• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
৫০ হাজার কোটি টাকার তহবিল চায় রিহ্যাব

রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে রিহ্যাব ও সেন্টার ফর কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের (সিসিএন) যৌথ আয়োজনে সিমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বাজেট

৫০ হাজার কোটি টাকার তহবিল চায় রিহ্যাব

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ জুন ২০১৮

শিল্প ও বিনিয়োগ ঋণে সুদের হার এক অঙ্কের ঘরে নেমে আসায় আবাসন খাতে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তবে আবাসন খাতে এ স্বস্তিকর পরিবেশের স্থায়িত্ব ছিল হাতেগোনা মাত্র কয়েক মাস। তারল্য সঙ্কটের কারণে সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় খাতটিতে মন্দা ত্বরান্বিত হচ্ছে। এ অবস্থায় আবাসন খাতে গ্রাহক ধরে রাখতে কম সুদে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে ৫০ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করার দাবি জানিয়েছে এ খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। জাতীয় অর্থনীতিতে আবাসন খাতের অবদান নিয়ে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব বিষয় উঠে এসেছে।

রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে রিহ্যাব ও সেন্টার ফর কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের (সিসিএন) যৌথ আয়োজনে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বক্তব্য দেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যন্ড অ্যাসোসিয়েশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন, সিনিয়র সহসভাপতি নুরুন্নবী চৌধুরী (শাওন), সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ, রাজউকের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী এমদাদুল হক, রি রোলিং মিল অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।

গোলটেবিলে আবাসন খাতে নিবন্ধন হার ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে আবাসন খাতে সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা গতিশীল করতে দ্বিতীয়বার ফ্ল্যাট ক্রয়ে নিবন্ধন ব্যয় কমানোরও দাবি জানানো হয়। এসব দাবি পূরণে গৃহায়নমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে আবাসন খাতের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। এ খাতের সঙ্গে অনেকগুলো খাতের ব্যবসা জড়িত আছে। আর বাসস্থান মানুষের মৌলিক অধিকার। সরকার এ অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট। এই খাতে ১৫ শতাংশ নিবন্ধন ব্যয় থাকতে পারে না। এই খাত চাঙ্গা থাকলে লিঙ্কেজ শিল্প আরো বিকশিত হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

দেশের ব্যাংকিং খাত ক্ষতিগ্রস্ত হলে উন্নয়ন কাজে আসবে না বলেও অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে, যত্নশীল হতে হবে। সতর্কতার সঙ্গে ব্যাংক খাত নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গ্রাহক ব্যাংকে চেকের পরিমাণ টাকা না পেলে সেটা সমস্যা। ইসলামী ব্যাংকেও এখন টাকা পাওয়া মুশকিল। গ্রাহককে সেখানেও চেক জমা দিয়ে বসে থাকতে হয়।

অপ্রদর্শিত অর্থ সঠিক পদ্ধতিতে প্রদর্শনের সুযোগ জাতীয় বাজেটে রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, হঠাৎ করে এটা বন্ধ করা ঠিক হবে না। একে আমি কালো টাকা বলব না। কারণ কোনো কারণে গ্রাহক হয়তো এ টাকার কথা জানেননি। যখন জেনেছেন তখন তিনি সেটা প্রদর্শনের সুযোগ পেতে পারেন। সেটা যথাযথ নিয়মে হবে।

রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, বাজেটে বিভিন্ন খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকলেও আবাসন খাতে ক্রেতাদের জন্য সরকারি কোনো তহবিল নেই। ১৪ থেকে ১৬ শতাংশের উচ্চ নিবন্ধন কমিয়ে ৭ শতাংশ করার দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা গতিশীল করতে দ্বিতীয়বার ফ্ল্যাট ক্রয়ে নিবন্ধন ব্যয় কমানোর দাবি জানান রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট।

নুরুন্নবী চৌধুরী (শাওন) বলেন, গৃহায়ন খাতে ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামার পর সম্প্রতি আবার তা ডাবল ডিজিটে চলে গেছে। ফলে এই খাত একটু ঘুরে দাঁড়ানোর পর আবার স্থবিরতার দিকে যাচ্ছে। আবাসন খাতকে গুরুত্ব দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে ৫০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের দাবি জানান তিনি।

শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বলেন, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি বৈঠকে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এটা সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে হবে।’ এ অবস্থায় ব্যাংকের সুদের হার কমানোর দাবি জানান তিনি। এফবিসিসিআই সভাপতি আরো বলেন, নির্মাণ খাতের বেশ কিছু সামগ্রী বিশেষ করে সিমেন্টের দাম এখনো বেশি। আবাসন খাতের সম্ভাবনা ধরে রাখতে নির্মাণ সামগ্রীর ব্যয় কমাতে হবে।

সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ব্যাংকে এখন লুটপাট হচ্ছে। আগে ব্যাংকের মালিক ছিল জনগণ। এখন উদ্যোক্তারাই মালিক। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে তিনি বলেন, রাজউক আরেক দুর্ভোগের নাম। ঘুষ দিতে পারলে ১৫ দিনে প্ল্যান পাস হয়। আর না দিতে পারলে এটা নেই, সেটা নেই বলে ১০ বছর লাগবে।

এমদাদুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখছি ফ্লাইওভারেও এখন বৃষ্টির পানি জমে থাকে। এটা পরিকল্পনার সমস্যা। এত বড় দায়িত্ব রাজউকের একার পক্ষে পালন করা সম্ভব নয়। এর জন্য আলাদা ক্ষমতা দিয়ে একটা ডিপার্টমেন্ট করতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads