• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
বিদেশিদের তথ্য পেলেই অভিযোগপত্র : সিআইডি

ছবি : সংগৃহীত

ব্যাংক

রিজার্ভ চুরি

বিদেশিদের তথ্য পেলেই অভিযোগপত্র : সিআইডি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ এপ্রিল ২০১৯

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তদন্ত আটকে আছে বিদেশি ইস্যুতে। ফলে দেওয়া যাচ্ছে না অভিযোগপত্রও। তবে তদন্ত সংস্থার আশা শিগগিরই চার্জশিট দেওয়া যাবে।

সূত্র জানায়, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দেশের ভেতরের লোকজন ছাড়াও বাইরের কয়েকটি দেশের অন্তত ৩০ জন জড়িত। এই বিদেশিদের তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিতে পারছে না মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

তবে এসব ব্যক্তির তথ্য পেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত রিজার্ভ চুরিতে জড়িত সন্দেহভাজন মাত্র একজন বিদেশির তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সিআইডির একটি সূত্র। সূত্র জানায়, অন্যদেরটাও শিগগির পাওয়ার আশা করছেন সিআইডি। সেসব তথ্য পেলেই চার্জশিট তৈরির কাজে হাত দেওয়া হবে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির সঙ্গে জড়িত ৩০ বিদেশি নাগরিককে শনাক্ত করেছে সিআইডি। চিহ্নিত ওইসব ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য চেয়ে এরই মধ্যে ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কাসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাদের সবার তথ্য পেলে চার্জশিট তৈরিতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগতে পারে।

তবে ওইসব বিদেশির তথ্য কবে নাগাদ হাতে আসবে, সেটা সঠিকভাবে বলতে পারেননি তারা। বিদেশিদের বিষয়টি পুরোপুরি শেষ করে দেশের ভেতরে জড়িতদের নিয়ে কাজ করতে চান তারা। তাদেরও চিহ্নিত করে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

অভিযোগপত্রে বিদেশি অপরাধীদের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া সম্ভব হলে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণা করতে পারবেন আদালত। দণ্ড ঘোষণার পর সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষকে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে ২ কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কায় এবং ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা মানি লন্ডারিং আইনে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরির অভিযোগ এনে ১৫ মার্চ (২০১৬) মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

শুরু থেকেই মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান সিআইডির অর্গানাইজ ও ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান।

রিজার্ভ চুরির তদন্ত কবে নাগাদ শেষ হবে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে সিআইডির অর্গানাইজড ও ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্লা নজরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। যোগাযোগ করা হলে মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কবে শেষ হবে বলা মুশকিল। তদন্ত কখনো সময়সীমা বেঁধে দিয়ে হয় না। এটা একটা ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম। বাংলাদেশ ছাড়াও ফিলিপাইন, হংকং, ম্যাকাও, চীন, শ্রীলঙ্কা, মিশর, সিঙ্গাপুর ও জাপানের অপরাধীরা জড়িত এ ঘটনার সঙ্গে। সেসব অপরাধীর তথ্য পেতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত মাত্র একজন অপরাধীর তথ্য পেয়েছি। অন্য অপরাধীদের তথ্য আনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন মাধ্যম কাজ করছে। বিদেশি অপরাধীদের তথ্যগুলো পেলেই আমরা এ মামলার তদন্তের ইতি টানতে পারব।’

প্রসঙ্গত, সিআইডি ছাড়াও রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনার তদন্তের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পুলিশ সদর দফতর, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি)। সবগুলো বিভাগের একটি সমন্বিত টিম এ তদন্ত কাজ চালাচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads