• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
বিনা দোষে ভারতে খাটলেন ১০ বছরের জেল

খুনের অপবাদ মাথায় নিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ও হয় বাদল ফরাজীর বিরুদ্ধে

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

বিনা দোষে ভারতে খাটলেন ১০ বছরের জেল

দেশে ফিরেও কারাগারে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ জুলাই ২০১৮

গিয়েছিলেন তাজমহল দেখতে। কিন্তু ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কারণে তার স্থান হয় জেলে। খুনের অপবাদ মাথায় নিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ও হয় তার বিরুদ্ধে। অবশেষে কূটনৈতিক তৎপরতায় ১০ বছর জেল খাটার পর দেশে ফিরেছেন বাদল ফরাজী (২৮)।

গতকাল শুক্রবার বিকালে জেট এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে দেশে আনা হয় তাকে। বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া শেষে বাদলকে নেওয়া হয় পুলিশ হেফাজতে। বর্তমানে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন তিনি। আইন অনুযায়ী বাদলের বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের কাছে ১৭ নম্বর ফারুকি রোডের বাসিন্দা আবদুল খালেক ফরাজী ও সারাফালি বেগমের ছেলে বাদল। টিএ ফারুক স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় বাদলের ইচ্ছা হয় তাজমহল দেখার। ২০০৮ সালের ১৩ জুলাই দুপুরে বেনাপোল অভিবাসন কার্যালয়ে সব প্রক্রিয়া শেষে ভারতের হরিদাসপুর সীমান্তে প্রবেশের পরই খুনের অপবাদে বাদলকে আটক করে বিএসএফ। ২০০৮ সালের ৬ মে নয়াদিল্লির অমর কলোনির এক বৃদ্ধা খুনের মামলায় বাদল সিং নামে এক আসামিকে খুঁজছিল ভারতীয় পুলিশ। হিন্দি বা ইংরেজিতে কথা বলতে না পারায় বিএসএফের কর্মকর্তাদের বাদল বোঝাতে পারেননি যে তিনি ওই খুনি নন।

নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট বাদলকে দোষী সাব্যস্ত করে দিল্লির সাকেট আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। দিল্লি হাইকোর্টও নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে। পরে বাদলের স্থান হয় দিল্লির তিহার জেলে। বাদল দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহায়তায় ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। কিন্তু দেশটির সর্বোচ্চ আদালতও বাদলের আবেদন খারিজ করে দেন।

সম্প্রতি ঘটনাটি জানার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সুরক্ষা বিভাগে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এর পর আইন মন্ত্রণালয়, পুলিশের বিশেষ শাখা ও কারা অধিদফতর থেকে মতামত চাওয়া হয়। বাদলের নির্দোষ হওয়ার বিষয়টি জানার পর গত ১৯ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক জরুরি বৈঠক করে তাকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী গত ১৭ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র সচিবকে এক ফ্যাক্স বার্তায় জানান, অনেক দিন ধরে বাদল ফরাজীকে বাংলাদেশে ফেরানোর বিষয়টি ঝুলে আছে। তাই এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। গত ২২ এপ্রিল ভারতে আনুষ্ঠানিক আবেদন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ভারতের সঙ্গে বন্দি বিনিময়ের চুক্তির আওতায় বাদল ফরাজীকে ফিরিয়ে আনা হলো। তবে নাম বিভ্রাটের কারণে ভারতের কারাগার থেকে মুক্তি মিললেও আপাতত দেশে ফিরেও জেলেই থাকতে হচ্ছে বাদলকে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. ইকবাল হাসান জানান, নিয়ম অনুযায়ী আপাতত বাদল ফরাজীকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads