• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
আর্থিক সূচকে শক্ত অবস্থানে জনতা ব্যাংক

জনতা ব্যাংক

সংগৃহীত ছবি

ব্যাংক

বছর শেষে খেলাপি ঋণ এক অঙ্কে নামাতে চায়

আর্থিক সূচকে শক্ত অবস্থানে জনতা ব্যাংক

  • সাইদ আরমান
  • প্রকাশিত ০৭ নভেম্বর ২০১৮

আর্থিক সূচকে ভালো অবস্থানে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। চলতি বছর শেষে মুনাফা, মূলধন, আমানত, ঋণ, নিরাপত্তা সঞ্চিতি, খেলাপি ঋণ আদায়, অবলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায়, শীর্ষ খেলাপি গ্রাহকের থেকে নগদ আদায়সহ সব সূচকে সন্তোষজনক চিত্র পাওয়া যাবে। মুনাফা বাড়বে আগের বছরের তুলনায়।

ব্যাংক সূত্র বলছে, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আর্থিক সূচকের উন্নতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে। এতে ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হচ্ছে উন্নতি। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনার ভিত্তিতে দেশের অর্থনীতিতে শিল্পবান্ধব পরিবেশ, নতুন উদ্যোক্তা, কর্মসংস্থান ও আমদানি-রফতানি আরো গতিশীল করতে ব্যাংক সব শ্রেণির বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা ও গ্রাহককে স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে। আমানতের সুদহার কার্যকর করতে ব্যাংক নগদ টাকার টানাটানিতে পড়ে সাময়িকভাবে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন বিনিয়োগযোগ্য বড় অঙ্কের টাকা ব্যাংকের তহবিলে রেখেছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকটির হাতে বিনিয়োগযোগ্য অতিরিক্ত তারল্য ছিল দুই হাজার ২০০ কোটি  টাকা। গত অক্টোবরের শেষ দিন যা ছিল এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

সর্বশেষ হিসাবে ব্যাংকের মোট আমানত ৬৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বিপরীতে ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা। ঋণ ও আমানত হার (এডিআর) ৭৭ শতাংশ। ২০১৭ সালে ঋণ আমানত হার ছিল ৭১ শতাংশ। ২০১৬ সালে ছিল ৬২ শতাংশ।

রাষ্ট্রায়ত্ত এই ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুছ ছালাম আজাদ বাংলাদেশের খবরকে বলেন, বছর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি আগের ধারাবাহিকতায় মুনাফা, তারল্য, মূলধন সব ক্ষেত্রে অগ্রগতি ধরে রাখবে। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা টিম নিরলসভাবে কাজ করছে। পরিচালনা পর্ষদ নীতি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরনো ঋণ আদায়ে মনোযোগ দিয়েছে ব্যাংক। বছর শেষে খেলাপি ঋণের অঙ্ক ৮ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। একইভাবে অবলোপনকৃত ঋণ থেকেও আদায় বাড়াতে গ্রাহকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্যাংকের বড় দুই গ্রাহকের একজন থেকে চলতি মাসে বড় অঙ্কের টাকা আসবে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে কথা হয়েছে। একই সঙ্গে শীর্ষ ২০ খেলাপি গ্রাহক থেকে নগদ আদায়ে কাজ করছে নিয়মিত ব্যাংক টিম। টিমের কর্মতৎপরতায় ইতোমধ্যে ৯৬ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। এ ছাড়া ছোট ছোট গ্রাহকদের ঋণ পুনঃতফসিল করে নিয়মিতকরণের মাধ্যমে আদায় এবং নগদ আদায় জোরদার করা হয়েছে। এসব চেষ্টায় প্রায় ৫২৫ কোটি টাকা নগদ আদায় করা সম্ভব হবে।

এসবের পাশাপাশি নেতিবাচক অবস্থান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে অনিয়ম ও দুর্নীতির ক্ষেত্রে। এতে অনিয়ম কমেছে। পরিচালনা পর্ষদ জবাবদিহির বিষয়টি সামনে রেখেছে।

নির্বাচনী বছরে ঋণ বিতরণে সতর্ক অবস্থানে ব্যাংক। যাচাই-বাছাই করে ফেরত পাওয়া যাবে, এমন গ্রাহকদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে।

গত ডিসেম্বর শেষে আর্থিক সূচকে উন্নতি করে ব্যাংক। এরপর সার্বিকভাবে কিছুটা খারাপ সময়ের মুখে পড়ে ব্যাংক খাত। এ সময় কিছুটা আক্রান্ত হয় রাষ্ট্রায়ত্ত এই ব্যাংক। তবে ২০১৮ সাল শেষে আবারো ভালো অবস্থায় দাঁড়াবে। ওই বছরের জন্য পরিচালন মুনাফার নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা।

খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে উদ্যোগের কথা জানিয়ে ব্যাংক সূত্র বলছে, খেলাপি ঋণ এখনো কিছুটা বেশি। তবে এটি কমছে আগের তুলনায়। রাতারাতি খেলাপি ঋণের অঙ্ক বড় আকারে নামিয়ে আনা যাবে না। কিছু সময় দিতে হবে। ২০১৬ সালের শেষে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ছিল ১৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ২০১৭ সালে তা দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। চলতি বছর খেলাপি ঋণের হার আমরা এক অঙ্কে নামবে।

তথ্যপ্রযুক্তিতে অগ্রগতি করতে রিয়াল টাইম গ্রোস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) এ জনতা ব্যাংক দ্রুত আরো উন্নতি করতে চায়। চলতি বছর ৪০০ শাখায় বাস্তবায়নে কাজ চলছে। আগামী বছর বাকি শাখাগুলো শেষ হবে। ভবিষ্যতে নতুন নতুন প্রযুক্তিনির্ভর সেবা আনবে জনতা ব্যাংক।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads