• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
তবুও বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

সঙ্কট না থাকলেও অদৃশ্য কারণে বাজারে বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম

ছবি: বাংলাদেশের খবর

পণ্যবাজার

উৎপাদন ও আমদানি স্বাভাবিক

তবুও বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

  • নাজমুল হোসাইন
  • প্রকাশিত ২২ জুলাই ২০১৮

দেশে পেঁয়াজের সঙ্কট নেই। তবুও অদৃশ্য কারণে বাজারে বেড়েই চলেছে পণ্যটির দাম। এজন্য খুচরা ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা দুষছেন অসাধু মজুতদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের। আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতার পকেট কাটতেই তারা পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ তাদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) ‘মাঠ ফসলের আবাদি জমির পরিমাণ ও উৎপাদন’ প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) ২৩ লাখ ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের থেকে এক লাখ ১০ হাজার টন বেশি। ওই বছর দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছিল ২১ লাখ ৬০ হাজার টন। যদিও ডিএই এ তথ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) উৎপাদনের মিল নেই। বিবিএসের হিসাবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে ১৮ লাখ ৬৬ হাজার টন। তবে বিবিএসের তথ্যও বলছে দেশে প্রতি বছর বাড়ছে পেঁয়াজের উৎপাদন। কারণ তাদের সর্বশেষ হিসাবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উৎপাদন তার আগের বছরের চেয়ে ১ লাখ ৩১ হাজার টন বেশি দেখানো হয়েছে।

এদিকে দেশে পেঁয়াজ আমদানিও বেড়েছে। গত অর্থবছরে ভারত পেঁয়াজের রফতানি মূল্য বাড়ালেও বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, ওই অর্থবছরে ১০ লাখ ৪১ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে, যা তার আগের বছরের চেয়ে ৩ লাখ ৪০ হাজার টন বেশি।

বিবিএসের হিসাব ধরলেও সব মিলিয়ে সমাপ্ত অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজের জোগান ছিল ২৯ লাখ টন। যদিও পেঁয়াজের এত চাহিদা নেই। সর্বশেষ সরকারের সংস্থা বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের ২০১৫ সালে করা এক প্রতিবেদনে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়টি হিসাবে নিলে এখন দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন। তাই সরবরাহের থেকে মজুত বেশি। এরপরও বাড়ছে পেঁয়াজের দাম।

কারওয়ানবাজারে পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানান, তারা প্রতিদিন শ্যামবাজার থেকে পেঁয়াজ কেনেন। সেখানেই দেশের বড় পেঁয়াজের কারবার। এখন ওই এলাকার আড়তগুলোতে ভারতের পেঁয়াজের সরবরাহ ঠিক থাকলেও দেশি পেঁয়াজের ঘাটতি রয়েছে।

এতে মজুতের কোনো প্রমাণ মেলে কিনা জানতে চাইলে আজাহার নামের এক বিক্রেতা বলেন, দেশি পেঁয়াজ অধিক সময় সংরক্ষণ সম্ভব। ফলে এখন মজুতকারীদের প্রথম পছন্দ দেশি পেঁয়াজ। এ কারণে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। আর প্রতিদিন আড়তে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, শুধু বড় ব্যবসায়ী নয়, ছোট ব্যবসায়ীরাও এখন পেঁয়াজ মজুত করছেন। কারণ দেশি পেঁয়াজ মজুতের এখন উপযুক্ত সময়। এখন পেঁয়াজ মজুত করলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে ভারতের কাঁচা পেঁয়াজ এখন মজুত সম্ভব, কিছু শুকনা পদের পেঁয়াজ মজুত হচ্ছে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।

যদিও এ বিষয়ে শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়ত বণিক সমিতির সভাপতি হাজী মো. সাঈদ বলেন, খুচরা ও ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা অযথা আড়তদারদের দোষারোপ করেন। বাজারে তারাই একে অপরের যোগসাজশে কম দামে আড়ত থেকে পণ্য কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন।

মো. সাঈদ দাবি করেন, শ্যামবাজারে কোনো অতিরিক্ত পেঁয়াজের মজুত নেই। যদি মজুত থাকে তবে তা কৃষকের ঘরে রয়েছে।

সরকারের বাজারদর তদারকি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন আব বাংলাদেশ টিসিবির তথ্য বলছে, গত এক মাসের ব্যবধানে দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশ। আর বছর ব্যবধানে তা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত। গত বছর একই সময়ে দেশে পেঁয়াজের দাম ছিল ২২ থেকে ৩২ টাকা।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads