• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
টেকসই প্রবৃদ্ধি চায় মার্কেন্টাইল ব্যাংক

সংগৃহীত ছবি

ব্যাংক

গ্রাহক সেবার ২১ বছর

টেকসই প্রবৃদ্ধি চায় মার্কেন্টাইল ব্যাংক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ জুন ২০১৯

গ্রাহক সেবার ২১ বছরে পাঁ দিয়েছে বেসরকারি খাতের মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড। ১৯৯৯ সালের জুন মাসে ব্যাংকটি কার্যক্রম শুরু করে। গত ২০ বছরে ব্যাংকটির কার্যক্রম বেড়েছে। বেড়েছে গ্রাহক, শাখার সংখ্যা, আমানত ও ঋণের পরিমাণ। ধারবাহিক ব্যাংকিং কার্যক্রমের বাইরে পণ্য ও সেবায় আনা হয়েছে বৈচিত্র্য। তবে আগ্রাসী ব্যাংকিং নয়, টেকসই প্রবৃদ্ধি চায় দ্বিতীয় প্রজন্মের এই ব্যাংকটি।

ব্যাংকের ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর দিলকুশায় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের ২০ বছরের অগ্রযাত্রা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরেন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সাহিদ রেজা। এ সময় ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান এ এস এম ফিরোজ আলম, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আকরাম হোসেন (হুমায়ুন), মার্কেন্টাইল ব্যাংক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এম আমানউল্লাহ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম, পরিচালক ও সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম, মো. আনোয়ারুল হক ও আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকিং খাতে তারল্য সঙ্কট চলছে। তবে আমাদের ব্যাংকে কোনো ধরনের তারল্য সঙ্কট নেই। আমরা সম্পদ ও ব্যয় সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করে চলছি। দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে আমাদের কোনো ধরনের সঙ্কট নেই। মার্চ শেষে ব্যাংকের আমানত দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। বিপরীতে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৬১১ কোটি টাকা। আর মার্চ প্রান্তিক শেষে মুনাফা হয়েছে ১৫৯ কোটি টাকা। একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিলো ৪ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা, আমদানি বাণিজ্য হয়েছে ৪ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। আর প্রবাসিদের অর্থ দেশে এসেছে আমাদের ব্যাংকের মাধ্যমে এক হাজার ৪৫ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, আমরা সব সময় টেকসই প্রবৃদ্ধি চেয়েছি। আগ্রাসী উন্নয়নে মার্কেন্টাইল ব্যাংক বিশ্বাস করে না। ২০ বছরে ব্যাংকের শাখার সংখ্যা াড়িয়েছে ১৩৯টি। এটিএম বুথের সংখ্যা ১৬৯টি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালনায় বিশ্বের ৬৩৫টি ব্যাংকের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়েছে। ৩৩টি দেশি ও বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে প্রবাসীদের অর্থ দেশে আনা হচ্ছে।

সাহিদ রেজা বলেন, খুব শিগগিরই আমরা মানি ট্রান্সফার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি। এটি চালু হলে মার্কেন্টাইল ব্যাংক আরেকটি নতুন মাইলফলক অর্জন করবে। একই সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। চালু করা হবে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম।

ব্যাংকিং প্রভিশন ঘাটতি ও মার্চ প্রান্তিকে ব্যাংকের ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিতে কেন টান পড়েছে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, নানা কারণে মার্চ প্রান্তিকে আমাদের প্রবৃদ্ধি খুব বেশি হয়নি। তবে আমরা সব সূচকে ইতিবাচক অবস্থানেই আছি। কোন সূচক নিম্নমুখী নয়। আর প্রভিশন রাখতে আমরা ব্যর্থ হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা অতিরিক্ত প্রভিশনিং করতে নির্দেশনা দিয়েছে। তারা কিছু ঋণ বিবেচনায় নিয়ে এটি করেছে। তবে সেসব ঋণ চলমানই আছে। তারপরও আমরা একশ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে প্রভিশনিং করেছি। বাকি টাকা আগামী ২ বছরে সমন্বয় করা হবে।

করপোরেট সুশাসন প্রসঙ্গ টেনে সাহিদ রেজা সাংবাদিকদের বলেন, কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই ব্যাংকটি করপোরেট সুশাসনকে সামনে রেখেছে। ব্যাংকিং সংক্রান্ত সকল আইন কানুন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্দেশনা পরিপালন করে চলার চেষ্টা করেছি। আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং কোম্পানী মুডিস আমাদের বি-১ রেটিং করেছে।

ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে ব্যাংকটির এমডি কামরুল ইসরাম চৌধুরী বলেন, আমাদের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোন বিরোধ কিংবা দূরত্ব নেই। আমরা এক সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। পর্ষদে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। আমরা সেই নীতি মোতাবেক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ব্যাংকের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে গ্রাহক ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। উক্ত অনুষ্ঠানে ‘মার্কেন্টাইল ব্যাংক সম্মাননা ২০১৯’ এর জন্য নির্বাচিত পাঁচ গুণীজন ও প্রতিষ্ঠান এবং ‘এমবিএল ইয়াং ব্যাংকার্স অ্যাপ্রিশিয়েশন অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’ এর জন্য নির্বাচিত পাঁচজন তরুণ ও মেধাবী ব্যাংকারকে পুরস্কৃত করা হবে।

ব্যাংকের চেয়ারম্যান ‘মার্কেন্টাইল ব্যাংক সম্মাননা-২০১৯’ এর জন্য নির্বাচিত পাঁচ গুণীজন ও প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করেন। তারা হলেন- শিক্ষায় ড. তোফায়েল আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় ক্যাপ্টেন সাহাবুদ্দিন আহমেদ, বীর উত্তম, অর্থনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণায় বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, ময়মনসিংহ, শিল্প ও বাণিজ্যে আবুল খায়ের গ্রুপের আবুল কাশেম ও ক্রীড়াতে সাতারু মো. মোশাররাফ হোসেন খান।

এ ছাড়াও ‘এমবিএল ইয়াং ব্যাংকার্স অ্যাপ্রিশিয়েশন অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’ এর জন্য নির্বাচিত পাঁচজন তরুণ ও মেধাবী ব্যাংকারের নাম ঘোষণা করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, প্রতিযোগিতার পাঁচটি ধাপ পেরিয়ে এসকল মেধাবীরা নির্বাচিত হয়েছেন।

তারা হলেন- আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট উজ্জল কুমার সিংহ, এবি ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সিরাজুল ইসলাম, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম হোসেনুজ্জামান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট তাওহীদ খান মজলিস ও ব্যাংক এশিয়ার ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আরাফাত হোসেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads