• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

বলিউড

শহীদ-অক্ষয়-ঋত্বিক-সালমানের দখলে বলিউড

  • সালেহীন বাবু
  • প্রকাশিত ০১ জানুয়ারি ২০২০

বক্স অফিস বলিউডে ছিল এবার পরিবর্তনের হাওয়া। সব সময় বড় বাজেটের ছবিই যে হিট হবে-এমন ধারণা এবার ভুল প্রমাণ হয়েছে বলিউডে। ‘উরি- দ্য সার্জিকার স্ট্রাইক’-এর মতো কম বাজেটের ছবি বক্স অফিসে মাত করেছে। এমনকি পেয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ছবিটি ব্যবসা করেছে ২৪৫.৩৬ কোটি রুপি।  ‘আর্টিকেল-১৫’, ‘বাদলা’ ও ‘লুকা চুপি’র মতো ছবিগুলোও বড় বাজেটের ছবির সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে সমানতালে।

এ বছর খানদের রাজত্বে ভাটা পড়েছিল । তাদের বদলে এবার আলোচনায় ছিলেন ঋত্বিক রোশন, অক্ষয় কুমার,  শহীদ কাপুর ও সালমান খান। তাদের জন্য এ বছরটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বলিউডের ক্রেজ ঋত্বিক রোশন ‘সুপার ৩০’ ও ‘ওয়ার’ দিয়ে বক্স অফিসে আগুন জ্বালিয়েছিলেন টাইগার শ্রফের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। ওয়ার ছবিটি ৩১৭.৯১ কোটি রুপি ব্যবসা করে। বায়োগ্রাফিকার ড্রামাভিত্তিক ‘সুপার থার্টি’ ছবিটির বক্স অফিসে আয় হয় ১৪৬ কোটি টাকা। ছবিতে ভিন্ন লুকে দেখা যায় হূত্বিক রোশনকে। এতে অভিনয় করতে দেখা যায় মৃণাল ঠাকুর ও অমিত সাধকে।

২০১৯ দর্শক দরবারে ও সমালোচকদের কলমের বিচারে বাছাই করা ৫ ছবির মধ্যে ২০০ কোটির বেশি আয় করে কবির সিং ২৭৮.২৪ কোটি। শহীদ কাপুরদের জন্য বলা যায় এ বছরটি স্মরণীয়। শহীদ কাপুর ‘কবির সিং’-এ ক্রেজি প্রেমিকের অভিনয় করে মাত করেছেন। কয়েক বছর ধরে শহীদ কাপুর অভিনয়ে তার মুনশিয়ানা দেখাচ্ছেন। বলিউড এ তারকা জানান, জীবনে কখনো মদ পান করেননি তিনি। কিন্তু যে দুটো ছবির জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত, সেখানে তাকে দেখা গেছে তুমুল মাতাল চরিত্রে। এ বিবেচনায়  শহীদ কাপুর যে চরিত্র একবার করেছেন, সেই একই ধরনের চরিত্রের দিকে তিনি আর ফিরেও তাকাননি।

অক্ষয় কুমার দিয়েছেন তিনটি হিট ছবি। কেসারি, মিশন মঙ্গল ও হাউজফুল-৪। নাচ-গান কিংবা মসলাদার অথবা যৌনতা নয়, কেবলমাত্র ভিন্ন ধারার গল্পের কারণেই দর্শকের মন জয় করেছে ‘মিশন মঙ্গল’ ছবিটি। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়িক দিক থেকেও বছরের ব্যবসাসফল ছবি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছ ‘মিশন মঙ্গল’। বিষয়টি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত ছবির নির্মাতা ও কলাকুশলীরা। ব্যবসায়িক দিকের পাশাপাশি দর্শক ও সমালোচকের বিচারেও ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে তারকাবহুল এ ছবিটি। ছবিতে আরো অভিনয় করেছেন তাপসী পান্নু, বিদ্যা বালান, কৃতি কুলহারি, সোনাক্ষী সিনহা, শরমন জোশী। ছবিটি পরিচালনা করেছেন জগন শক্তি। ছবিটি আয় করেছে ২০২.৯৮ কোটি। অক্ষয় অভিনীত ‘গুড নিউজ’ও ভালো ওপেনিং পেয়েছে।

সালমানের মতো বড় তারকাদের ছবিও বক্স অফিসে দাপট দেখিয়েছে। সালমানের ‘ভারত’ ভালোই ব্যবসা করে। ছবিটি ব্যবসা করে ২১১.০৭ কোটি রুপি। আর বছরের একদম শেষ দিকে মুক্তি পাওয়া ‘দাবাং থ্রি’ ইতোমধ্যে ১০০ কোটি রুপির ঘর পরিয়েছে।

১৩৯ কোটি টাকার ব্যবসা করে আয়ুষ্মানের ‘ড্রিম গার্ল’। মানুষ আজ খুবই একা, যার সঙ্গে আলাদা করে সময় কাটানোর কিংবা কথা বলার লোকের অভাব। তাই তারা ভরসা করছেন কোনো কল সেন্টারের বিশেষ বন্ধুর ওপর। এই বিষয় নিয়ে সিনেমা বানিয়েছিলেন পরিচালক রাজ সান্ধালিয়া। এই সিনেমাতে আয়ুষ্মানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন নুসরত ভারুচা।

রণবীর সিং ও আলিয়া ভাটের ‘গলি বয়’ প্রমাণ করেছে ছবির বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন তা যদি সুনির্মিত হয়, তাহলে তা দর্শক গ্রহণ করবেই। ছবিটি বক্স অফিসে আয় করেছে ১৪০ কোটি রুপির বেশি। সামাজিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বানানো ‘আর্টিকেল ১৫’, ‘ড্রিম গার্ল’ ও ‘ছিচোর’ বক্স অফিস থেকে তুলে নিয়েছে সাড়ে ৬৫ কোটি, ১৪২ কোটি ও ১৫৩ কোটি রুপি।

শক্তিশালী নারী চরিত্রের কাহিনিগুলোও পেয়েছে দর্শকদের ভালোবাসা। সোনাক্ষী সিনহা, তাপসী পান্নু ও ভূমি পেডনেকার ভেঙেছেন নিজের ‘স্টোরিওটাইপ’ থেকে ‘খানদান্দি সাফাখানা’, ‘সান্দ কি আঁখ দিয়ে’। রানী মুখার্জীও নিজেকে ভেঙেছেন ‘মারদানি টু’তে। তাকে দেখা গেছে একজন পুলিশ অফিসারে ভূমিকায়।

২০১৯-এর বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বক্স অফিস বিশেষজ্ঞ তারান আদর্শ বলেন, ‘আমি সব সময় বলে এসেছি বক্স অফিস আনপ্রেডিকটেবল, আর এটাই এর বড় সৌন্দর্য। আপনি কখনোই জানবেন না কোনটা ক্লিক করবে কোনটা করবে না।’

হলিউডের পর বলিউডে ‘মি টু’ অভিযান শুরু হয় ২০১৮। বলিউড অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত প্রথম যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেন বলিউডের প্রভাবশালী অভিনেতা নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে। এরপর একে একে নামজাদা চিত্র পরিচালক, সংগীত পরিচালক ও অভিনেতারা এই অভিযোগে অভিযুক্ত হতে থাকেন। প্রবীণ অভিনেতা অলোক নাথ, চিত্রপরিচালক বিকাশ বহেল, সুভাষ ঘাই, অভিনেতা রজত কাপুর, সংগীত পরিচালক আনু মালিক, সংগীতশিল্পী কৈলাশ খের, অভিজিৎ ভট্টাচার্য, পরিচালক সাজিদ খানসহ অনেকেই এর আঁচে সটকে পড়েন বলিউডের মূল ধারা থেকে। এ নাটক চলতে থাকে সারা বছরজুড়েই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads