• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
নড়িয়ায় ভাঙন ঠেকাতে খনন শুরু

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকায় চলছে নদী খননের কাজ

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

নড়িয়ায় ভাঙন ঠেকাতে খনন শুরু

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভাঙনকবলিত এলাকায় নদী খনন করে পদ্মার গতিপথ পরিবর্তনের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় তিনটি ড্রেজার বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে একটি ড্রেজার গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নড়িয়ায় পৌঁছে নদী খনন শুরু করেছে। এদিকে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদরের তিনটি গ্রামে গত দুদিন ধরে পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। আর জামালপুরে যমুনার বাঁ তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ইসলামপুরের উলিয়া বাজার এলাকায় ধসে যাওয়া অংশে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বাংলাদেশের খবরের শরীয়তপুর, চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) ও ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধির পাঠানো খবর।

নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর ও কেদারপুর ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ড ও নড়িয়া পৌরসভার দুটি ওয়ার্ড পদ্মা নদীর অব্যাহত ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে গত তিন মাসে অন্তত ছয় হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। উপজেলা হাসপাতাল, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ-মাদরাসা, রাস্তা-ঘাটসহ বিশাল বিশাল দালান-কোঠা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার বাড়িঘর, শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাকি অংশ ও নড়িয়া বাজারসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে আপদকালীন সাত কোটি টাকার জিও ব্যাগ ফেলেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। পানি কমতে শুরু করলে নদী আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ভাঙনকবলিত পদ্মাপাড়ের মানুষ।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াসমীন গতকাল বলেন, পদ্মা নদীতে ড্রেজিংয়ের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো তিনটি ড্রেজারের মধ্যে মহেশখালী থেকে আসা একটি ড্রেজার কাজ শুরু করেছে। তীব্র স্রোতের কারণে অন্য দুটি ড্রেজার পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে। তবে দু-এক দিনের দিনের মধ্যেই চলে আসবে।

গত জানুয়ারি মাসে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পদ্মার ডান তীর রক্ষার জন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য একনেক বৈঠকে এক হাজার ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ প্রকল্পের মধ্যে নদী ড্রেজিং ও নদীর পাড়ে সিসি ব্লক বসানোর কথা রয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রীর পরিদর্শন : নড়িয়া উপজেলার নদী ভাঙন এলাকা গতকাল মঙ্গলবার পরিদর্শন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এ সময় তিনি বলেন, নড়িয়ার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভিজিএফ সহযোগিতা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণভান্ডারে ত্রাণের অভাব নেই। কেউ যাতে খাদ্যে কষ্ট না পায় তার জন্য সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

ফরিদপুর : ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদরের বালিয়া ডাঙ্গী গ্রাম, ফাজেলখার ডাঙ্গী ও সুপারি বাগান গ্রামে গত দুদিন ধরে পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচটি বসতভিটাসহ প্রায় ২০ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অনেকেই ফাজেলখার ডাঙ্গী গ্রামের বেড়িবাঁধ সড়কে আশ্রয় নিয়েছে। আবার কেউ অন্যত্র সরে গেছেন। পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে ভাঙনও অব্যাহত রয়েছে।

জামালপুর : যমুনার বাঁ তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলার দেওয়ানগঞ্জের ফুটানি বাজার থেকে ইসলামপুর হয়ে উলিয়াবাজার এবং সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা পর্যন্ত একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে। গত বছর প্রকল্পে বালুর বস্তা ডাম্পিং ও সিসি ব্লক সেটিংয়ের কাজ শেষ হয়। যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবল স্রোতে বাঁধের ইসলামপুর অংশের নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া বাজার এলাকায় রোববার ভোর থেকে সিসি ব্লকে ধস নামে।

এ পরিস্থিতিতে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম ভাঙন প্রতিরোধে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছেন। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ করেছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads