• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
পর্যটনকেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড়

সিলেটের জাফলং

সংরক্ষিত ছবি

সারা দেশ

পর্যটনকেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড়

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৬ আগস্ট ২০১৮

ঈদের চতুর্থ দিন গতকাল শনিবারও সারা দেশের উল্লেখযোগ্য বিনোদন ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। এর মধ্যে কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত, সিলেটের জাফলং, কুমিল্লার শালবন বিহার, মোংলার সুন্দরবন, সাভারের নন্দন পার্ক এবং গাজীপুরের সাফারি পার্ক হাজার হাজার মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। এছাড়া কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলায় এবারের ঈদের ছুটিতে পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ব্যুরো প্রধান ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

সিলেট : ঈদুল আজহার টানা ছুটিতে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব মিলে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটে এসেছেন সিলেটের জাফলং জিরোপয়েন্টে, জিরোপয়েন্ট ঘেঁষা ভারতীয় ঝুলন্ত ব্রিজ, ফাটাছড়া মায়াবি ঝরনা, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, পান্তুমাইসহ সিলেটের নয়নাভিরাম নান্দনিক পর্যটন স্পটগুলোতে। ঈদের দিন থেকে শুরু করে গতকাল শনিবার পর্যন্ত জাফলং, ফাটাছড়া মায়াবি ঝরনা, বিছনাকান্দি, রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট, পান্তুমাই সর্বত্রই পর্যটকদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। দিগন্ত জোড়া পাহাড়, ছোট-বড় টিলা, পাহাড়ের গায়ে সবুজ লাখ লাখ গাছের সারি, পিয়াইনের বুক চিরে বয়ে চলা প্রবহমান পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ জল, নুড়ি পাথর, চা বাগান, গহীন বন, হিজল করচের অরণ্যঘেরা সবুজ বেষ্টনী, পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা ঝরনা ধারায় গা ভিজিয়ে সেলফিতে নিজেদের আবদ্ধ করেন আগত পর্যটক-দর্শনার্থীরা।

এখানকার সবকটি হোটেল, মোটেলসহ রাতযাপনের কটেজও কানায় কানায় ভরপুর। পর্যটক নিরাপত্তায় গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ সতর্ক রয়েছে।

গোয়াইনঘাটের ইউএনও বিশ্বজিৎ কুমার পাল জানান- জাফলং, ফাটাছড়া মায়াবি ঝরনা, রাতারগুল, বিছনাকান্দিসহ সবকটি পর্যটন স্পটের রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে সরকার আন্তরিক। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সরকার নির্দেশিত সবকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার পথে।

কুমিল্লা : কুমিল্লায় পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ শালবন বিহার, নব শালবন বিহার, ইটাখোলা মুড়া ও নগরীর ধর্মসাগর পাড়। শালবন বিহারে রয়েছে অষ্টম শতকের পুরাকীর্তি। রয়েছে ময়নামতি জাদুঘর। জাদুঘরের পাশে রয়েছে বন বিভাগের পিকনিক স্পট। শালবন বিহারের পাশে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)।

ঈদের ছুটি শেষ হলেও শালবন বৌদ্ধবিহার ও ময়নামতি জাদুঘর এলাকা এখনো সরগরম। এদিকে মহানগরীর ধর্মসাগর পাড়ে আড্ডা দিতে এবং নৌকায় চড়তে মানুষ ভিড় করছেন। নগর উদ্যানেও শিশুসহ অভিভাবকদের ভিড় দেখা গেছে। এ ছাড়া কুমিল্লার সদর দক্ষিণে লালমাই পাহাড়ের শীর্ষ চণ্ডি মন্দির, কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক লাগোয়া রাজেশপুর ফরেস্ট বিট, কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ওয়ার সিমেট্রি। জেলার লাকসাম উপজেলার পশ্চিমগাঁওয়ে ডাকাতিয়া নদীর তীরে নারী জাগরণের পথিকৃৎ নবাব ফয়জুন্নেছার বাড়িতেও দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে।

শালবন বৌদ্ধবিহার ও ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান আহমেদ আবদুল্লাহ জানান, অনুকূল পরিবেশ থাকলে এবার আরো বেশি দর্শনার্থী আসতেন। গত দুই দিনে আয় হয়েছে ২ লক্ষাধিক টাকা।

মোংলা : ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে সুন্দরবনের প্রহরীদের। বন বিভাগ জানিয়েছে, দেশ-বিদেশ থেকে আশা পর্যটকদের এ ভিড় থাকবে আরো কয়েক দিন।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন শুধু দেশের নয়, বিশ্বের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যেও অন্যতম। বিশেষ করে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসব ও ছুটির দিনে দেশি-বিদেশি পর্যটক ছুটে আসেন এখানে। সুন্দরবনের করমজল পর্যটন স্পটটি দূরত্বের দিক দিয়ে সবচেয়ে কাছের ও দর্শনীয় হওয়ায় সাধারণত লোকজনের ভিড় এখানেই বেশি হয়ে থাকে। করমজল পর্যটনকেন্দ্রের ফুট টেইলার, সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার, কৃত্রিমভাবে আটকে রাখা কুমির, হরিণ, খোলা হরিণ ও বানরসহ বিভিন্ন পশু-পাখি এবং গাছপালা দেখে আনন্দ উপভোগ করে থাকেন আগতরা। করমজল ছাড়াও হাড়বাড়িয়া, হিরণ পয়েন্ট, কটকা ও কচিখালী পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেও এবারের ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বিগত সময়ের তুলনায় অনেক বেড়েছে।

করমজল পর্যটনকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের ভিড় বাড়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বল্পসংখ্যক প্রহরীকে। তারপরও সাধ্য অনুযায়ী সেবা ও নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।

সাভার : ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আশুলিয়ায় নন্দন পার্কে ভিড় জমান বিনোদনপ্রেমীরা। ঈদের দিন সকাল থেকেই আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকায় অবস্থিত এ পার্কে ঈদ উৎসব উপভোগ করতে আসতে থাকেন হাজার হাজার মানুষ। এখানে শুধু সবুজের সমারোহ নয়; দূর-দূরান্ত থেকে আসা বিনোদনপ্রেমীদের জন্য রয়েছে নন্দন ভিলেজ। রয়েছে পাঁচটি কটেজ।

ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে চাকরিজীবী মো. আবদুল হাকিম তার ছেলে আরেফীন আবীরকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন নন্দন পার্কে। তিনি বলেন, বাপ-ছেলে খুবই মজা করেছি।

নন্দন পার্কের ডেপুটি ম্যানেজার-মার্কেটিং মো. মেজবাহ উদ্দিন প্রিন্স বলেন, ঈদের দিন থেকে আবহাওয়া খুবই ভালো থাকায় অন্যবারের চেয়ে এ বছর দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি।

গাজীপুর : শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে গতকাল ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। ঈদের ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে সাফারি পার্কে বেড়াতে এসেছেন হাজার হাজার দর্শনার্থী। দেশি-বিদেশি প্রাণী খুব কাছ থেকে দেখে রোমাঞ্চিত হন আগত পর্যটকরা।

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের পরদিন থেকেই দর্শনাথীদের ভিড় শুরু হয়। গতকাল শনিবার ছিল উপচেপড়া ভিড়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছেন পার্কের বিভিন্ন স্পটে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads