• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
উদ্বোধনের দুই দিন আগে ধস

দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর উত্তর অংশের ইচলীতে সংযোগ সড়ক ধসে পড়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

উদ্বোধনের দুই দিন আগে ধস

দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়ক

  • রংপুর ব্যুরো ও লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

উদ্বোধনের দুই দিন আগেই ধসে পড়ল দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ রোড)। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে মূল সেতুর উত্তর অংশের ইচলী এলাকায় একটি সংযোগ সেতুর মুখ ধসে যায়। ভেঙে যায় সংযোগ সড়কও। ফলে রংপুরের সঙ্গে লালমনিরহাটের চারটি উপজেলার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামীকাল রোববার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুর ও লালমনিরহাটের মানুষের জন্য দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু খুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য মূল সেতুতে রঙ করা ছাড়াও ফলক তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিকরা। সেতুতে লাগানো হচ্ছে বাতি। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ ও রংপুরের গঙ্গাচড়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে তিস্তা নদীর ওপর দ্বিতীয় তিস্তা সেতুটি নির্মিত হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মূল সেতুর উত্তর পাশ থেকে কাকিনা পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এখনো খানাখন্দে ভরা। সড়কে একটি ছোট সেতুর মুখসহ ২০০ মিটার ধসে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত এলজিইডির দুই প্রকৌশলীর সহায়তায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারাভাবে কাজ করেছে। প্রকৌশলীরা কাজের সঠিক তদারকি না করেই মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এই সেতু ও সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করেছেন। গত বৃহস্পতিবার সংযোগ সড়কটিতে সুরঙ্গ দেখা দেয় দাবি করে স্থানীয়রা বলেন, বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাভানা কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার প্রবীর কুমার বিশ্বাস নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা সেতুর কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করে এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছি। সেতুটির দুই ধারে ৬২ মিটার করে মোট ১২৪ মিটার সংযোগ সড়কের কাজ আমরা করেছি। বাকি কাজ অন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করেছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে ক্ষেপে যান সংযোগ সড়ক নির্মাণের দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলা প্রকৌশলী পারভেজ নেওয়াজ খান। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি কাজ করেছি। ভেঙে গেছে যা করার করেন, যা লেখার লেখেন।’ পরক্ষণেই তিনি বলেন, এখন আবার নতুন করে রাস্তা তৈরি করছি। বালু ও জিও ব্যাগ ফেলছি।

এদিকে এ অবস্থার জন্য তিস্তা নদীর গতিপথকে দায়ী করেছেন লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জাকিউর রহমান। তিনি বলেন, তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় এমনটা হয়েছে। আমরা সড়কে চলাচল করার দ্রুত ব্যবস্থা করছি। কাজ চলছে।

অপরদিকে উদ্বোধনের আগেই সড়ক ধসে পড়ার খবরে গতকাল ঘটনাস্থলে ছুটে যান রংপুর জেলা প্রশাসকসহ পদস্থ কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক বলেন, কাজে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সড়কটি দ্রুত চলাচল উপযোগী করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, লোকজন নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি দ্রুত সমাধান করতে পারব।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ১৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১২ সালে ৮৫০ মিটার দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া কালীগঞ্জের কাকিনা থেকে গঙ্গাচরার মহিপুর ঘাট পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণে ১৩ কোটি টাকা এবং ওই সংযোগ সড়কে তিনটি কালভার্ট ও দুটি ছোট সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা। চার দফা সময় বাড়িয়ে কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে। জনসাধারণের চলাচলের জন্য সেতুটি আগেই উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল রোববার তা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads