• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
কৃষিপণ্য রফতানি আয় বেড়েছে ৮০ শতাংশ

প্রতীকী ছবি

পণ্যবাজার

কৃষিপণ্য রফতানি আয় বেড়েছে ৮০ শতাংশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ নভেম্বর ২০১৮

চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রথম চার মাসে দেশের সামগ্রিক রফতানি আয় বেড়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ। তবে এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি এসেছে কৃষিপণ্য রফতানি থেকে। এ সময় কৃষিপণ্য রফতানি আয় হয়েছে ৩৬ কোটি ৬৫ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি।

সম্প্রতি রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত চার মাসে দেশের সামগ্রিক খাতে রফতানি আয় হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩৬৫ কোটি ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া সেটা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি। বিগত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩ হাজার ৬৬৭ কোটি ডলার রফতানি আয় হয়েছিল।

এদিকে আলোচ্য সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতে রফতানি আয় কমেছে ১৯ শতাংশ। এ খাতে আয় দাঁড়িয়েছে ৩৪ কোটি ৫২ লাখ ডলার। একইভাবে পাট ও পাটপণ্য রফতানি আয়ও কমেছে। এ খাতে আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ কম। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের চার মাসে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৩৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। আরো যেসব খাতে প্রবৃদ্ধি কমেছে সেগুলো হলো মাছ, গ্লাস ও জাহাজ।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, তৈরি পোশাক রফতানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি হওয়ার কারণে সামগ্রিক পণ্য রফতানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে এক হাজার ১১৩ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ৯৪৩ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছিল। দেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে।

কৃষিপণ্যের মধ্যে রফতানি আয় বেড়েছে সবজি, শুকনো খাবার, তামাক, ফুল ও অন্য কিছু পণ্যের। আর কমেছে চা, ফল ও মসলাজাতীয় পণ্যের। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয়েছে ৭ কোটি ১১ লাখ ডলারের শুকনো খাবার। এরপর রয়েছে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের সবজি জাতীয় পণ্য।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, বিশ্বের ১২১টি দেশে রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশের এসব কৃষিপণ্য। গত ছয় অর্থবছরে এ খাত থেকে মোট আয় হয়েছে ৩৫৫ কোটি ৬৫ মার্কিন ডলার। প্রতিবছরে এ খাত থেকে রফতানি আয় বাড়ছে। তবে কীভাবে এ খাত থেকে রফতানি আরো বাড়ানো যায় এজন্য সরকারকে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে হবে।

এদিকে ইপিবি সূত্রে আরো জানা যায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরে কৃষিপণ্য রফতানিতে আয় ছিল ৫৩ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এ আয় বেড়ে হয় ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলার হয়। আর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আবার রফতানি আয় কমে দাঁড়ায় ৫৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আয় হয় ৫৫ কোটি ৩১ লাখ ডলার। আর সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ আয় বেড়ে হয় ৬৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

এদিকে সম্প্রতি ইউএসএআইডির অ্যাগ্রিকালচার ভ্যালু চেইনস (এভিসি) প্রকল্পের সহযোগিতায় আয়োজিত এক সেমিনারে জানানো হয়, কৃষিপণ্য আহরণে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের স্বল্পতা, কোল্ডস্টোরেজের অপ্রতুলতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে প্রতিবছর মোট উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ১২ শতাংশ এবং শাকসবজি ও ফলমূলের ২০ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে, যা রফতানি করা গেলে আয় আরো বাড়বে।

খাত সংশ্লিষ্টরা আরো বলছেন, দেশের বাইরে দিন দিন বাড়ছে কৃষিপণ্যের চাহিদা। আর এ চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছে বাংলাদেশ। কৃষিপণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের পর তা রফতানির পরিমাণও বাড়ছে। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলো বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য আমদানি করছে বাংলাদেশ থেকে। শুধু প্রতিবেশী দেশগুলোতেই ১৫০ কোটি ডলারের কৃষিপণ্যের বাজার রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads