• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
১ জানুয়ারি থেকে  সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট কার্যকর: অর্থমন্ত্রী

ফাইল ছবি

ব্যাংক

১ জানুয়ারি থেকে  সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট কার্যকর: অর্থমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ব্যাংকগুলোতে সুদের হার এক অঙ্ক (১০ শতাংশের নিচে) কার্যকর হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এ বিষয়ে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। ব্যাংক মালিকরা ঋণের সুদহার এক অঙ্কে (সিঙ্গেল ডিজিট) নামিয়ে আনবে বলে গত বছরের আগস্টে প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে ব্যাংক মালিকরা সরকারের কাছ থেকে একের পর এক সুবিধা নিলেও  ব্যাংক সুদের সিঙ্গেল ডিজিট বা এক অঙ্কের সুদহার বাস্তবায়ন এখনো অধরাই রয়ে গেছে।

গতকাল বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী কেন্দ্রীয়ভাবে এবং ৪৯৫টি উপজেলায় ক্যাম্পেইন বার্যক্রমের বাস্তবায়নে জরুরি প্রয়োজনে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়কাজ সম্পন্নের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগের ২৫ বছর মেয়াদে আনুমানিক ৩৮ হাজার ১৬০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ভারত কর্তৃক নেপালে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৫০০ মোগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানির ট্যারিফ অনুমোদন এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়তন বোর্ডের ‘বিতরণ ব্যবস্থার ক্ষমতাবর্ধন, পুনর্বাসন ও নিবিড়করণ (রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ)’ (সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১০১ কোটি ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৬০৫ টাকার আরেকটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যাংক সুদের সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তবে সার্কুলার ইস্যু করেনি। তাদের একটি কমিটি করে দিয়েছিলাম সেই কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শেষ করেছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর করার চেষ্টা করছি, সে কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন ইস্যু করবে। সে প্রজ্ঞাপনে সবকিছু থাকবে, আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, স্টেক-হোল্ডারদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে ব্যাংক ঋণের  সুদের হার এক অঙ্কে (সিঙ্গেল ডিজিট) নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কমিটি কি সুপারিশ করেছে, সাংবাদিকরা জানতে চাইলে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কমিটি যেহেতু সুপারিশ করেছে সেহেতু এটি পাবলিক হয়নি, পাবলিক হলে জানতে পারবেন। বিষয়টি গোপন রাখা হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারা বিশ্বে কোথাও এত হাই রেটে (উচ্চ হারে)  ইন্টারেস্ট নেই, সামঞ্জস্য করে চলতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ১ জানুয়ারি থেকে চেষ্টা করছি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করতে হবে, আক্ষরিক অর্থে হবে।  এর মাঝে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন করবে এবং সবাই তো রেডি।

এছাড়া সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন হলে অনেক কাজ করতে সহজ হবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন তারা বলছেন সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসতে হবে। যারা ভালো ঋণগ্রহীতা তাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করতে এ প্রচেষ্টা। তারা টাকা নিয়ে টাকা শোধ করেনি তাদের জন্য নয়। সুদের হার সবার জন্য এক হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২ শতাংশ দিয়ে যারা রেজিস্ট্রেশন করছে তাদের জন্য একরকম, আবার যারা ভালো তাদের জন্য আলাদা প্রক্রিয়া থাকবে। যারা ঋণ খেলাপি তাদের বলা হতে পারে তোমরা অর্ধেক টাকা দিয়ে স্বাভাবিক হও। সরকারের আমানত ৪০ শতাংশ ব্যাংকগুলোতে দেবে বলে আগেই সিদ্ধান্ত রয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, এখন এটা বাড়ানো হবে কি না, আবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে গিয়ে দেখব ৫০ ভাগ করা যায় কি-না।

অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল আরো বলেন, টাকার মান ডলারের বিপরীতে কমানো হবে না।  তিনি বলেন, আমরা প্রয়োজনে ভিন্ন খাতকে প্রণোদনা দেব। বাংলাদেশ আমদানিনির্ভর দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, টাকার মান কমালে আমাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা এত পরিমাণ অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করেছি, এখন অবকাঠামোতে বিনিয়োগে আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আশা করছি। কারেন্সি ডিভাল্যু করা হলে এ খাতে বিনিয়োগ আসবে না। সবাই চেয়েছিল যে আমাদের কারেন্সি ডিভাল্যুয়েশন (টাকার মান ডলারের বিপরীতে কমানো) করা হোক। তাদের যুক্তি ছিল কারেন্সি ডিভাল্যুয়েশন হলে রপ্তানি বাণিজ্য থেকে শুরু করে রেমিট্যান্স অনেক বাড়বে। কিন্তু আমরা বলেছি অন্য যেসব দেশ কারেন্সি ডিভাল্যুয়েশন করেছে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে চাই না। তিনি বলেন, আমরা আমাদের স্পেসিফিক কিছু খাতে প্রণোদনা দেব। তাহলে ওই খাতগুলো বেগবান হবে। তেমনি রপ্তানি বাণিজ্য বাড়াতে আমরা তৈরি পোশাক খাতকে প্রণোদনা দিয়েছি। আরো দিতে হলে দেব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads