোধ হয়েছে ৬২ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। আর মোট লেনদেন হয়েছে ৮৪ হাজার ৪৪২টি।

এর আগে আগস্টে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। আর লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭৬ হাজার ১৯২টি। অর্থাৎ লেনদেন ও লেনদেনকৃত টাকার পরিমাণ দুটোই বেড়েছে। তবে এখনো অনেক ব্যাংক সম্পৃক্ত হয়নি আরটিজিএস সেবায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সার্ভারে ত্রুটির কারণে গত ফেব্রুয়ারি থেকে আরটিজিএসে লেনদেন কমে যায়। লেনদেন বাড়াতে গত মাসে ব্যাংকগুলোকে নিয়ে বৈঠক করে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে আরটিজিএসে লেনদেন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

তুলনামূলক কম খরচ ও তাৎক্ষণিক পরিশোধের সুযোগের ফলে অনলাইনে লেনদেন নিষ্পত্তির সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম এখন আরটিজিএস। গ্রাহকরা অনলাইন ব্যাংকিংয়ে এক লাখ বা তার বেশি অঙ্কের টাকা এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে।

গত জানুয়ারিতে এ ব্যবস্থায় ১ লাখ ১১ হাজার ৫৪৫টি লেনদেনের বিপরীতে মোট এক লাখ ৮৫ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা পরিশোধ হয়। তবে লেনদেন ব্যাপক কমে মার্চে যা ছিল ১৫ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এর পরের মাস এপ্রিলে লেনদেন আরো কমে দাঁড়ায় ৮ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। গত জুলাইয়ে সার্ভারে ত্রুটির কারণে এক ধরনের উদ্বেগ থেকে বড় লেনদেন নিষ্পত্তিতে বিকল্প ব্যবস্থা ব্যবহার করছিল ব্যাংকগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, গত বছরের সেপেম্বর মাস থেকে লেনদেন হয়েছে প্রায় অর্ধেক। ২০১৭ সালের এই মাসে মোট লেনদেনকৃত টাকার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। আর লেনদেনের পরিমাণ ৬৪ হাজার ২৮৫টি। বছরের ব্যবধানে লেনদেনের পরিমাণ বাড়লে টাকার পরিমাণ কমে গেছে। অর্থাৎ গ্রাহকরা বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেনে অনলাইন কার্যক্রম এড়িয়ে চলছেন। 

এদিকে, গত আগস্ট মাসে গ্রাহকরা ব্যাংকের এটিএম বুথে মোট লেনদেন করেছে ২০ লাখ ৯৯ হাজার ৭২৬টি। যার বিপরীতে মোট লেনদেনকৃত টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে লেনদেন বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর টাকার লেনদেন বেড়েছে ৪৬ দশমিক ০৮ শতাংশ।

পয়েন্ট অব সেলগুলোতে  (পিওএস) জুলাই মাসে মোট লেনদেন ছিল ৩ লাখ ২৭ হাজার ৬০৩টি। সেটি আগস্ট মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে  ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮২৯টি। আর টাকার লেনদেন আগস্ট মাসে হয়েছে ১৪৭ কোটি, যা জুলাইয়ে ছিল ১২৮ কোটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, বিভিন্ন অপরাধমূলক লেনদেনের বেশিরভাগই হয়ে থাকে নগদে। এসব বিবেচনায় ইলেকট্রনিক পরিশোধ ব্যবস্থা প্রসারের মাধ্যমে নগদ লেনদেন কমাতে চাইছে সরকার। এজন্য ইলেকট্রনিক পদ্ধতির প্রচারণা বাড়ানো, সরকারি পরিশোধ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, সরকারি ব্যাংকের শতভাগ অটোমেশনসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া নগদ, পে-অর্ডার বা ম্যানুয়াল চেকের বিপরীতে যেকোনো অঙ্কের পরিশোধের ঝুঁকির বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে বলা হয়। একই সঙ্গে নগদ লেনদেন নিরুৎসাহিত করতে বাড়তি চার্জ আরোপ করার বিষয়ে ভাবছে সরকার। গ্রাহকরাও ঝুঁকি বিবেচনায় এখন ইলেকট্রনিক পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন।

একসময় দেখা যাবে, কারো একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলে তিনি অন্য যেকোনো অ্যাকাউন্টেই লেনদেন করতে পারছেন। পরিশোধ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক অগ্রসর। আরটিজিএস, বিইএফটিএনসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এক ব্যাংকের গ্রাহক আরেক ব্যাংকের গ্রাহককে পরিশোধ করছেন। এখন আইবিএফটি পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যাংক কর্মকর্তার মধ্যস্থতা ছাড়াই গ্রাহক নিজের মতো করে দ্রুততার সঙ্গে টাকা স্থানান্তরের সুযোগ পাচ্ছেন।

তবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম)  এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, দেশের ব্যাংকগুলোর এক-তৃতীয়াংশ সব ধরনের সাইবার হামলা মোকাবেলা করতে পারবে না। ৩৮ শতাংশ কিছুটা পারবে। ফলে অনলাইন ব্যাংকিং ও পরিশোধ ব্যবস্থায়ও ঝুঁকি রয়ে গেছে। 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads