• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
বাজেটে বসছে না নতুন কর

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত

সংরক্ষিত ছবি

বাজেট

অর্থমন্ত্রীর আশ্বাস

বাজেটে বসছে না নতুন কর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ জুন ২০১৮

আসন্ন বাজেটে নতুন কোনো কর বসবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তার ভাষায়, এটাই জনগণের জন্য সুখবর। আগামী বাজেটে ব্যক্তিগত করের আয়সীমাও অপরিবর্তিত থাকবে। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বাজেটে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে করপোরেট কর হারে তেমন কোনো পরিবর্তন থাকছে না। মোবাইল অপারেটর ও তামাক কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে করপোরেট কর ৪৫ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে। এ ছাড়া ব্যাংকসহ তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ থাকবে। তবে এসব ছাড় থাকলেও এটিকে নির্বাচনী বাজেট বলতে নারাজ মন্ত্রী। তার মতে, সব বাজেটই দেওয়া হয় মানুষের তুষ্টির জন্য। মন্ত্রী জানান, আগামী বাজেটে ভ্যাটের স্তর হবে পাঁচটি। আর ভ্যাটের সর্বোচ্চ হার হবে ১৫ শতাংশ। তবে ভবিষ্যতে ভ্যাটের স্তর তিনটা করা হবে।

এবারের বাজেটে কোনো সুখবর থাকছে কি না- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। এবারো বাড়বে না। আর এবারের বাজেটে নতুন করে কোনো কর আরোপ করা হবে না।

কর না বাড়লে রাজস্ব বাড়বে কীভাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজস্ব আহরণকারী সংস্থা এনবিআরের লোকজনের মন মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। একই সঙ্গে আইনেও জটিলতা কমানো হয়েছে। তাই বেশি সংখ্যক মানুষ আয়কর দিচ্ছে। এ খাত থেকেই রাজস্ব বাড়বে।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিলাম আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা হবে ১৫-২৫ লাখ। কিন্তু সেটা ইতোমধ্যে ৩৩ লাখ ছাড়িয়েছে। আরো ভালো দিক হচ্ছে, নতুন করদাতাদের অধিকাংশই ইয়াং।

মুহিত বলেন, ট্যাক্স অফিসের সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ২০০টি উপজেলা পর্যায়ে ট্যাক্স অফিস রয়েছে। আগামীতে প্রতিটি উপজেলায় হবে। এটা বাস্তবায়ন করতে হয়তো দু-তিন বছর সময় লাগবে। আর আয়কর ঘন ঘন পরিবর্তন করার পক্ষে নন অর্থমন্ত্রী। ভ্যাটের স্তর ৫টিতে নামিয়ে আনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১২ ভ্যাট আইন অনুযায়ী আমাদের কমিন্টমেন্ট ছিল স্তর একটি করার। কিন্তু সেটা আমরা পারিনি। আগামী বাজেটে ভ্যাটের স্তর ৯টি থেকে ৫টিতে নামিয়ে আনব। তবে আমাদের মূল টার্গেট হচ্ছে তিন স্তরে নামিয়ে আনা। ভ্যাটের সর্বোচ্চ হার ১৫ শতাংশই থাকবে। নিচেরগুলো পরিবর্তন করা হবে।

তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয় সব থেকে বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে ভ্যাট থেকে। আগামী বছরেও তাই থাকবে। আর দ্বিতীয় অবস্থানে আয়করকে রাখা হয়েছে।

বাজেটের আকার সম্পর্কে তিনি বলেন, আকার এখনই বলা সম্ভব নয়। আরো দু-একদিন পর এটা চূড়ান্ত হবে। তবে এটা ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার আশপাশে থাকবে। আগামী বাজেটে কোন খাতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এনার্জি খাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। সে সঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও যোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

ব্যাংকিং কমিশন এ বাজেটেই করা হবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সর্বশেষ ২০০৪ সালে ব্যাংকিং কমিশন করা হয়েছিল। এরপর আর করা সম্ভব হয়নি। এবার একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা জুনের মধ্যেই হবে। তবে বাজেটে একটা রূপরেখা থাকবে। বাজেটে সার্বজনীন পেনশনেরও একটা রূপরেখা দেওয়া হবে। তবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তেমন কোনো সুখবর থাকবে না।

তিনি বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের নিম্নমুখিতা অর্থনীতির জন্য খুবই খারাপ। এটা অনেক জায়গা থেকেও বলা হচ্ছে। সরকার চেষ্টা করছে কীভাবে এটাকে বাড়ানো যায়।

তিনি জানান, কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে নতুন কোনো সুযোগ থাকছে না। আর বাজেটের পর সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ছাড়া বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য ৪০০ কোটি টাকার মতো বরাদ্দ থাকছে।

এটাই আপনার শেষ বাজেট কি না- উত্তরে তিনি বলেন, ইয়েস আমি এটাই শেষ বাজেট দিচ্ছি। এরপর অবসরে চলে যাবে। তবে দল যদি চায় তাহলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও হতে পারে।

এদিকে অর্থমন্ত্রীর দফতর থেকে বাজেট প্রস্তাবনা ২০১৮-১৯ শীর্ষক একটি বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এবারের বাজেটের শিরোনাম ‘সমৃদ্ধ আগামীর অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ যা ৭ জুন বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উপস্থাপন করবেন। আগেরবারের মতো এবারো ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বাজেট উপস্থাপন করা হবে। অনলাইনে  www.bangladesh.gov.bd, www.nbr-bd.org, www.pIancomm.govt. www. bdpressinform.portal.gov.bd বাজেট ডকুমেন্ট সরাসরি ডাউনলোড করা যাবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads