• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
খেলাপি ঋণ বাড়ল ১৯,৬০৮ কোটি টাকা

প্রতীকী ছবি

ব্যাংক

খেলাপি ঋণ বাড়ল ১৯,৬০৮ কোটি টাকা

# মোট ঋণ ৯ লাখ ১১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা # মোট খেলাপি ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা   # খেলাপি ঋণের হার ১০.৩০ শতাংশ

  • সাইদ আরমান
  • প্রকাশিত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। খেলাপি ঋণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। তবে কমেছে গত সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের থেকে। খেলাপি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিসেম্বর প্রান্তিকে করা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, গত বছরের শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৯ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা। আর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। সে হিসাবে কমেছে ৫ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ১১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে মোট খেলাপি ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বড় অঙ্কের ঋণখেলাপিদের ব্যাপক ছাড় দেওয়া হয়। এতে বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। গত তিন মাসে ৬ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কমানো হয়েছে। কিন্তু এরপরও আগের বছরের তুলনায় ২০১৮ সাল শেষে খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

সর্বশেষ প্রতিবেদন মোতাবেক, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪৮ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এই সময়ে ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মোট ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৬২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৮ হাজার ৮০ কোটি টাকা। এটা মোট ঋণের ৩১ দশমিক ২৩ শতাংশ। খেলাপি ঋণের হার কমলেও মোট ঋণের ওপর ভর করে বেড়েছে পরিমাণ। প্রায় ৬১৫ কোটি টাকা খেলাপি বেড়েছে।  

বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর ডিসেম্বর শেষে মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে খেলাপি ৩৮ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। এটা মোট ঋণের ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৩ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা, যা ছিল ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। হিসাব মতে, তিন মাসের ব্যবধানে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে বছর শেষে খেলাপি ঋণ কমেছে ৫ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা। আর শতকরা হারেও খেলাপি ঋণ কমে গেছে। সেপ্টেম্বর শেষে বেসরকারি খাতে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা।

বিশেষায়িত ২টি ব্যাংকে ডিসেম্বর শেষে মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা। এই সময় মোট ঋণের স্থিতি ছিল ২৪ হাজার ৬০১ কোটি টাকা। সে হিসাবে ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশই খেলাপি হয়ে পড়েছে। সেপ্টেম্বর শেষে এই হার ছিল ২১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। মোট পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ২৪১ কোটি টাকা। বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের চিত্রে কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

অন্যদিকে, বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর ডিসেম্বর শেষে মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ২ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এটা আগের প্রান্তিকের থেকে সামান্য বেশি। আগের প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিল ২ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৫০ হাজার ১৬০ কোটি টাকা, আর ২০১৫ সালে হয় ৫৯ হাজার ৪১০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ২০১৩ সালে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, খেলাপি ঋণ যেকোনোভাবেই হোক আমরা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে চাই। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ যৌথভাবে এটি কমিয়ে আনতে কাজ করছে। ব্যাংকারদের মধ্যে একটি প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। শিগগিরই আরো উন্নতি হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads