• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
বাজারে স্বস্তি ফিরবে কবে

সংগৃহীত ছবি

পণ্যবাজার

বাজারে স্বস্তি ফিরবে কবে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ অক্টোবর ২০১৯

রামপুরা বাজারে ২০ টাকায় এক আঁটি লাউশাক কিনে দ্বিধাদ্বন্দ্বে দাঁড়িয়ে পড়েন এজাহাত উদ্দিন। শেষে শাক বিক্রেতাকেই জিজ্ঞাসা করে বসলেন, এইটুকু শাকে কি পাঁচ জনের একবেলা হবে? উত্তরে বিক্রেতা না সূচক ইঙ্গিত করেই আরেক আঁটি শাক মুড়িয়ে ব্যাগে ভরে দিতে চাইলেন। তবে সম্ভবত দামের কথা চিন্তা করেই সেটা নেননি এজাহাত। সেখানেই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় তার। তিনি জানান, যেভাবে বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে, সেটা তার পরিবারের খরচে খুবই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি কয়েকটি আলাদা আলাদা বাজারের ব্যাগ দেখিয়ে বলেন, এখানে দুই কেজি পেঁয়াজ, এক কেজি করে আদা ও রসুন আছে। তাতেই ৫০০ টাকা শেষ। অপর একটি ব্যাগ উঁচিয়ে বলেন, এখানে সবজি আছে ৫-৬ পদের। কোনো পদের দামই কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৭০ টাকার কম নয়। প্রতিটি পদই আগের চেয়ে কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেশি। সঙ্গে কাঁচামরিচ, শাক আর ডিম কিনে সেখানেও ৫০০ টাকা গেছে।

এজাহাত বলেন, এরপর যদি মাছ কিনি লাগবে ৫০০ টাকা, মাংসে জন্য আরো ৫০০ টাকা। তেল চিনি আটা তো বাকিই থাকল। কিন্তু এই পরিমাণ বাজার দিয়ে এক সপ্তাহের বেশি চলবে না আমার পরিবার। তাহলে মাসে খরচ দাঁড়ায় কত? একবার চিন্তা করে দেখেছেন?

এজাহাতের কথার যৌক্তিকতা পাওয়া যায় রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরেও। মৌসুমের শেষ, বৃষ্টি আর সরবরাহ ঘাটতির অজুহাতে বাজারে যেন দাম বাড়ার মিছিল থামছে না। সবজি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডিমের দর কমেনি। বুধবার থেকে ইলিশ নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে বেড়েছে মাছের দামও। সব মিলিয়ে সব মিলিয়ে রোজায় বাজার দর নিয়ে স্বস্তি নেই নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। তবে এ দাম স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। সাধারণ ক্রেতারা এখন দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭৫-৮০ টাকা, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে কিনতে পারছেন। কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে ক্রেতারা ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে কিনে অভ্যস্ত। এদিকে প্রতি কেজি রসুন ১৪০-১৬০ টাকা ও আদা ১৪০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকা। অন্যদিকে বাজারে ডিমের দাম তেমন কমছে না। ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দর সাধারণত ৯০-১০০ টাকার মধ্যে থাকে।

তবে বাজারে চাল, বাজারে স্বস্তি ফিরবে ডাল, চিনি, ভোজ্যতেল ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে তেমন কোনো হেরফের নেই। কিন্তু বেড়েছে সবজির দাম।

বিক্রেতারা জানান, এখন বেশির ভাগ সবজির দাম আগের চেয়ে কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেশি। এর কারণ বৃষ্টিতে সরবরাহ বিঘ্ন। অন্যদিকে ভরা মৌসুমে বাড়তি মাছের দাম। মাছের বাজারে নদী বা বিলের ভালো কোনো মাছ কিনতে গেলেই কেজিপ্রতি দর ৮০০ টাকার আশপাশে। বড় বেলে, আইড় ও নদীর চিংড়ি কেজিপ্রতি দর ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা হাঁকছেন বিক্রেতারা। বোয়াল, পাবদা, চাষের মাঝারি চিংড়ি, ট্যাংরা, সরপুঁটি ইত্যাদি মাছের কেজিপ্রতি দর ৫০০-৭০০ টাকা। কেজিপ্রতি বড় রুই ও কাতলার দাম ৩২০-৪০০ টাকা। সাধারণ তেলাপিয়া ও চাষের কই মাছের দরও কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেশি। বড় তাজা তেলাপিয়া ২৫০ টাকা কেজির নিচে বিক্রিতে নারাজ বিক্রেতারা। খিলগাঁওয়ের তালতলা বাজারে বিক্রেতা ফরিদ মিয়া বলেন, ইলিশ নেই বলে অন্য মাছে চাপ বেশি। তবে মাছের সরবরাহ ভালো রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে দাম পড়তে পারে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads