• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
সম্পদ বেশি ইসলামী ব্যাংকের তলানিতে আইসিবি

সংগৃহীত ছবি

ব্যাংক

সম্পদ বেশি ইসলামী ব্যাংকের তলানিতে আইসিবি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

প্রতিনিয়ত সম্পদের পরিমাণ বাড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর। সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকেরই সম্পদের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে সম্পদের দিক থেকে সবার ওপরে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। তলানিতে রয়েছে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর চলতি বছরের প্রথমার্ধের (জানুয়ারি-জুন) আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমানে দেশের ব্যাংক খাত নানাবিধ সংকটের মধ্যে রয়েছে। প্রতিনিয়ত খেলাপি ঋণ বাড়ছে। তারপরও ব্যাংকই অর্থনীতির মূল ভিত্তি। যেকোনো প্রতিষ্ঠানের থেকে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী। সংকটের মধ্যেও ব্যাংকগুলোর সম্পদের পরিমাণ বাড়া ভালো লক্ষণ।

নিয়ম অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে প্রতি তিন মাস পরপর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। এরই আলোকে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংক চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিক শেষে জানুয়ারি-জুন সময়ের প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে। যা নিয়ম অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জেও পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

ব্যাংকগুলোর পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুনশেষে সম্পদের দিক থেকে সবার ওপরে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটির সম্পদের পরিমাণ এক লাখ পাঁচ হাজার ৯৩৬ কোটি ৬৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯৯ হাজার ৭৯৫ কোটি ৯৩ লাখ তিন হাজার টাকা। অর্থাৎ ছয় মাসে ব্যাংকটির সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ছয় হাজার ১৪০ কোটি ৭০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।

তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সম্পদের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পূবালী ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির সম্পদের পরিমাণ ৪৪ হাজার ৩৭০ কোটি ৫৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে তাদের সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ২২ কোটি ৫৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। এ হিসাবে চলতি বছরের ছয় মাসে ব্যাংকটির সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে তিন হাজার ৪৪৮ কোটি এক লাখ ৫১ হাজার টাকা।

এর পরেই রয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির সম্পদের পরিমাণ ৪৩ হাজার ৪৫১ কোটি ৩৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ২৯৬ কোটি ১৫ লাখ ১২ হাজার টাকা। এ হিসাবে ছয় মাসে ব্যাংকটির সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে তিন হাজার ১৫৫ কোটি ১৮ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।

৪০ হাজার কোটি টাকার ওপরে সম্পদ থাকা ব্যাংকের তালিকায় আরো রয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে চলতি বছরের জুনশেষে সাউথইস্ট ব্যাংকের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ১৮০ কোটি ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, যা ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ৩৮ হাজার ১৫৭ কোটি ৫৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সম্পদ আছে ৪০ হাজার ২৪২ কোটি ৬০ লাখ ২৮ হাজার টাকা, যা ২০১৮ সাল শেষে ছিল ৩৭ হাজার ২১৮ কোটি ৩৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা।

সম্পদের দিক থেকে শীর্ষে থাকা ব্যাংকগুলোর মতো অন্য ব্যাংকগুলোরও চলতি বছরের ছয় মাসে সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। এমনকি এ তালিকায় রয়েছে লোকসানে নিমজ্জিত আইসিবি ইসলামী ব্যাংকও। চলতি বছরের জুনশেষে লোকসানি এ ব্যাংকের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৬৩ কোটি ৭২ লাখ ৯২ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ ছিল এক হাজার ১৪২ কোটি ৯৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ ব্যবসায় লোকসান করলেও চলতি বছরের ছয় মাসে ব্যাংকটির সম্পদ বেড়েছে ২০ কোটি ৭৫ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।

ডিএসইর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একসময় ব্যাংক এ বাজারের প্রাণ হিসেবে বিবেচিত হতো। পর্যায়ক্রমে ব্যাংকের অবদান কিছুটা কমেছে। কিন্তু এখনো পুঁজিবাজারের উত্থান-পতনে ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ব্যাংক খাতের শেয়ারের দাম বাড়লে অটোমেটিক বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারে যে দুরবস্থা বিরাজ করছে সেজন্য ব্যাংক খাতই দায়ী। নানা অনিয়মে জড়িত বেশিরভাগ ব্যাংক বিনিয়োগকারীদের কয়েক বছর ধরে ভালো লভ্যাংশ দিতে পারছে না। ব্যাংকের সম্পদ বাড়ছে, ভালো কথা। কিন্তু এতে বিনিয়োগকারীদের লাভ কী? সম্পদ বাড়ানোর পাশাপাশি যদি ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দিত তাহলে বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি পুঁজিবাজারও উপকৃত হতো।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads