• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
হাইমচরে শ্রেণিকক্ষ খুলে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা

খোলা আকাশের নীচে সাহেবগঞ্জ এমজে এসকে এস এন এস জুনিয়র হাইস্কুলের শ্রেণীকক্ষ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

হাইমচরে শ্রেণিকক্ষ খুলে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা

  • মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ
  • প্রকাশিত ১৩ আগস্ট ২০১৮

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ৫নম্বর ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ এলাকায় একটি মাধ্যমিক স্কুলের শ্রেণিকক্ষ রাতের আধাঁরে খুলে নিয়েগেছে দূর্বৃত্তরা। যে কারণে, বর্তমানে খোলা আকাশের নীচে পাঠদান করছেন শিক্ষকরা। এতে করে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে প্রায় ৫শতাধিক শিক্ষার্থী। শুক্রবার রাতের আঁধারে ওই এলাকার চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার অনুসারীরা শ্রেণিকক্ষটি খুলে নিয়েছে বলে পরিচালনা কমিটির সদস্য, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অভিযোগ। শনিবার থেকে ওই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীরা এখন উত্তপ্ত রোদ ও বৃষ্টির মধ্যে পাঠগ্রহন করছেন। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়টি পুনঃস্থাপনের জন্য বিক্ষোভ করেন। রোববার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিদ্যালয়টির কার্যক্রম ওই অবস্থায়ই রয়েছে।

বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা জানিয়েছেন, তাদের সাথে কোন ধরনের আলাপ না করেই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সরকারের নির্দেশে তার লোকজন রাতের আঁধারে বিদ্যালয়ের ঘরটি খুলে নিয়ে গেছেন। শিক্ষার্থীদের এই দূর্ভোগের মধ্যে তারা পুনরায় বিদ্যালয়টি স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন। চাঁদপুর জেলাধীন হাইমচর উপজেলার ৫নম্বর হামইচর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার সাহেবগঞ্জ এমজে এসকে এস এন এস জুনিয়র হাইস্কুলের প্রতিদিন অধ্যায়নরত শ্রেণিকক্ষ স্থানীয় চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সরকারের প্ররোচনায় তার লোকজন জোরপৃর্বক পেশিশক্তি প্রদর্শণ করে খুলে নেওয়ার প্রতিবাদে এলাকাবাসি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ারুল আজিম হাইমচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সরোজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর জেলাধীন হাইমচর উপজেলার ৫নম্বর হামইচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শাহাদাত হোসেন সরকার তার এলাকার সাহেবগঞ্জ এম জে এস কে এস এন এস জুনিয়র হাইস্কুলের কমিটির সাথে তার নির্বাচনী প্রতিহিংসা ও দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। ওই এলাকার মোল্লা বংশধরদের সাথে তার নির্বাচনী প্রতিহিংসা চলছিল। তারই জের ধরে এক বছর আগে তিনি গনশিক্ষা কার্যক্রমের এক সময়ের বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ক্লাশরুমটি খুলে নিয়ে যাওয়ার পায়তারা করছিলেন বলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানান। এছাড়া স্কুলটির শ্রেণিকক্ষ খুলে নেওয়ায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদকারীরা জানান, বৃহস্পতিবার স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষ করে বাড়ী চলে যায়। শুক্রবার রাতের আধারে স্থানীয় চেয়ারম্যান শাহাদাত সরকারের নির্দেশে তার পরিষদের মেম্বার শফিকুর রহমান ও হারুন মাল এলাকার কতিপয় সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকদের সাথে নিয়ে এম জে এস কে এস এন এস জুনিয়র হাইস্কুলের ৭ম ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালিত হওয়া ক্লশরুমটির টিন দিয়ে তৈরী করা চালা ও চারদিকের বাউন্ডারি খুলে নিয়ে যায়। এতে করে স্কুলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রমের ও পাঠদান করার টুলটেবিল ও চেয়ার পড়ে থাকে খোলা আকাশের নিচে। বিদ্যালয়ের কমিটির সদস্যরা ঘটনা স্থলে এসে জানতে পারে চেয়ারম্যানের লোকেরা বিদ্যালয়ের টিনসেট ঘরটি খুলে তার বাড়ীর কাছে নিয়ে রেখে দিয়েছে। শনিবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে খোলা আকাশের নিচে টুল টেবিল ও চেয়ার পড়ে থাকতে দেখে বিক্ষোভে পেটে পড়ে এবং এক পর্যায়ে তারা খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে থাকে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে এলাকাবাসি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার ও এ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যাক্তিদের দৃস্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে এবং স্কুলের ক্লাশরুমটি পূনরায় স্থাপনের দাবি জানান। তা নাহলে তারা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে এমজে এসকে এস এনএম জুনিয়ার হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘এ বিদ্যালয়টি ২০০৮ সালে স্থাপিত হয়। গনশিক্ষা অধিদফতরের পক্ষ থেকে এ বিদ্যালয়টির নির্মান কাজ করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে বিদ্যালয়টিতে ক্লাশ চলছে। পূর্বের চেয়ারম্যান ইসহাক খোকন এ বিদ্যালয়টির জন্য এ ভবনটি লিখিতভাবে দিয়ে যায়। এখানে শিক্ষার মান অত্যন্ত ভাল। ১৮ সালে ২৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়। তার মধ্যে ২৫ জন পাস করেন। এর মধ্যে ৪ জন এ প্লাস অর্জন করেছে। জে এসসিতে শত ভাগ পাস।

সাবেক মেম্বার মো: আব্দুল হক জানান, সাবেক চেয়ারম্যান ইসহাক খোকন ২০১৬ সালে বিদ্যালয়টির এ কক্ষটি লিখিতভাবে দিয়েছে। এলাকার শিক্ষার্থীদের ক্লাশ করার প্রয়োজনে। এ কক্ষটি এক সময় গনশিক্ষার কার্য্যক্রম করার জন্য সরকারী অর্থায়নে নির্মান করা হয়েছিল।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads