• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
লাল শাপলার রাজ্য

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার উত্তর সাতলা গ্রামে বিলজুড়ে লাল শাপলা ফুলের রাজ্য

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

লাল শাপলার রাজ্য

  • বরিশাল ব্যুরো
  • প্রকাশিত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

শাপলার রাজ্য। লতা-পাতা-গুল্মে ভরা বিলের পানিতে সহস্র লাল শাপলা হার মানিয়েছে সূর্যের আভাকেও। বরিশাল শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের উজিরপুর উপজেলার উত্তর সাতলা গ্রামের বিলে দেখা মেলে চোখজুড়ানো এ দৃশ্যের। প্রকৃতির বুকে আঁকা এ যেন এক নকশিকাঁথা। অপরূপ এ সৌন্দর্যের দেখা মেলে প্রায় ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিজুড়ে এই বিলে। স্থানীয়দের কাছে  পরিচিত শাপলার বিল ও বাগান নামে। আগাছা আর লতা-পাতায়, বিলের অগণিত শাপলা চোখ জুড়ায় পথচারীদের। এ যেন এক শাপলার রাজ্য। ঠিক কবে থেকে শাপলা জন্মাতে শুরু করেছে তা নিয়ে নেই সঠিক কোনো তথ্য। প্রবীণরা বলছেন, জন্মের পর থেকেই এভাবে শাপলা ফুটতে দেখেছেন তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাধারণত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে এ বিলে লাল শাপলা ফুল ফোটে। ফুটন্ত এই লাল শাপলা দু’চোখ ভরে দেখতে জেলার বাইরে থেকে বিভিন্ন বয়সের মানুষ এ বিলে আসতে শুরু করেছে। শিগগির এ বিল দেশের একটি পর্যটনকেন্দ্র হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের। ইতোমধ্যে স্থানীয়রা ওই শাপলা বিলের মধ্যে পর্যটকদের ভোজনবিলাসের জন্য একটি বড় ধরনের রেস্তোরাঁ তৈরি করেছে। ঐতিহ্যবাহী এ শাপলা বিলের চারপাশে গাঢ় সবুজের আবরণ যেন বাংলার এক মুখরিত ‘লাল স্বর্গ’। দূর থেকে সবুজের মধ্যে লাল রঙ দেখে দুরূহ হয়ে ওঠার মতো অবস্থা। কাছে এলে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ফুলের অস্তিত্ব।

নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ফুটে থাকা লাল শাপলা দেখে সত্যিই চোখ জুড়িয়ে যায়। মনোমুগ্ধকর সাতলা বিলের শাপলা দেখতে প্রতিদিন আসছে প্রকৃতিপ্রেমীরা। এ লাল শাপলা ঘিরে নির্মিত হয়েছে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনচিত্র। এতে দিন-দিন দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠছে সাতলার লাল ‘শাপলা বিল’।

উজিরপুরের সাতলা ইউনিয়নের উত্তর সাতলা, পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ও খাজুরিয়া গ্রামের এলাকা নিয়ে এ বিলের অবস্থান। বছরের অধিকাংশ সময় জলমগ্ন এ বিলের যত ভেতরে এগোবেন ততই লাল শাপলার আধিক্য। একপর্যায়ে মনে হবে শাপলার স্বর্গরাজ্যে বন্দি হয়ে গেছেন আপনি।

এ বিলের শাপলা তুলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে অসংখ্য পরিবার। বিল সংলগ্ন গ্রামের করিম হাওলাদারসহ একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, বছরের ছয় মাস তারা অনেকেই এই বিলের শাপলার ওপর নির্ভরশীল। বিল থেকে শাপলা তুলে ও মাছ শিকার করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে ওই এলাকার অনেক পরিবার। তারা আরো বলেন, ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে শীতের মৌসুমে যখন পানি কমে যায় তখন সব শাপলা মরে যায়। ওই সময় কৃষকরা এখানে ধান চাষ করে। তবে একই সঙ্গে ধান ও শাপলার এই সহাবস্থান আর কোথাও আছে কি না সন্দেহ।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত শাপলা তিন ধরনের। এর মধ্যে সাদা, বেগুনি (হুন্দি শাপলা) ও অন্যটি লাল রঙের। সাদা ফুলবিশিষ্ট শাপলা সবজি হিসেবে ও লাল রঙের শাপলা ঔষধি কাজে ব্যবহূত হয়। শাপলা খুব পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি। সাধারণ শাকসবজির চেয়ে এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। শাপলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। শাপলায় ক্যালসিয়ামের পরিমাণ আলুর চেয়ে সাতগুণ বেশি। যা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads