• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

হাস্যরস

আলবার্ট আইনস্টাইনের জীবনের কিছু মজার ঘটনা

  • ফিচার ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২০ মে ২০১৮

                                                 

আলবার্ট আইনস্টাইন (মার্চ ১৪, ১৮৭৯ - এপ্রিল ১৮, ১৯৫৫)
 
আলবার্ট আইনস্টাইন :  তিনি একজন উচ্চ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মানুষ এবং পৃথিবীর সেরা বিজ্ঞানীই নন, আইনস্টাইনের রসবোধ ছিল অত্যন্ত উঁচুমাপের। প্রকৃতির জটিল সব রহস্য নিয়ে যিনি ভাবতে পারেন, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন কখনো সরল সহজ, কখনো তীক্ষ্ণ ব্যাঙ্গাত্মক, কখনো ভীষণ রসিক এবং প্রায় সবসময়ই, প্রচন্ড ভুলোমনা! চলুন জানা যাক তার কিছু মজার ঘটনা।

 

*** আইনস্টাইন একবার ট্রেনে চড়ে যাচ্ছেন। টিকিটচেকার এসে টিকিট চাইতে আইনস্টাইন খুঁজে পাচ্ছেন না কোথায় টিকিটটি রেখেছেন। টিকিটচেকার আইনস্টাইনকে চিনতে পেরে বললেন, ‘প্রফেসর, আপনাকে আর খুঁজতে হবে না। আমি জানি আপনি নিশ্চয় টিকিট কেটেছেন।’ ‘না, না, খুঁজতে হবে’, আইনস্টাইন ব্যস্ত হয়ে বললেন, ‘ওটা না পেলে আমি জানব না আমি কোথায় যাচ্ছি!’

 

*** ইংরেজ ফ্রেঞ্চদের সঙ্গে যেমন রেষারেষি, সেই একই রকমের রেষারেষি জার্মানদের সঙ্গেও। জার্মানিতে সে সময় হিটলারের রাজত্ব। নাৎসীদের ইহুদিবিদ্বেষের জন্য আইনস্টাইন পালিয়ে এসেছেন আমেরিকাতে। ইতিমধ্যে তার আপেক্ষিকবাদ তত্ত্ব নিয়ে সারাবিশ্বে তুমুল আলোড়ন শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে জার্মান আর ফ্রান্সের কি মত, সে নিয়ে আইনস্টাইনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দেন, আমার আপেক্ষিকবাদ যদি নির্ভুল প্রমাণিত হয়, তাহলে জার্মানরা দাবি করবে আমি জার্মান, আর ফ্রেঞ্চরা বলবে আমি একজন বিশ্বনাগরিক। কিন্তু ওটা যদি প্রমাণিত হয় ভুল বলে, তাহলে ফ্রেঞ্চরা বলবে আমি জার্মান; আর জার্মানরা বলবে আমি ইহুদি।

 

*** আইনস্টাইনের ‘থিউরি অফ রিলেটিভিটি’ অল্প কয়েকজন বিজ্ঞানীই শুধু বুঝতে পেরেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই আবিষ্কারের ফলেই তার জনপ্রিয়তা সর্বস্তরে পৌঁছে যায়। এক চুরুট কোম্পানি তো তাদের চুরুটের নামই রেখে ফেলে রিলেটিভিটি চুরুট। এ সময় আমেরিকা ভ্রমণের আমন্ত্রণ পেয়ে সস্ত্রীক রওনা হন তিনি। জাহাজ থেকে নামার মুহুর্তেই সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরেন। একজন একেক রকম প্রশ্ন করতে থাকেন। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করে বসেন,আচ্ছা বলুন তো মেয়েরা আপনাকে এত পছন্দ করে কেন? আইনস্টাইন মৃদু হেসে উত্তর দেন, আপনি জানেন কি না জানি না, মেয়েরা সবসময় লেটেস্ট ফ্যাশন পছন্দ করে, আর এ বছরের ফ্যাশন হল ‘থিউরি অফ রিলেটিভিটি’, আমাকেও ওটার অংশ হতে হয়েছে কি না! 

 

*** একবার আইনস্টাইনকে সফলতা লাভের একটি গাণিতিক ফর্মুলা দিতে বলা হল। তিনি বলেছিলেন, X+Y+Z=A, যেখানে X=কাজ, Y=খেলাধুলা আর A=সফলতা। ‘আর মানে Z কী? আবারও জিজ্ঞেস করা হল তাঁকে। তোমার মুখ বন্ধ রাখা, আইনস্টাইনের উত্তর।

 

*** আইনস্টাইনের এক সহকর্মী একদিন তাঁর টেলিফোন নম্বরটা চাইলেন। আইনস্টাইন তখন একটি টেলিফোন বই খুঁজে বের করলেন এবং সেই বই থেকে তাঁর নিজের নম্বরটা খুঁজতে লাগলেন।
সহকর্মী তাকে বললেন, ‘কী ব্যাপার, নিজের টেলিফোন নম্বরটাও মনে নেই আপনার।’
আইনস্টাইন বললেন, ‘না। তার দরকারই বা কী? যেটা আপনি বইতে পাবেন, সে তথ্যটা মুখস্থ করে মস্তিস্ক খরচ করবেন কেন?’

 

*** আইনস্টাইন ছোটবেলায় তুলনামূলকভাবে অনেক দেরিতে কথা বলতে শেখেন। তাঁর বাবা মা এ ব্যাপারে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলেন। একদিন রাতে খাবার টেবিলে বসে সকলে খাচ্ছেন, এমন সময় বালক আইনস্টাইন চিৎকার করে বললেন, 'এই স্যুপটা বড্ড গরম।'
তাঁর বাবা-মা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। ছেলের মুখে প্রথম কথা শুনে বাবা-মা বেশ অবাক হয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আগে তুমি কথা বলো নি কেন?’
উত্তরে আইনস্টাইন বললেন, ‘কারণ এর আগে তো সব ঠিকই ছিল। স্যুপ কখনো গরম ছিল না।’

*** ১৯৩১ সালে কৌতুক অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন আইনস্টাইনকে আমন্ত্রণ জানান তার একটি শো দেখার জন্য। তখন চ্যাপলিনের 'সিটি লাইটস্' সিনেমার প্রদর্শনী চলছিল। শো-এর পরে তারা দুজন শহরের পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন, তখন চ্যাপলিন আইনস্টাইনকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সবাই আমাকে সহজেই বোঝে, এজন্যই আমার এত জনপ্রিয়তা। কিন্তু মানুষ আপনাকে কেন এত পছন্দ করে বুঝলাম না।’
আইনস্টাইন সহাস্যে প্রত্যুত্তরে জানালেন, ‘কেউ আমাকে সহজে বুঝতে পারে না বলেই আমার এই জনপ্রিয়তা’।

 

*** আইনস্টাইনের কাছে একবার আপেক্ষিকতার সহজ ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হলো। উত্তরে আইনস্টাইন বললেন, ‘আপনার হাত একটা জ্বলন্ত চুলার উপর ধরে রাখুন, মনে হবে এক ঘন্টা পার হয়ে গেছে। কিন্তু একজন সুন্দরী মেয়ের পাশে একঘন্টা বসে থাকুন, আপনার কাছে মনে হবে মাত্র এক মিনিট পার হলো...এটাই আপেক্ষিকতা।’ 

 

*** একবার আইনস্টাইন বাইরে থেকে বাসায় ফিরে দরজায় কড়া নাড়লেন। ভেতর থেকে তাঁর স্ত্রী ভাবলেন অন্য কেউ হয়তো আইনস্টাইনকে খুঁজতে এসেছেন, তাই তিনি বেশ বিরক্ত হয়ে চেচিয়ে বললেন, আইনস্টাইন বাড়িতে নেই। ব্যস, চিন্তিত আইনস্টাইন কোনো কথা না বলে উল্টো হাঁটা ধরলেন।

 

*** রেডিও জিনিসটার ব্যাখ্যায় আইনস্টাইন : ‘তুমি টেলিগ্রাফের তার তো দেখেছ। মনে করো, এটা লম্বা, অনেক লম্বা একটা বিড়াল। তুমি নিউইয়র্কে বসে এর লেজে টান দেবে, ওদিকে লস এঞ্জেলেসে এর মাথা মিউ মিউ করে উঠবে। ব্যাপারটা বুঝতে পারছ? বেতার ঠিক এভাবেই কাজ করে। তুমি এদিকে ইশারা দাও, ওদিকে সাড়া পড়ে। পার্থক্য হল বেতারের ক্ষেত্রে বিড়াল বলে কিছু উপস্থিত নেই।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads