• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
অসাধু ব্যবসায়ী-ব্যাংকারদের ছাড় নয় : অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

সংরক্ষিত ছবি

ব্যাংক

অসাধু ব্যবসায়ী-ব্যাংকারদের ছাড় নয় : অর্থমন্ত্রী

  • সাইদ আরমান
  • প্রকাশিত ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

অসাধু ব্যবসায়ি ও ব্যাংকারদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, শক্ত ও বড় অনিয়মের বিরুদ্ধে দূর্বল ব্যবস্থা নিলে ব্যর্থ হতে হবে। দুষ্ট চক্রকে কোন ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। সরকারি ব্যাংকগুলোতে সুশাসন বাড়াতে শিগগিরই বিশেষ নীরিক্ষা পরিচালনা করা হবে।

আজ বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিউটে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারের এই মনোভাবের কথা জানান।

আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মুস্তফা কামালকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন সরকারের। রূপালি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মনজুর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান প্রধান।

এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, এই মুহুর্তে আমাদের সবচেয়ে উদ্বেগ খেলাপি ঋণ। এটা একটি অপরাধ। খেলাপি ঋণ অবশ্যই অপরাধ। জনগণের টাকা, কৃষকের টাকা, দিনমজুরের টাকার সঠিক ব্যবহার করতে হবে। সঠিক ব্যবহার করতে না পারলে সেটি ব্যর্থতা হিসেবে চিহিৃত হবে।

তিনি বলেন, দেশে দুই ধরনের ব্যবসায়ি শ্রেণী আছে। একটি ভালো শ্রেণীর। দ্বিতীয়টি হচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ি। আমরা ভালো ও অসাধু ব্যবসায়িদের এক কাতারে ফেলব না। ভালো ব্যবসায়িরা ব্যবসা করতে গিয়ে হোচট খেতে পারেন। তারা ঝুকি নেন ব্যবসা করতে। ঝুকি নিয়ে ঋণ নেন। কিন্তু সাময়িক অসুবিধা হতে পারে। তবে দেখতে হবে তারা ব্যবসার জন্য চেষ্টা করছেন। তাই তাদের সব ধরনের সহায়তা ও ছাড় দেওয়া হবে। তাদের কোন ধরনের হয়রানি করা হবে না। ব্যবসায় যাতে ঘুঁরে দাঁড়াতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হবে। আমি এখানে কারো ব্যবসা বন্ধ করতে আসিনি।

তবে যারা অসাধু ব্যবসায়ি তাদের কোন ছাড় নয়। শক্ত ভাবে ধরা হবে তাদের। মালেশিয়াতে ঋণ খেলাপিদের তালিকা করা হয়। তাদের তালিকা সরকার বিভিন্ন সংস্থাগুলোকে দিয়ে থাকে। যাতে ঋণ খেলাপিরা কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা না পান। এমনকি দেশের বাইরেও যেতে না পারেন। ব্যাংকের টাকা দেবেন না কিন্তু বিদেশে গিয়ে ফুর্তি করতে পারবে না। আমাদের এখানেও কঠোর হতে হবে অসাধুদের ব্যাপারে। কারণ অসাধু ব্যবসায়িরা ঋণ নিয়ে থাকেন ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না করার চিন্তু থেকে।

অসাধু ব্যবসায়ি ও ব্যাংকারেরর যোগসাজস এর প্রসঙ্গে টেনে অর্থমন্ত্রী বলেন, বারবার একই কায়দা কোন কোন গ্রুপ ঋণ নিচ্ছে। আপনারা দিয়ে যাচ্ছেন। আগের ঋণের কোন খবর রাখছেন না। এটি আর হবে না। ব্যবসায়ি ও অসাধু ব্যাংকারদের পারস্পরিক সম্পৃক্তা এখানে স্পষ্ট। তাই দুইজনের বিরুদ্ধেই শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কঠিন সময়ে সহজ সিদ্ধান্ত নিলে ব্যর্থ হতে হবে। খেলাপি ঋণ আদায়ে আইনে ক্রটি বিচ্যুতি থাকলে তা ঠিক করা হবে।

স্বল্প মেয়াদি আমানত নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদি বিনিয়োগে সর্তক থাকতেও বলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ জন্য আমাদের বিকল্প আমানত উৎসব বের করতে হবে। কামাল বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলোতে তিন বছরের কর্মকাণ্ড ও চিত্র জানতে শিগগিরই বিশেষ নীরিক্ষা পরিচালনা করা হবে। হিসাব নীরিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এটি করা হবে।

অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, রূপালী ব্যাংকে সুশাসনের দিতে মনোযোগ দিতে হবে। এজন্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে চলতে হবে। ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার অনেক বেশি। এটি নামিয়ে আনতে হবে। পরিচালনা মুনাফা যেটি ২০১৮ সালে হয়েছে সেটিও কম।

স্বাগত বক্তব্যে এমডি বলেন, আমরা গত বছর বেশির ভাগ সূচকে উন্নতি করেছি। আমাদের আমানত দাড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা। আগের বছর ছিলো ৩১ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। লোকসানি শাখা কমে দাড়িয়েছে ৮টি। এসময় তিনি ব্যাংকটিকে আরো এগিয়ে নিতে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর দাবি করেন। বর্তমানে ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৩৭২ কোটি টাকা। যা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বনি¤œ। এর ফলে আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যাংকটি ব্যবসা করতে পারছে না। কম মূলধন ভিত্তি থাকার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করতে অনাগ্রহ দেখায়।

ব্যবসায়িক সম্মেলনে সারা দেশের ৫৬৮টি শাখার ব্যবস্থাপকরাসহ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads