• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
মুক্তামণির আশা ছেড়ে দিয়েছে পরিবার

বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামণি

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

মুক্তামণির আশা ছেড়ে দিয়েছে পরিবার

  • সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২০ মে ২০১৮

‘ওর আশা ছেড়ে দিয়েছি আমরা। এখন আল্লাহই ভরসা। মনে হয় পুরো হাতটি পচে গেছে।’ কথাগুলো মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম গাজীর। বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামণির সর্বশেষ অবস্থার ব্যাপারে জানতে গেলে এভাবেই বলেন হতাশ ইব্রাহিম।

তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়ার সময় মুক্তামণির হাতের ব্যান্ডেজ টাইট করে দেওয়া হয়েছিল। এটা খুলে পরিষ্কার করার নিয়মও দেখিয়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এখন দুই দিন পর পর পরিষ্কার না করলে হাত থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। আবার বেশিক্ষণ খুলে রাখলেও হাত অনেক ফুলে যায়।

তিনি আরো বলেন, ডাক্তারদের চেষ্টা আর আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি ছিল না। প্রধানমন্ত্রীও মুক্তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছেন। সবাই আমার মেয়েকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছেন। এতে দুনিয়ার মানুষের আর কোনো হাত নেই।

জানা গেছে, নিয়মিত মুক্তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুক্তার ছবিও দেখছেন তারা। ছবি দেখে হাতের অবস্থা খারাপ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। মুক্তামণির হাত আগের থেকে অনেক ফুলে গেছে। ব্যান্ডেজ খুলে পরিষ্কার করার সময় হাত থেকে বেরিয়ে আসছে বড় বড় পোকা। ইতোমধ্যে একদিন ৩৮টি পোকা বের হয়েছে। তার সুস্থতার বিষয়ে আশা দেখছেন না চিকিৎসকরা। তাদের নির্দেশমতো বন্ধ আছে সব ধরনের ওষুধ সেবন। হাতটি কয়েকগুণ ফুলে যাওয়ায় দুই-এক ঘণ্টা ছাড়া সারা দিনই শুয়ে থাকতে হয় মুক্তামণিকে। দুর্গন্ধ বেড়েছে অনেক বেশি। রোগের বিস্তার এখন হাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বুক, পেট আর পায়েও ছড়িয়ে গেছে।

গত বছর প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার পর মুক্তামণিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুক্তামণির হাত দেখে আঁতকে ওঠেন। একই সঙ্গে হাত অপারেশনে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর ঢামেকের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা দেশেই অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কয়েকদফা অপারেশনও করেন। তবে হাতের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেননি।

দীর্ঘ ছয় মাস চিকিৎসার পর ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর এক মাসের ছুটিতে বাড়িতে যায় মুক্তামণি। পরবর্তীতে সে আর ঢাকায় যেতে আগ্রহ দেখায়নি। একই সঙ্গে অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় নিরুৎসাহী হয়ে পড়ে তার পরিবারও।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads