• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
দুই ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বন্ধ

দুই ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বন্ধ

ছবি : সংগৃহীত

ব্যাংক

দুই ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বন্ধ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ মার্চ ২০১৯

গ্রাহককে প্রত্যাশিত সেবা দিতে না পারা ও ক্রমান্বয়ে লোকসানে থাকার কারণে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করেছে বেসরকারি দুই ব্যাংক। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এক্সিম ব্যাংকের এক্সিম ক্যাশ ও আইএফআইসি ব্যাংকের আইএফআইসি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে এই ব্যাংক দুটির গ্রাহক সেবায় কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া বলেন, আপাতত আমাদের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কয়েক মাস ধরেই এ সেবা দেওয়া হচ্ছে না। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মনীতির কারণেই এই সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, যেসব প্রতিষ্ঠান এমএফএসে লাইসেন্স নিয়েছে তাদের সেবার মান বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এমএফএ’র জন্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান করার কথাও বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে দুটি ব্যাংক গত জানুয়ারি থেকে তাদের এমএফএসের কার্যক্রম বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে। তবে তাদের গ্রাহকসংখ্যা খুব সামান্য থাকায় কোনো প্রভাব পড়েনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, এক্সিম ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংক তাদের এমএফএস সেবা বন্ধ করায় জানুয়ারির শেষে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৬টিতে দাঁড়িয়েছে। ফলে দেশে মোট নিবন্ধিত এমএফএস হিসাবের সংখ্যা কমেছে। জানুয়ারি শেষে এমএফএস হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার, যা আগের মাসের তুলনায় দশমিক ৩ শতাংশ কম। ডিসেম্বর হিসাবে এই সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার।

হিসাবধারীর সঙ্গে কমেছে সক্রিয় হিসাবের সংখ্যাও। জানুয়ারি শেষে এমএফএসে সক্রিয় হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৯৪ হাজার, যা আগের মাসের তুলনায় ১০ দশমিক ৩ শতাংশ কম। ডিসেম্বর হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৭৩ লাখ ১৩ হাজার। এই সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৯৯৬। ডিসেম্বরে এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৪৭৩।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সবশেষ জানুয়ারি মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৪ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। এই সময় মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে ১২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। উত্তোলন করা হয়েছে ১৩ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৫ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে ৭৪৭ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২৭৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪০৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সরকারি পরিশোধ ২৮৮ কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৫২৭ কোটি টাকা।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ‌-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বাজারের বেশিরভাগই বিকাশের দখলে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads