• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
৫.৩৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নভেম্বরে

মুদি দোকান

সংগৃহীত ছবি

পণ্যবাজার

এক বছরে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট

৫.৩৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নভেম্বরে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮

সমাপ্ত নভেম্বর মাসে ভোক্তা মূল্যসূচক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৮ পয়েন্টে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরকে ভিত্তি ধরে গত বছরের একই সময়ে মূল্যসূচক ছিল ২৪৪ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট। এ হিসাবে এক বছরে সূচক বেড়েছে শতকরা ১৩ দশমিক ১৫ পয়েন্ট। আর ভোক্তা মূল্যসূচক বৃদ্ধির হার তথা সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে এ চিত্র উঠে এসেছে। গত বছরের একই সময়ের সঙ্গে তুলনা করে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে এ হিসাব করেছে বিবিএস। গত সোমবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. জিয়াউল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য দেলোয়ার বখত, আসিফ-উজ-জামান, শামীমা নার্গিসসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মন্ত্রী জানান, অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর গত বছরের নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ হিসাবে জীবনযাত্রার ব্যয় ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও কমেছে মূল্যস্ফীতির হার। তিনি বলেন, গত অর্থবছরের তুলনায় এ বছর মূল্যস্ফীতি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছে। বাজারে কোনো জিনিসের দাম না বেড়ে উল্টো কমেছে। পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- চাল, ডাল, ডিম ও মসলা জাতীয় পণ্যের দাম গত মাসে কমেছে। তবে পরিধেয় বস্ত্র, বাড়িভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ও চিকিৎসা ব্যয় বেড়েছে। সব কিছুর প্রভাবে গত ১২ মাসে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের বছরের ১২ মাসে গড়ে ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। আগের মাসে এর হার ছিল ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। এ হিসাবে এক মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তবে খাদ্যবহির্ভূত অন্যান্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশে। গত মাসের তুলনায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে বিবিএস। এ সময় খাদ্যের দাম দশমিক ৭৮ শতাংশ কমলেও দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে অন্যান্য পণ্যের দাম।

প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে গ্রামীণ পর্যায়ে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। অক্টোবরে এর হার ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ হিসাবে পল্লী অঞ্চলে গত মাসে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। এ সময়ে পল্লীতে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আগের মাসে এর হার ছিল ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ। একই সময়ে পল্লীতে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ০৬ শতাংশে।

অন্যদিকে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২১ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ।

পরিকল্পনামন্ত্রী ব্রিফিংয়ে বলেন, গত বছর নভেম্বরে ১০০ গ্রাম কাঁচা মরিচের দাম ছিল ১৬ টাকা। এবার একই পণ্যের দাম অর্ধেক। ৮৪ টাকা ৯২ পয়সা থেকে কমে পেঁয়াজের কেজির দাম এখন ৪৮ টাকা। ১১০ টাকা কেজি দরের রসুন পাওয়া যাচ্ছে ১০০ টাকায়। ৫০ টাকা ৩৮ পয়সা কেজি দরের চালের দাম এখন ৪৮ টাকা। এভাবে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম কমেছে।

নির্বাচন সামনে রেখে ডিসেম্বরে পণ্যমূল্য বাড়বে না বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ সময় ঈদ বা নববর্ষের মতো নতুন জামা কাপড় কেউ কেনে না। শুধু চিনির চাহিদা একটু বেড়ে যায়। চাল বেশি করে কেউ খায় না। তাই যে উদ্দেশ্যে টাকা খরচ করার কথা প্রার্থীরা যদি সে উদ্দেশ্যেই খরচ করে তাহলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে না।

প্রসঙ্গত, প্রতি মাসেই শহর ও গ্রাম অঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের পৃথক মূল্যস্ফীতি সূচক তৈরি করে বিবিএস। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থ হলো এক বছরে জীবনযাত্রার ব্যয় একই পরিমাণে বেড়েছে। এক বছর আগে যে পণ্য কিনতে ১০০ টাকা লাগত একই পণ্য কিনতে বর্তমানে ১০৫ টাকা ৩৭ পয়সা লাগবে। আয় না বাড়লে এই পরিমাণ মূল্যের পণ্য কম কিনতে হবে ভোক্তাদের। তবে গত মাসে মজুরি হার ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিবিএস।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads