• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
নিত্যপণ্যের বাজার হঠাৎ অস্থির

অস্থির হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার

সংগৃহীত ছবি

পণ্যবাজার

নিত্যপণ্যের বাজার হঠাৎ অস্থির

বেড়েছে চাল পেঁয়াজ মাছ ডিমসহ বেশকিছু পণ্যের দাম

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ জুন ২০১৮

ঈদের পর কিছু দিনের ব্যবধানে বাজারে বেশ বেড়েছে ক্রেতার আনাগোনা। আর সেই সুযোগে ব্যবসায়ীরা কারণে-অকারণে বাড়িয়ে দিয়েছে বেশকিছু পণ্যের দাম। এতে আবারো অস্থির হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। এর খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

ঈদের পর এমনিতেই আয়ের সঙ্গে মিলিয়ে চলতে পারছে না সীমিত আয়ের মানুষ। তার ওপর নতুন করে পণ্যের দাম বাড়ায় বেশ বিপাকে দরিদ্রসহ মধ্যবিত্তরা। গতকাল বাজারে খালেদ মিয়া নামের এক গাড়িচালক বলেন, ঈদের পরে গ্রাম থেকে এসে এখন হাত খুব টান। হিসাব করে চলতে হচ্ছে। তারপরও সংসার চালাতে হলে বাজারে আসতেই হয়। কিন্তু পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশ বিপদে পড়তে হচ্ছে। সব হিসাব নিকাশ পাল্টে যাচ্ছে। 

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের আগের তুলনায় বাজারে এখন চাল, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন পদের সবজির দাম বেশ বেড়েছে। সঙ্গে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে মাছ ও ডিমের দাম। প্রতি কেজি বড় মাছ ৫০ থেকে ১০০ টাকা আর ছোট মাছ ২০০ টাকা পর্যন্ত বর্ধিত দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

যদিও বিক্রেতাদের দাবি, ঈদের ছুটি কাটিয়ে রাজধানীতে ফিরেছে সব মানুষ। এতে হঠাৎ চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু মৌসুম শেষ হয়ে আসায় সেই তুলনায় উত্তরবঙ্গ থেকে সবজির সরবরাহ নেই। এখন মানিকগঞ্জ ও নরসিংদীর সবজি দিয়ে সরবরাহ ঠিক রাখা হচ্ছে। কিন্তু সড়কে ঈদের চাপ এখনো বহাল থাকায় পণ্যবাহী ট্রাক ভাড়া বেড়েছে। এসব কারণে বাড়ছে দাম। 

বাজারে সরবরাহ যেমন কমেছে, তেমনি ক্রেতাদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি দাম। সে কারণেই ঈদের আগে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া সবজিগুলো গতকাল বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এ ছাড়া কাঁচামরিচের দাম উঠেছে ১২০ টাকায়। বেড়েছে পেঁয়াজের দামও। ঈদের আগে ৩০ টাকা দরে পেঁয়াজ মিললেও গতকাল ক্রেতাকে পেঁয়াজ কিনতে গুনতে হয়েছে ১০ টাকা বেশি।

রাজধানীর শ্যামবাজারের পাইকাররা বলছেন, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় বিদেশি পেঁয়াজের দাম যেমন বেড়েছে, তেমনি এর প্রভাব দেশি পেঁয়াজেও পড়েছে।

এদিকে বাজেটে চাল আমদানিতে শুল্ক পুনর্বহাল করায় বেড়েছে চালের দাম। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালের দাম ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারে এখন মোটা চাল মানভেদে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা ও চিকন চাল ৫৮ থেকে ৬২ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে।

খিলগাঁও তালতলা বাজারের চাল বিক্রেতারা এনামুল হক জানিয়েছেন, আমদানি চালের শুল্ক ছাড় ও ব্যাংক সুবিধা প্রত্যাহারের পর থেকেই বিভিন্ন মোকামে চালের দাম বাড়ছে। গত বছর বন্যার পর এ পর্যন্ত চালের দাম যেটুকু কমেছিল, তা আমদানি চালের সরবরাহের কারণেই। উচ্চ শুল্কের কারণে এ আমদানি আবার বন্ধ হয়ে গেলে, চালের দাম আবারো আগের মতো অস্থির পরিস্থিতিতে ফিরবে।

চাল সবজির পাশাপাশি অস্থিতিশীল মাছ ও ডিমের দামও। বাজারে ঈদের আগেও চাষের বড় রুই কাতলা বা মৃগেল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হতো। সেসব মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা দরে। আর দেশি বলে বিক্রীত নদ-নদীর বড় মাছের দাম আরো বেশি। একই সঙ্গে বেড়েছে কম দরের পাঙ্গাশ ও সিলভার কার্পের মতো মাছের দামও।

আর ছোট মাছের দাম যেন আকাশছোঁয়া। বাজারে নদ-নদীর ছোট মাছ ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার নিচে মিলছে না। আর চাষের কই, শিং বা টেংরা কিনতে গেলেও গুনতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০০ টাকা। এসব মাছ ঈদের আগেও কেজিতে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল। একইভাবে সরবরাহ ঠিক থাকলেও বেড়েছে ইলিশ মাছের দামও। 

মাছ-মাংসের দামে নাজেহাল দরিদ্ররা অন্য সময় ভরসা করত ডিমের উপর। এখনো সেটাও বিফলে। কারণ চাহিদা বাড়ায় ঈদের পর থেকে রাজধানীর বাজারে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে ডিমের দামও। পাইকারি ও খুচরা উভয় বাজারে প্রতি হালি ডিমে দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত।

বাজারে পাইকারি শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা প্রতি ডজন ডিমের দাম রাখছেন ৮৮ থেকে বাজারভেদে ৯০ টাকা পর্যন্ত। খুচরায় এক হালি ডিমের দাম পড়ছে প্রায় ৩০ টাকা। আর পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে প্রতি হালি ডিম ৩২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads