• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
গরুর মাংস মুরগির দাম বাড়ছেই, সবজিতে স্বস্তি

গরুর মাংস মুরগির দাম বাড়ছেই, সবজিতে স্বস্তি

ছবি : সংগৃহীত

পণ্যবাজার

গরুর মাংস মুরগির দাম বাড়ছেই, সবজিতে স্বস্তি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ মার্চ ২০১৯

রাজধানীর বাজারগুলোয় সব ধরনের মুরগি ও গরুর মাংসের দর বাড়ছেই। এক মাসের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। আর গরুর মাংসের দর সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

ব্রয়লার মুরগির দর বাড়ার প্রভাবে বেড়েছে লাল লেয়ার এবং পাকিস্তানি কক মুরগির দামেও। সেই সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। তবে এক মাস ধরে বেশিরভাগ সবজির দাম অনেকটাই স্থিতিশীল।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, সেগুনবাগিচা, মালিবাগ হাজীপাড়া, যাত্রাবাড়ী, খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র মিলেছে। রামপুরা ও খিলগাঁও অঞ্চলের বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে এ অঞ্চলের বাজারগুলোয় যা বিক্রি হয় ১২০ টাকা ১২৫ টাকায়। অর্থাৎ মাসের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা।

ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি দাম বেড়েছে লাল লেয়ার ও পাকিস্তানি কক মুরগির। লাল লেয়ার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২০৫ টাকা কেজি, যা গত জানুয়ারিতে ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আর জানুয়ারিতে ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকিস্তানি মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা। মুরগির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে সব ধরনের মুরগির দাম বেশ কম ছিল। কিন্তু জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে এসে হঠাৎ করেই মুরগির দাম বাড়তে শুরু করে। এক মাসের ব্যবধানে সব ধরনের মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকার ওপরে। বাজারে মুরগির যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, সে হারে ফার্ম থেকে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণেই হয়তো মুরগির দাম বেড়েছে।

রামপুরা ও খিলগাঁও নয়, রাজধানীর অধিকাংশ অঞ্চলের বাজারে মাস ব্যবধানে মুরগির দাম বেড়েছে। সেগুনবাগিচার বাজারে জানুয়ারিতে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয় ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। একইভাবে এ বাজারে লাল লেয়ার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি, যা গত জানুয়ারিতে ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। আর জানুয়ারিতে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকিস্তানি মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা।

এদিকে গতকাল যাত্রাবাড়ীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৬০ থেকে ৫৮০ টাকায়, যা এর আগের সপ্তাহে ৫০০ থেকে ৫২০ টাকায় মিলেছে।

মাসের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে বেড়েছে ২০ টাকা। আর হালিতে বেড়েছে ৮ টাকা। জানুয়ারি মাসে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়। আর মুদি দোকানে প্রতি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯ থেকে ১০ টাকায়, যা জানুয়ারিতে ছিল ৭ থেকে ৮ টাকা।

হঠাৎ করে মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপাসা-বিবি) সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, উৎপাদন কম হওয়ার কারণে এখন ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে একটি ডিমের দাম ১০ টাকা হওয়া ঠিক না। একটি ডিমের দাম ৭ থেকে ৮ টাকার মধ্যে থাকাই যুক্তিসঙ্গত।

এদিকে মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে মাছের বাজারে। বাজারে এখন সব ধরনের মাছের দাম বেশ চড়া। রুই মাছ বাজারে ২৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি, পাবদা মাছ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।

মাছ-মাংসের দাম চড়া হলেও এক মাস ধরে কিছুটা হলেও স্বস্তি গেছে শাকসবজির দামে।

টমেটো, বেগুন, গাজর, মুলা, শালগম, শিম, নতুন আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পালংশাকসহ প্রায় সব ধরনের শাকসবজি সাধারণ ক্রেতার নাগালের মধ্যেই রয়েছে।

২০ থেকে ৩০ টাকা কেজির মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে বেগুন, শালগম, মুলা, পেঁপে ও শিম। ফুলকপি ১৫ থেকে ২৫ টাকা পিস এবং বাঁধাকপি ২০ থেকে ৩০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। পাকা টমেটো পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি। নতুন আলু ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

স্বস্তি মিলছে পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচেও। দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়।

পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা আঁটি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লাল ও সবুজশাক। লাউশাক পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়।

তবে করলা, ধুন্দুল, লাউ, ঢেঁড়সের দাম বেশ চড়া। করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, লাউ ৫০ থেকে ৭০, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ধুন্দুলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads