• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

সংগৃহীত ছবি

সারা দেশ

দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৬ অক্টোবর ২০১৮

বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার বাকি মাত্র ৯ দিন। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দেবীবরণের আনুষ্ঠানিকতা। সারা দেশে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। ১২ স্থানের ২৯২৬ মণ্ডপের প্রস্তুতির খবর থাকছে এ প্রতিবেদনে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

কুমিল্লা : ১৭ উপজেলায় পূজামণ্ডপের সংখ্যা ৭৫৫। গত বছরের চেয়ে মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে ৭টি। আদর্শ সদরে ২৩, সদর দক্ষিণে ৩১, লালমাইয়ে ১৬, চৌদ্দগ্রামে ২৪, নাঙ্গলকোটে ৮, লাকসামে ৩৪, মনোহরগঞ্জে ১৩, বরুড়ায় ৮৬, চান্দিনায় ৬৭, দাউদকান্দিতে ৫৫, মেঘনায় ৬, তিতাসে ১১, হোমনায় ৪৩, মুরাদনগরে ১৫৩, দেবীদ্বারে ৮৫, বুড়িচংয়ে ৩৯ ও ব্রাহ্মণপাড়ায় ১৪ মণ্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের কুমিল্লা অঞ্চলের ট্রাস্টি নির্মল পাল দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো অঘটন না ঘটে সেজন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর বলেন, ঐতিহ্যগতভাবেই দুর্গাপূজা এ দেশে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

ফরিদপুর : দেবীর আগমনবার্তায় ভক্তকুলে আনন্দের জোয়ার বইছে। প্রতিমা তৈরির পরপরই রূপায়ণের কাজ শুরু হবে। নানা রঙের কারুকার্যে ফুটিয়ে তোলা হবে দুর্গা দেবীর প্রতিচ্ছবি। মনের আনন্দে কাজের ছন্দে চলছে পূজা-পার্বণের জোর প্রস্ততি। এ উপলক্ষে জেলার মুজিব সড়কের পাশে, টেপাখোলা মোড়সহ বিভিন্ন মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। জেলায় ৭৬৫ মণ্ডপে পূজা হবে। প্রতিমাশিল্পী পরিতোষ বলেন, প্রতিমা গড়ার কাজ মাঝ পর্যায়ে, এখন নকশা ঠিক করা হচ্ছে।

রাজবাড়ী : জেলার জামালপুরের আলোকদিয়া গ্রামে ৩০০ দেবদেবীর প্রতিমা গড়ার মধ্য দিয়ে পূজার আয়োজন চলছে জোরেশোরে। প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতায় তৈরি করা হচ্ছে একাধিক মণ্ডপ। কয়েক বছর ধরে বালিয়াকান্দিতে এমন ভিন্নধর্মী আয়োজন চলছে। পূজার পাশাপাশি থাকে ধর্মীয় কাহিনী অবলম্বনে নানা চরিত্রের রূপ। এসবের প্রদর্শনী চলে লক্ষ্মীপূজা পর্যন্ত। আয়োজক গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার মানুষের সমাগম হয়। জেলার পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি জানান, ৪১৪টি মণ্ডপের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।

সাতক্ষীরা : জেলার সাতটি উপজেলায় ৫৬৬টি মণ্ডপে পূজা হবে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ১০৬, কলারোয়ায় ৪২, তালায় ১০৬, পাটকেলঘাটায় ৭৮, আশাশুনিতে ১০৭, শ্যামনগরে ৬৬, কালীগঞ্জে ৪২ ও দেবহাটায় ২১ মণ্ডপে আয়োজন চলছে। শহরের মায়েরবাড়ি পূজামণ্ডপে গিয়ে দেখা যায়, শিল্পীরা মাটির কাজ শেষে প্রতিমা রঙ করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শেখর বসু জানান, এবার মা আসছেন দোলায় ও যাবেন গজে। সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার জানান, প্রত্যেকটি মণ্ডপে পুলিশ ও আনসার থাকবে।

বরগুনা : জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুখরঞ্জন শীল জানান, জেলা সদরে ২৬, আমতলীতে ১৩, তালতলীতে ১০, বামনায় ১৭, বেতাগীতে ৩৭ ও পাথরঘাটায় ৪৯ মণ্ডপে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোখলেচুর রহমান জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে সহায়তা এলেই মণ্ডপগুলোতে বরাদ্দ দেওয়া হবে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হেসেন জানান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দৃঢ় থাকায় দুর্গাপূজা প্রকৃতই সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়।

                                                                                                                             

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : উপজেলায় ৪১ মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে। ভুলতা, হাউলিপাড়া, দেইলপাড়া, নয়ামাটিসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নাওয়া-খাওয়া ভুলে কারিগররা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শিল্পীদের নিপুণ আঁচড়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। খড় আর কাদামাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ, এখন শুকানো হচ্ছে রোদে। দিন দুয়েক পর রঙতুলির আঁচড় দেওয়া হবে।

হাকিমপুর (দিনাজপুর) : উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জনার্দন চন্দ্র রায় জানান, এবার উপজেলায় ২০ মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ‘মা’কে বরণে পুরোদমে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সনাতন ধর্মের লোকজন। চলছে প্যান্ডেলসহ মণ্ডপ সাজানোর কাজ।

হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। উপজেলায় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা জানান, প্রতি বছরের মতো এবারো বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। হালুয়াঘাট থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার জানান, পূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বিকভাবে সহায়তা করবে।

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) : উপজেলায় ৫৭ মণ্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। প্রতিমা সুন্দর করতে নির্ঘুম রাত কাটছে মৃৎশিল্পীদের। শিল্পীরা মনের মাধুরী মিশিয়ে প্রতিমায় শেষ আঁচড় দিচ্ছেন। আলোকসজ্জা করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ডেকোরেটররা। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি প্রবোধ রঞ্জন সরকার জানান, পূজা উদযাপনে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ওসি আহমেদ কবীর হোসেন জানান, মণ্ডপে পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে।

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : রামগতিতে ১১ ও কমলনগরে ৩টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। শিল্পীরা প্রতিমায় শেষ তুলির আঁচড় দিতে কাটাচ্ছেন ব্যস্ত সময়। রামগতি পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি মৃণাল নাথ জানান, প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। কমলনগরের ইউএনও ইমতিয়াজ হোসেন জানান, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালনের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : উপজেলায় ৪০ মণ্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। পৌরসভায় ৩, চিরাং ইউনিয়নে ৩, নওপাড়ায় ৩, মাস্কায় ১, সান্দিকোনায় ২, রোয়াইলবাড়িতে ৬, পাইকুড়ায় ৪, গণ্ডায় ১, গড়াডোবায় ৩, বলাইশিমুলে ৪, দল্পায় ৩ ও আশুজিয়া ইউনিয়নের ৭টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাখাল বিশ্বাস জানান, উৎসব সম্পন্ন করতে সব ধর্মের মানুষের সহযোগিতা কামনা করছি।

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) : উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজন সাহা বলেন, কলমাকান্দায় ২০, নাজিপুরে ৩, পোগলায় ৬, বড়খাপনে ৯, খারনৈ ৫, লেংগুরায় ৩, কৈলাটিতে ৫ ও রংছাতিতে ২টি মণ্ডপে মৃৎশিল্পীদের নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। ওসি মাজহারুল করিম বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত প্রশাসনিক নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রানীনগর (নওগাঁ) : উপজেলার পূজামণ্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমাশিল্পীরা। এ বছর উপজেলায় ৪৯টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হবে। প্রতিমাশিল্পী নিমাই পাল বলেন, মাটির কাজ শেষে হলেই শুরু হবে রঙতুলির আঁচড়। প্রতিমাগুলো মনোমুগ্ধকর ও নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি। ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব উদযাপন করতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

 

আলাদা নিউজ

 

ভাঙ্গুড়ায় আদিবাসীদের

দুর্গাপূজা অনিশ্চিত

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি

উপজেলার খান মরিচের সুলতানপুর গ্রামের দরিদ্র আদিবাসীরা অর্থাভাবে এ বছর দুর্গাপূজা করতে পারছে না।

আদিবাসী সমাজপ্রধান জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুরারী বলেন, আমাদের গ্রামে ১০টি বড় খাস জলাশয় রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৯টির লিজের টাকা গ্রামের মসজিদ ও গোরস্তানের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। অবশিষ্ট জলাশয়টি পোরঘাটি পুকুর নামে পরিচিত। এটা লিজ দিয়ে বছরে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় হয়। যার পুরোটাই আদিবাসীদের মন্দির ও পূজা-অর্চনার জন্য ব্যয় করার কথা। কিন্তু গ্রামের মুসলিমপ্রধানরা গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত তাদের একটি টাকাও দেননি। ফলে এবার পূজা উদযাপন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, এমপি মহোদয় ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। তা দিয়ে মন্দির সংস্কার করা হয়েছে। তাই এখন পর্যন্ত প্রতিমা কেনার টাকা সংগ্রহ হয়নি।

খান মরিচ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান বলেন, একটি পুকুর লিজের পুরো টাকাই আদিবাসীদের দেওয়ার কথা। উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অশোক কুমার ঘোষ অবিলম্বে ওই পুকুর লিজের টাকা আদিবাসীদের দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সুলতানপুর মসজিদ ও গোরস্তান কমিটির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম বলেন, পূজার জন্য আবেদন করলে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads