• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
অতীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরিকল্পিত উন্নয়ন হয়েছে: ঢাবি উপাচার্য

ফাইল ছবি

ক্যাম্পাস

মুজিববর্ষের উপহার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান

  • ঢাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৫ জুলাই ২০২০

'শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়' উপলক্ষে বছরব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের অংশ হিসেবে 'ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন' আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক জনাব আখতারুজ্জামান বলেছেন, ''শতবর্ষী বিশ্ববিদ্যালয়টি যেভাবে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেভাবে আমরা এগিয়ে যেতে পারিনি। এর মূল কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারণ ঘটেছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। অতীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরিকল্পিত উন্নয়ন হয়েছে।''

তিনি আরও বলেছেন, ''মন চেয়েছে আমরা বিভাগ খুলেছি, ছাত্র বাড়িয়েছি, যেখানে খুশি ভবন নির্মাণ করেছি। ক্লাসরুমের ধারণক্ষমতার কথা ভাবিনি, হলের আবাসনের কথাও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন, চিকিৎসাসেবা সবকিছুতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক বেড়েছে। ১০০ বছর আমরা পার করেছি কোনো মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াই।"

বৈজ্ঞানিক মাস্টারপ্ল্যান তৈরি, এটার সুফল সম্পর্কে কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মাস্টারপ্ল্যান বা মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। এক বছর ধরে এটির কাজ চলছে। বর্তমানে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মুজিববর্ষের বড় উপহার এই মাস্টারপ্ল্যান, এটি তৈরি হয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব উন্নয়ন পরিকল্পিতভাবে করা হবে।"

ঢাবি উপাচার্য আরও বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় প্যারামিটার অ্যালামনাইরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবের ও গর্বের অংশ। জাতির মহৎ অর্জনে, জাতিসত্তার বিকাশে বিশ্বের এক নম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেতে পারে।"

ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব রঞ্জন কর্মকারের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া।

সভাপতির বক্তব্যে এ. কে. আজাদ বলেন, "অতীতে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এখন ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিংয়ে কোনো কোনো ম্যাগাজিনের মতে ১০০ এর মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয় আছে, কোনো কোনোটির মতে তাও নেই। শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের সেই গৌরব ও ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে।"

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আজাদ চৌধুরী বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসম্মান, কৃতিত্বের অংশীদার ছাত্র-শিক্ষক-অ্যালামনাই সবাই। আমি উপাচার্যের দায়িত্ব পালনকালে এশিয়া উইকের র‌্যাংকিংয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক নম্বরে এসেছিল। বর্তমানেও র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে যেতে যা দরকার তা করতে হবে। শিক্ষকদের উৎকর্ষ ও গবেষণার মান বাড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ অর্থ খরচ হয় বেতন-ভাতা খাতে। গবেষণার জন্য ১০ শতাংশের বেশি টাকা থাকে না। এটি বাড়াতে হবে। আমরা থেমে নেই, তবে সব বিশ্ববিদ্যালয় যখন দৌড়ায় তখন আমরা হেঁটে চললে পিছিয়েই পড়ব।" 

প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, "গবেষণা ও প্রকাশনার মান বাড়িয়ে ঐতিহ্যের এ বিশ্ববিদ্যালয়কে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে হবে।" তিনি বলেন, "একটা মাস্টারপ্ল্যান দরকার, আগামী ৫০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা কেমন দেখতে চাই তার উপরে।"

ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি রকিব উদ্দিন আহমদ বলেন, "আমি এ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে হতাশ নই। বঙ্গবন্ধু এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কৃতিত্ব ও অর্জন বিরল, অসামান্য।"

গতকাল শনিবার (০৪ জুলাই) ‘শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক এই ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনা সভার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শতবর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে তিনটি উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসাসিয়েশন (ডুয়া)। উদ্যোগ তিনটি হলো, ১০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির লেখা সংবলিত একটি প্রকাশনা, ১০০টি ছবি সংগ্রহ, প্রদর্শনী ও প্রকাশনা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য সংবলিত একটি ই-আর্কাইভের কার্যক্রম চালু করার ঘোষনা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র-ছাত্রীদের এই সংগঠনটি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads