• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
একনেকে ৯ প্রকল্প অনুমোদন

একনেকে ৯ প্রকল্প অনুমোদন

ছবি : সংগৃহীত

বাজেট

একনেকে ৯ প্রকল্প অনুমোদন

# ব্যয় হবে ১৬ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা # রেলের সক্ষমতা বাড়ানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ জানুয়ারি ২০১৯

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বিদ্যুতের ৫ হাজার ২৩৪ কিলোমিটার নতুন লাইন নির্মাণ করা হবে। সংস্কার হবে আরো ৩ হাজার ১৫০ কিলোমিটার বিতরণ লাইন। এর মাধ্যমে সোয়া চার লাখ নতুন গ্রাহক বিদ্যুৎ পাবেন। এ লক্ষ্যে ২ হাজার ২১৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয় ধরে দুটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পল্লীবিদ্যুতের ১৫ লাখ নতুন গ্রাহক সৃষ্টির চলমান প্রকল্প সংশোধনের ফলে আরো সাড়ে চার লাখ গ্রাহক নতুন সংযোগ পাবেন। সৈয়দপুরে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হবে ১৫০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) গতকাল মঙ্গলবারের সভায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণের চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভূমি ব্যবহারে একটি জাতীয় নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রেল, নৌ-বিমান নিয়ে একটি সমন্বিত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক তৈরিরও তাগিদ দিয়েছেন তিনি। রেলওয়ের সক্ষমতা বাড়ানোরও নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

একনেকের বিকল্প চেয়ারপারসন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ সভায় অংশ নেন।

সভা শেষে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি জানান, ১৬ হাজার ৪৩৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ের মোট ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এর মধ্যে পাঁচটি প্রকল্প সম্পূর্ণ নতুন। ব্যয় ও মেয়াদ বাড়িয়ে সংশোধন করা হয়েছে অপর চারটি প্রকল্প। বাস্তবায়ন ব্যয়ের ১৩ হাজার ৬২০ কোটি ২৭ লাখ টাকা দেওয়া হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। ২৮৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা নিজেদের তহবিল থেকে ব্যয় করবে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো। অবশিষ্ট ২ হাজর ৫২৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বিদেশি সহায়তা হিসেবে সংগ্রহ করা হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ভূমি ব্যবহারে একটি জাতীয় নীতিমালা তৈরি করতে বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নীতিমালায় শিল্প, কৃষিকাজ ও আবাসনের জন্য জমি চিহ্নিত করা হবে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরি করে তা উপস্থাপনের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এমএ মান্নান আরো জানান, ভবিষ্যতে মিটার গেজ রেললাইনকে ব্রডগেজে রূপান্তরের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যেসব যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হয় তা দেশেই উৎপাদনের লক্ষ্যে রেলের সক্ষমতা বাড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে রেল, নৌ ও বিমান নিয়ে একটি সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলারও নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ২৮৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরে ক্সবাজারের লিংক রোড-লাবনী মোড় সড়ক (এন-১১০) চার লেনে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এ প্রকল্পের শতভাগ অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এর কাজ শেষ করার সময়সীমা রয়েছে। একই মন্ত্রণালয়ের আরিচা (বরঙ্গাইল)-ঘিওর-দৌলতপুর-টাঙ্গাইল সড়কের ৬ষ্ঠ কিলোমিটারে ১০৩ দশমিক ৪৩ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কানেকটিভিটি শক্তিশালীকরণে সুইচিং ও ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। আগামী বছরের জুনের মধ্যে এর কাজ শেষ করবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)।

বিদ্যুৎ বিভাগের চার প্রকল্পের মধ্যে সৈয়দপুর ১৫০ মেগাওয়াট সিম্পল সাইকেল (এইচএসডি ভিত্তিক) বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১ হাজার কোটি ৯৯ লাখ টাকা। রংপুর বিভাগ বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ও উপকেন্দ্র সম্প্রসারণ এবং পুনর্বাসন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১২৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ১ হাজার ৯১ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয় ধরে প্রস্তাবিত রাজশাহী বিভাগ বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ও উপকেন্দ্র সম্প্র্রসারণ এবং পুনর্বাসন শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পল্লীবিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সৃষ্টির প্রকল্পটি সংশোধন করে ১৯ লাখ ৫০ হাজার নতুন গ্রাহক সৃষ্টি করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৬৯০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

এর বাইরে রেলওয়ের জন্য ৭০টি মিটারগেজ (এমজি) ডিজেল ইলেকট্রিক (ডিই) লোকোমোটিভ সংগ্রহ প্রকল্পের সংশোধনী অনুমোদন করা হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬৫৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানকল্পে ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড স্থাপন প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে একনেক। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩২০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুনে নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও সংশোধনীতে দুই বছর বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads