• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
সঙ্কটে নিজেই অসুখে বহুকাল

মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

সঙ্কটে নিজেই অসুখে বহুকাল

  • খান শরাফত হোসেন, মাগুরা
  • প্রকাশিত ০৪ আগস্ট ২০১৮

মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিজেই গভীর অসুস্থতায়। থানা থেকে ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উন্নীত হয় ১৯৮৩ সালে। ১৯৬৭ সালে ৩১ শয্যায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে যাত্রা শুরু করে এটি। উপজেলার ৮ ইউনিয়নের দেড় লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র লক্ষ্যস্থল।

কার্যক্রমের শুরু থেকেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারের লাইটসহ অন্য যন্ত্রপাতি অকেজো। দীর্ঘদিন ধরে অচল এক্সরে মেশিন। অজ্ঞান করা মেশিনটিও নেই, যার কারণে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন করা সম্ভব হয়নি  কোনো সময়েই।

চিকিৎসক সঙ্কটে থাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সারা বছর। যারা আসেন তারা খুব অল্প সময়ে তদবির করে বদলি হয়ে চলে যান মাগুরা সদর হাসপাতালে। উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকদের ২ বছর থাকার কঠোর নির্দেশ আছে।

এখানে তিনজন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কাগজে-কলমে আছেন দুজন, যার একজন কর্মরত অন্যজন মাগুরা সদর হাসপাতালে প্রেষণে। ফলে সেবা চলছে এক চিকিৎসক দিয়ে।

হাসপাতাল সূত্র মতে, এ হাসপাতালে ডেন্টাল ইউনিট নেই অনেক দিন। কাগজপত্রে এ দায়িত্বে একজন থাকলেও তিনি প্রেষণে মানিকগঞ্জ। হাসপাতালটির নিরাপত্তা  প্রহরী ২ জন থাকার কথা থাকলেও নেই, ফলে হাসপাতালটি অরক্ষিত থাকছে রাতদিন। ৫ জন অফিস পিয়ন থাকার কথা থাকলেও আছে ২ জন, জুনিয়র মেকানিক একজন থাকার কথা থাকলেও কেউ নেই। ফলে হাসপাতালের ছোটখাটো যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত দীর্ঘসময়ের ব্যাপার হয়ে যায়।

গুরুত্বপূর্ণ পদে কয়েকজন খাতা কলমে থাকলেও বেশিরভাগ প্রেষণে মাগুরা সদর, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ ও মনিরামপুর হাসপাতালে প্রেষণে।

গয়েশপুর, শ্রীকোল, কাদিরপাড়া, সব্দালপুর, নাকোল উইনিয়নের বাসিন্দা মোসাদ্দেক, হাসিবুল, মিরাজ, মেরিনা বেগম ও খয়ের আলী বলেন- শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী নেওয়ার চেয়ে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া কম ঝুঁকিপূর্ণ, ওই হাসপাতালে যেতে বেহাল সড়ক ব্যবস্থাসহ হাসপাতালে জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসক থাকলেও সেবা দেওয়ার যন্ত্রপাতি নেই ।

উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালটিতে মোট পদ ১২৩ জনের বিপরীতে শূন্য রয়েছে ৪৪টি।

 

সঙ্কটে নিজেই অসুখে বহুকাল অর্থাৎ পদ শূন্য ৪৩%।

হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রইচউদ্দিন বাংলাদেশের খবরকে জানান, গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নষ্ট অনেক দিন ধরে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। জনবল সঙ্কট ও যন্ত্রপাতির সমস্যার কথাও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।

হাসপাতালটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য শূন্য থাকা সুইপার, পরিসংখ্যানবিদ, মেকানিক, হিসাবরক্ষক, নার্স, অফিস পিয়নসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে লোকবল নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।

হাসপাতালে গড়ে ১০০ থেকে ১২০ জন রোগী প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। সবই সাধারণ সর্দি জ্বরের, জটিল অসুস্থরা মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চলে যান অথবা রেফার করে দেন চিকিৎসক। জনবল সঙ্কট, নষ্ট যন্ত্রপাতি, উপজেলা থেকে অনেক দূরে এই মৌলিক সমস্যায় সত্যিকারের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ হচ্ছে না শ্রীপুরবাসীর।            

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads